টাম্পাকো’তে সেনাবাহিনী’র অভিযান-বিস্ফোরণ ও নিহতের ঘটনায় মামলা
বিশেষ প্রতিনিধি : টঙ্গীর ট্যাম্পাকো কারখানায় অগ্নিকান্ডে রহস্যজনক বিস্ফোরণ ও ৩১ জন নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতদের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওদিকে সেনাবাহিনীর একটি দল সকাল থেকে অভিযান শুরু করেছে।
অভিযানে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দল বলেছে, টাম্পাকোর জঞ্জাল’ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ- এজন্য উদ্ধারকারী সেনা সদস্যরা সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছেন। ঈদের পর তারা পুরোদমে কাজ করবেন।মামলায় কারখানাটির মালিক সাবেক সংসদ সদস্য মগবুল হোসেনসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। সোমবার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন নিহত জুয়েলের বাবা কাদের পাটোয়ারি।
এদিকে কারখানাটি থেকে সোমবার সকালে আরো দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়াল। শনিবার এই কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডে ২৪ জন নিহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় একজন মারা যান। আর রবিবার উদ্ধার করা হয় আরো চার লাশ।
মামলায় কারখানা মালিক মকবুলের স্ত্রী পারভিনকেও আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক সফিকুর রহমান, ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মনির হোসেন, ব্যবস্থাপক (সার্বিক) সমির আহমেদ, ব্যবস্থাপক হানিফ ও উপ সহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেন। মামলায় আসামির তালিকায় অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
টাম্পাকোর জঞ্জাল’ও ঝুঁকিপূর্ণ-সেনাবাহিনী
এদিকে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিস্ফোরণের পর আগুন লাগা টাম্পাকো কারখানার জঞ্জাল সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দলকে নিয়োগ করা হয়েছে।সেনাবাহিনী কমান্ডার সোমবার জাতিরকন্ঠকে জানিয়েছেন, টাম্পাকোর জঞ্জাল সরাতে দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে ।
সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দলের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম মাহমুদ হাসান আজ সোমবার বলেন, রানা প্লাজার চেয়ে বেশি জঞ্জাল হয়েছে টাম্পাকো কারখানায়। এগুলো সরাতে দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে।
উদ্ধারকারী দলের কমান্ডার আরো বলেন, কারখানার বিভিন্ন জায়গায় ইথাইলের ড্রাম রয়েছে। কেমিক্যাল (রাসায়নিক) উপাদানের ড্রামগুলো যেসব জায়গায় আছে, সেসব ক্ষেত্রে আমাদের কাজ করার তেমন অভিজ্ঞতা নেই। তারপরও আমরা যতটুকু সম্ভব সতর্কতা নিয়ে কাজ করছি। আমরা কেমিক্যাল ড্রামগুলোকে টাচ করব না। এটাকে বাদ দিয়ে যতটুকু সম্ভব গার্বেজগুলোকে (জঞ্জাল) আমরা অপসারণ করব।
ইথাইল ড্রামগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা অত্যন্ত নিরাপত্তা ও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছি। বিকেলের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা ভবনের পূর্ব পাশের রাস্তার ওপরের ধ্বংসাবশেষ অপসারণ সম্ভব হলেও পুরো কাজ শেষ করতে এক মাসের ওপরে কিংবা দুই মাসও লাগতে পারে। ঈদের পর থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করবো।
এর আগে সকালে ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম মাহমুদ হাসানের নেতৃত্বে একটি দল টাম্পাকো ফয়েলস প্যাকেজিং কারখানায় উদ্ধারকাজ শুরু করে। উদ্ধারকাজে তাদের সহায়তা করছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা।