দ্বিতীয় বলেই চার মেরে শুরু। খানিক পরই মিচেল মার্শের এক ওভারে মারলেন দুটি চার ও দুটি ছক্কা। ৩৯ রানে অবশ্য জেমস প্যাটিনসনের বলে গালিতে মিচেল মার্শের অসাধারণ ক্যাচের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু টিভি রিপ্লে দেখে নো বল দেন আম্পায়ার।
৩৪ বলে অর্ধশতকে পৌঁছান ম্যাককালাম। এর পর আরও বিধ্বংসী তার ব্যাট। পরের পঞ্চাশে বল লাগল মাত্র ২০টি!৮২ রান থেকে জস হেইজেলউডকে একটি ছক্কা ও টানা তিন চারে ম্যাককালাম তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ৫৪ বলে। পেছনে ফেলে দেন ভিভ রিচার্ডস ও মিসবাহ-উল-হকের রেকর্ড। ১৯৮৬ সালে অ্যান্টিগায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৬ বলে শতক করেছিলেন রিচার্ডস। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আবু ধাবিতে সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছিলেন মিসবাহ।
সময়ের হিসেবে ম্যাককালামের সেঞ্চুরি ইতিহাসের তৃতীয় দ্রুততম। ৭৮ মিনিটে শতক করেছেন কিউই অধিনায়ক। ১৯২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার জ্যাক গ্রেগরি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জোহানেসবার্গে করেছিলেন ৭০ মিনিটে। ইংল্যান্ডের গিলবার্ট জেসপ ১৯০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওভালে সেঞ্চুরি করতে সময় নিয়েছিলেন ৭৭ মিনিট।
ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে শতক করা নিউ জিল্যান্ডের মাত্র দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান ম্যাককালাম। একদিক থেকে প্রথমও বলা যায়। আগে যিনি করেছিলেন, সেই রডনি রেডমন্ড সেঞ্চুরি করেছিলেন ক্যারিয়ারের একমাত্র টেস্টে। মানে অভিষেক টেস্টই হয়ে ছিল তার শেষ টেস্ট!
ম্যাককালাম তাণ্ডব চালিয়ে গেছেন শতকের পরও। শেষ পর্যন্ত প্যাটিনসনের বলে নাথান লায়নের দারুণ ক্যাচ থামিয়েছে এই ঝড়। ততক্ষণে কিউই অধিনায়কের নামের পাশে ৭৯ বলে ১৪৫ রান! ২১টি চারের পাশাপাশি তাতে ৬টি ছক্কা। আগের টেস্টেই ক্যারিয়ারে ছক্কার সেঞ্চুরি স্পর্শ করেছিলেন। এবার অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে (১০০) ছাড়িয়ে ছক্কার রেকর্ডটি নিজের করে নিয়েছেন এককভাবে (১০৬)।
এই হ্যাগলি ওভালের সবশেষ টেস্টেই অল্পের জন্য টেস্টে দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়তে পারেননি ম্যাককালাম। ২০১৪ সালের বক্সিং ডে টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯৫ রানে আউট হয়েছিলেন ১৩৪ বলে। এবার আরেকটি খুনে ইনিংসে ঠিকই নাম লেখালেন রেকর্ড বইয়ে।
সকালে ব্যাট হাতে নামার সময় পুরো গ্যালারি দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানিয়েছিল ম্যাককালাম। মাঠে গার্ড অব অনার দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া দল। ২ ঘণ্টার তাণ্ডবলীলা চালিয়ে যখন ড্রেসিং রুমে ফিরলেন কিউই দলনেতা, তখনও দাঁড়িয়ে পুরো গ্যালারি। করতালিতে প্রকম্পিত চারপাশ, তার নাম খোদাই হয়ে গেছে ইতিহাসে।