ডলার ঘুষে সংগঠন বিক্রি
সমাজসেবা সচিব-নিবন্ধকের দুর্নীতি-
আমেরিকা প্রবাসীর কাছে ”কুরআন
মজলিস বাংলাদেশ ” বিক্রি
বিশেষ প্রতিনিধি : পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগী সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এডিশনাল সেক্রেটারি খায়রুল আলম সেখ সমাজসেবা সচিবের পদে বদলি হয়েই বিপুল অংকের ইউএস ডলারে ”কুরআন মজলিস বাংলাদেশ” নামের একটি সংগঠন বিক্রি করে দিয়েছেন। এই অবৈধ কার্যক্রমটি সংগঠিত হয়েছে গত ১২/৯/২০২৪ সালে। ঢাকা জেলা সমাজসেবা কার্যালয় (৩৫৯ তেজগাঁও শিল্প এলাকা) প্রেরিত যার স্মারক নম্বর-৪১.০১.২৬০০.০০০.২৮.৮৬৮.৮৮.১১১১। সূত্রের বর্ণনায় সমাজসেবা কার্যালয় বলেছে, আমেরিকা প্রবাসি মোঃ সিরাজুল হকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ”কুরআন মজলিশ বাংলাদেশ” এর আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করা হলো।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোঃ রকনুল হক স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে বিপুল অংকের ইউএস ডলারে ”কুরআন মজলিস বাংলাদেশ” নামের সংগঠন বিক্রি করে দেয়া হয়। যার স্মারক নম্বর-৪১.০১.২৬০০.০০০.২৮.৮৬৮.৮৮.১১১১। এতে বলা হয়, ”কুরআন মজলিস বাংলাদেশ” এর নিবন্ধন নম্বর-ঢ-০৩৪৮১, তারিখ-১৭/১/১৯৯৬ইং।
সংস্থাটি গত ২৫ ডিসেম্বর ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ১৭/০১/১৯৯৬ ইং সালে নিবন্ধন লাভের পর হতে অদ্যাবধি অত্র কার্যালয় থেকে অনুমোদিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ, নিবন্ধন শতানুযায়ী কার্যনির্বাহী পরিষদের অনুমোদন, নিয়মিত বার্ষিক নিরীক্ষাপ্রতিবেদন ও কার্যক্রমের প্রতিবেদন অত্র কার্যায়ে দাখির করেন নাই।
এহেন পরিস্থিতিতে সংস্থাটির কার্যক্রম পরিচালনার বৈধতা ও নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণের জন্যে প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মোঃ সিরাজুল হক এর সভাপতিত্বে গত ০৬/০৯/২০২৪ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সভার মাধ্যমে গঠিত নিম্মোক্ত সাত সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন প্রদান করা হলো।
রহস্যের বিষয় হচ্ছে সংগঠনটি তার নয়া পল্টনের নিজস্ব কার্যালয়ে সার্বিক কার্যক্রম চলমান থাকার পরও জেলা সমাজসেবা কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগী সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এডিশনাল সেক্রেটারি খায়রুল আলম সেখ এর ইচ্ছায় আমেরিকা প্রবাসি মোঃ সিরাজুল হকের কাছে ”কুরআন মজলিশ বাংলাদেশ” বিক্রি করে দেয়।
সংগঠনটির আমীর মাওলানা মোঃ এমদাদ উল্লাহ এবং মহাসচিব মাওলানা মুহাঃ মহিউদ্দীন গাজী জানান, পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী আমেরিকা প্রবাসি মোঃ সিরাজুল হকের নানা অবৈধ কার্যক্রমের কারণে তাকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়। এই বহিস্কারের চিঠিও সমাজসেবা কার্যালয়ে প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও সব জেনে শুনে অর্থলোভী সমাজসেবা কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটিকে নিয়ে তামাশা করছে।
এসব সম্পর্কে জানাতে সমাজসেবা সচিব ও নিবন্ধন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া য়ায়। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীরা প্রধান উপদেষ্ঠার হস্তক্ষেপ কামনা করে সমাজসেবা সচিব ও নিবন্ধন কর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করেছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন এই সেই সমাজসেবা সচিব যিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকুরীকালীন আঙ্গুল ফলে কলাগাছে পরিণত হয়েছিলেন।
এ সম্পর্কে আল কুরআন প্রচার সংস্থা (আকপও) বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতি আল্লামা খলিলুর রহমান জিহাদী বলেন, সমাজসেবা অধিদফতর এহেন ঘৃণ্য অপকর্মের নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। সমাজসেবা কর্মকর্তা সংগঠনটির আমীরকে না জানিয়ে এই অপকান্ডে লিপ্ত হওয়া এবং বিপুল অংকের ইউএস ডলারে ”কুরআন মজলিস বাংলাদেশ” নামের সংগঠন বিক্রি করে দেয়া মারাত্মক অন্যায় বলে মনে করি।