• বুধবার , ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ট্রাম্পকে গুলি-অল্পে প্রাণরক্ষা-এফবিআই অন্ধকারে-


প্রকাশিত: ১১:০৪ পিএম, ১৪ জুলাই ২৪ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৯০ বার

 

 

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের নিরাপত্তায় রয়েছে আলাদা বিশেষ বাহিনী। সিক্রেট সার্ভিস নামে গঠিত বিশেষ বাহিনীর মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়। এমনকি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে আজীবন তাদের এই বাহিনী নিরাপত্তা দেয়। বিশেষায়িত এই বাহিনীর নিরাপত্তা সত্ত্বেও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে বিভিন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।সবশেষ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী সভায় হামলা হয়েছে। এতে রক্তাক্ত হয়েছেন তিনি। এরপর প্রশ্ন উঠছে, তবে কি নিরাপত্তা ঘাটতির কারণেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তিনি? কি নিরাপত্তা ঘাটতি ছিল ট্রাম্পের সমাবেশে? গুলিবর্ষণ করার আগে হামলাকারী বা তার অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানত না যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। রোববার (১৪ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সংবাদ সম্মেলনের সময় এফবিআই নিশ্চিত করেছে, গুলি না চালানো পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমাবেশের কাছাকাছি একটি ভবনের ছাদে অবস্থানরত হামলাকারী ব্যক্তি থাকার কথা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা জানতেন না। বিশ্লেষকরা বলছেন, সিক্রেট সার্ভিসের কাছে তথ্য না থাকার বিষয়টি অবশ্যই বড় দুর্বলতা।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেছেন, গুলি চালানোর কয়েক মিনিট আগে তিনি পাশের একটি ভবনের ছাদে একজন ব্যক্তিকে দেখেছিলেন। তিনি ‘তিন থেকে চার মিনিট’ ধরে পুলিশকে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ছাদের ঢালের কারণে তারা সম্ভবত বন্দুকধারীকে দেখতে পাননি। এখানে পুলিশ কতটুকু গুরুত্ব দিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

বিবিসি বলছে, পেনসিলভেনিয়ায় প্রচার সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হওয়া আক্রমণটি আপাত নিরাপত্তার ত্রুটি সামনে এনেছে এবং কেউ কেউ আক্রমণকারীর সেখানে পৌঁছে যাওয়া এবং হামলার জন্য সিক্রেট সার্ভিসের দিকে আঙুল তুলেছেন।যদিও হামলার পরপরই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই সিক্রেট সার্ভিস এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু অনেকেই এ ঘটনায় প্রশ্ন তুলছেন এবং কেউ কেউ আবার এটিকে সিক্রেট সার্ভিসের ‘সম্পূর্ণ ব্যর্থতা’ বলে অভিহিত করছেন।

এদিকে, এ ঘটনার পর ‘রাজনৈতিক সমাবেশের ধরন ভিন্ন হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন অ্যারিজোনার রিপাবলিকান দলীয় কংগ্রেসম্যান অ্যান্ডি বিগস। বিবিসিকে তিনি বলেন, তার বিশ্বাস এখন থেকে রাজনৈতিক সমাবেশগুলো আর আগের মতো হবে না, বরং ভিন্ন ধরনের হবে।অ্যান্ডি বিগস বলেন, এখন থেকে যে কোনো সমাবেশ ইনডোর ভেন্যুতে হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্প পেনসিলভানিয়ার যেখানে সমাবেশ করছিলেন সেটি ছিল উন্মুক্ত স্থানে এবং সমাবেশস্থলের পাশে ছিল কিছু ভবন। সুতরাং এমন স্থানে সমাবেশ হলে সেখানে কিছু নিরাপত্তার ঘাটতি থেকেই যায়।

সিক্রেট সার্ভিসের অবসরপ্রাপ্ত সুপারভাইজার ববি ম্যাকডোনাল্ড রয়টার্সকে বলেছেন, তিনি (ট্রাম্প) খুব শক্তিশালী নিরাপত্তা পান, যা সর্বদা তার সঙ্গে থাকে। কিন্তু তিনি উপলব্ধ বিভিন্ন সম্পদ-সরঞ্জামের সবগুলো পান না। তাই, আমি মনে করি এ ঘটনার কিছু দিক রয়েছে যা তদন্ত করা হবে।ববি ম্যাকডোনাল্ড আরও বলেন, সিক্রেট সার্ভিস এখন দেখবে আসলে কী ঘটেছে এবং কীভাবে তারা নিজেদের আরও উন্নত করতে পারে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের প্রতিরক্ষামূলক পদ্ধতিগুলোও উন্নত করতে পারে।

যেভাবে গুলি করা হয় ট্রাম্পকে-

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী সমাবেশে হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মাত্র ২০০ ফুট দূর থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে হামলাকারী। হামলায় সাবেক এই প্রেসিডেন্ট অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও তার ডান কানে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং গুলি কান ছিঁড়ে বেরিয়ে গেছে।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, সন্দেহভাজন হামলাকারী একটি এআর-স্টাইলের রাইফেল দিয়ে এই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা।‘এআর স্টাইল’ রাইফেল একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অস্ত্র, যা দিয়ে কয়েক সেকেন্ডে ডজন ডজন গুলি ছোড়া সম্ভব। হামলার পর সিক্রেট সার্ভিস স্নাইপাররা ঘটনাস্থলে একটি এই এআর-স্টাইলের রাইফেল খুঁজে পান। তবে একজন বন্দুকধারী এ হামলা চালিয়েছে না কি তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল তা নিশ্চিত হতে পারেনি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।

বিবিসি বলছে, মাত্র ২০০ ফুট দূর থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে এ গুলিবর্ষণ করে হামলাকারী। ট্রাম্পের সমাবেশ মঞ্চের পাশে একটি বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ট্রাম্পকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এ হামলা চালানো হয়েছে।হামলার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাতে দেখা গেছে ট্রাম্পের কান ও মুখমণ্ডল বেয়ে রক্ত পড়ছে। এরপর দ্রুত তাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে পাশে থাকা একটি গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেছেন, মঞ্চের কাছাকাছি একটি ভবনের কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে এবং তিনি গুলির পর আততায়ীকে ওই ছাদ ত্যাগ করতে দেখেছেন।
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেছেন, গুলি চালানোর কয়েক মিনিট আগে তিনি পাশের একটি ভবনের ছাদে একজন ব্যক্তিকে দেখেছিলেন। তিনি ‘তিন থেকে চার মিনিট’ ধরে পুলিশকে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ছাদের ঢালের কারণে তারা সম্ভবত বন্দুকধারীকে দেখতে পাননি।হামলার পরপরই গোয়েন্দা ও নিরপত্তাকর্মীরা ট্রাম্পকে ঘিরে ধরে এবং হামলাকারীকে লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি ছোড়ে। ঘটনাস্থলেই নিহত হয় হামলাকারী। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক তৎপরতার জন্য তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন ট্রাম্প।