ট্রাম্পের কালোথাবায় নিষেধাজ্ঞার কবলে গ্রিন কার্ডধারীরাও
ইউ এইচ খান কায়রো থেকে : ট্রাম্পের কালোথাবায় নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন এবার গ্রিন কার্ডধারীরাও। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বলেছে,সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের আওতায় পড়বেন দেশটিতে ‘গ্রিন কার্ড’ পাওয়া ব্যক্তিরাও। শনিবার মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মুখপাত্র গিলিয়ান ক্রিস্টেনসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রয়টার্সকে।
গ্রিন কার্ডের মাধ্যমে অন্য দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়। এদিকে এরইমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে ‘অ্যাকশন’ নেওয়া শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। চলতি সপ্তাহে ইরাক ও ইয়েমেনের কয়েকজন নাগরিককে কায়রো থেকে নিউ ইয়র্কের ফ্লাইটে উঠতে দেওয়া হয়নি। ইজিপ্টএয়ার-এর একটি ফ্লাইটে কায়রো থেকে নিউ ইয়র্ক বিমানবন্দরে আসছিলেন এসব যাত্রী। তাদেরকে কায়রো বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয়।
কায়রো বিমানবন্দর সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, আটকে দেওয়া যাত্রীদের মধ্যে পাঁচজন ইরাকি এবং একজন ইয়েমেনি ছিলেন। তারা ট্রান্সজিট ভিসার আওতায় কায়রো বিমানবন্দরে আসেন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য বৈধ ভিসা ছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান কায়রো বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বৈধ ভিসা থাকা স্বত্ত্বেও সাত শরণার্থীকে নিউ ইয়র্কগামী ফ্লাইটে বোর্ডিং-এর অনুমতি দেওয়া হয়নি। তিনি জানান, কায়রো বিমানবন্দরে এসব শরণার্থী আসার পর নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর তাদের জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশে তিন মাসের জন্য ৭ মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে স্থগিতাদেশ দেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি শরণার্থী কর্মসূচি চার মাসের জন্য স্থগিত করেন তিনি। তবে সব শরণার্থীর বেলায়, কর্মসূচি স্থগিতের মেয়াদ নির্দিষ্ট ৪ মাস হলেও সিরিয়ার ক্ষেত্রে এই মেয়াদ অনির্দিষ্টকালের। প্রশাসনের শরণার্থী সীমিতকরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন নবনির্বাচিত এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। এই আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের ক্ষেত্রে মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মুসলিমদের বদলে খ্রিস্টান ও সংখ্যালঘুদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হয়। এভাবেই, যেন শরণার্থীদের বিভাজন-সূত্র প্রকাশ করলেন ‘বিভক্তির প্রেসিডেন্ট’!
ট্রাম্পের এ নির্বাহী আদেশ জারির পর পরই এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুমুল সমালোচনা চলছে। দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স সিএআইআর-এর লেনা এফ মাসরি ক্ষোভ জানিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রবেশকারী শরণার্থীদের সবাই যে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে, তেমন কোনও প্রমাণ নেই। ধর্মবিদ্বেষ থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বাস্তবসম্মতভাবে নয়।’