টয়লেটে ভারতীয়’র সন্তান প্রসবে তোলপাড়
স্টাফ রিপোর্টার : ভারতীয় নারী রোকসানা আক্তারের কমলাপুর রেলওয়ে থানার টয়লেটে সন্তান প্রসব এবং তার স্বামীর পালিয়ে যাওয়া এবং ঢাকা মেডিকেল এলাকা থেকে ফের তাকে পাকরাও করা নিয়ে তোলপাড় চলছে।পুলিশ বলেছে, শনিবার (২৩ জুন) রোকসানার স্বামী আব্দুল হককে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে আটক করেছে কমলাপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ। প্রাথমিকভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসিন ফারুক মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেনৈ, আব্দুলের বাড়ি চাঁদপুরের মতলবে।গত ১৮ জুন রাত সাড়ে ১২টার দিকে কমলাপুর রেলওয়ে থানার টয়লেটে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন রোকসানা। এর আগে কমলাপুরে স্বামীকে হারিয়ে একা একা নারায়ণগঞ্জ স্টেশনে পৌঁছান তিনি। নারায়ণগঞ্জে প্রসব ব্যথা শুরু হলে যাত্রীদের সহায়তায় আবার কমলাপুরে ফিরে আসেন। সেখানেই জন্ম হয় তার ছেলে সন্তানের। এরপর প্রথমে মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ও পরে সেখান থেকে স্থানান্তর করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মা ও নবজাতককে। বর্তমানে রোকসানা ও তার শিশুসন্তান সেখানেই রয়েছে।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, ‘আব্দুল হক ২০১২ সালে ভারত গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে ফার্নিচারের কাজ করতেন। তার প্রথম বিয়ে ২০১১ সালে। ভারতে তার স্ত্রীও সঙ্গে যান। কোনও ছেলে সন্তান না হওয়ায় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিয়েই রোকসানাকে বিয়ে করেন।গত ২ জুন তারা বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। আজিমপুরে আব্দুল হকের বোনের বাসা। সেখানেই তারা ছিলেন।
গত ১৮ জুন নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার জন্য ট্রেনে ওঠেন রোকসানা ও আব্দুল হক। পানি আনার জন্য আব্দুল হক নিচে নামলে ট্রেন ছেড়ে চলে যায়।’রোকসানার পরিচিত কেউ না থাকায় যাত্রীদের সহায়তায় আবার ঢাকায় ফিরে আসেন বলে জানান ইয়াসিন ফারুক মজুমদার। তিনি বলেন, ‘আমরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আব্দুল হককে আটক করেছি। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। স্টেশনে রেখে পালিয়ে যাওয়া নাকি সত্যিই ট্রেন ছেড়ে চলে গিয়েছিল— এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
এদিকে রোকসানা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। তার নবজাতক ছেলে আছে আইসিইউতে। হাসপাতালে রোখসানা জানিয়েছেন, তিনি ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন, এখানে থাকার জন্য। এখানেই আব্দুলের সঙ্গে থাকবেন। আব্দুলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে দেড় বছর আগে।
তবে রোকসানা অবৈধভাবে পাসপোর্ট ছাড়া বাংলাদেশে এসেছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসিন ফারুক মজুমদার। তিনি বলেন, ‘আমরা যতদূর জেনেছি রোকসানার কোনও পাসপোর্ট নেই। তাদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন।’