• রোববার , ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

জয়পুরহাটে লক্ষ কোটি টাকার কিডনী বানিজ্য প্রকাশ্য চলছে


প্রকাশিত: ১১:৫৫ এএম, ৩ সেপ্টেম্বর ১৫ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭১ বার

kalai-1-kideny-www.jatirkhantha.com.bdএস রহমান:    দালাল চক্রের প্রলোভনে পড়ে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করছেন জয়পুরহাটের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। কেউবা দালালদের খপ্পরে পড়ে আবার কেউ সংসারে অস্বচ্ছলতার কারণে স্বেচ্ছায় বিক্রি করছেন শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনিও। জানা গেছে, এ পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের দেড়শতাধিক মানুষ এভাবেই নিজেদের কিডনি বিক্রি করেছেন।

এদিকে কিডনি বিক্রি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।জয়পুরহাটের কিডনী বানিজ্যে সম্পর্কে জেলা পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জাতিরকন্ঠকে জানান, কিডনি বিক্রি রোধে জনসচেতনতার পাশাপাশি যারা এ চক্রের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এর নেতিবাচক দিক সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারলে এটা বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

ঠিক এমনই এক হতভাগা জয়পুরহাটের কাkalai lever trade-www.jatirkhantha.com.bdলাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী তাহেরুন বেগম। সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে ১০মাস আগে পাড়ি জমান ঢাকায়। পরিচিত এক দালালের মাধ্যমে গৃহকর্মীর  কাজ নেন এক সরকারি কর্মকর্তার বাসায়। কিছুদিন পর কর্মকর্তার ছেলের কিডনির প্রয়োজন হলে টার্গেট হোন তিনি। এরপর স্বামীর হস্তক্ষেপে বাড়িতে ফিরে আসলেও এক পর্যায়ে এক রকম জিম্মি করে ভারতের বেঙ্গালুরে নেয়া হয় তাকে। পরে তার একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় কর্মকর্তার ছেলে নাফিসের শরীরে।

কঠিন কষ্ট নেয়া বেঁচে থাকা তাহেরুন নিজে সাংবাদিকদের কোন কিছু না জানালেও তার বেদনাদয়ক এ ঘটনা সম্পর্কে জানালেন তার প্রতিবেশীরা। তারা জানায়, গৃহকর্তা তাহেরুনকে কিডনি দেয়ার কথা বললে সে রাজি নালে হলে তার ওপর গৃহকর্তার স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়। ভয় দেখানো হয় মামলারও। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে রাজি হয় সে।

তাহেরুনের মতো আরও এক হতভাগা নারী একই ইউনিয়নের তেলিহার গ্রামের মুক্তি বেগম । জীবিকার তাগিদে ঢাকার এক গার্মেন্টস এ কাজ নেয় সে। তার অস্বচ্ছলতার সুযোগে কিডনি বিক্রির প্রস্তাব দেয় করাখানার সুপারভাইজার। এতে রাজি হয় সে। তাকে নেয়া হয় কোলকাতার ফোর্টিস হাসপাতালে ।  সেখানে তার একটি কিডনি নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয় মোখলেছ নামে এক ব্যক্তির শরীরে।

মুক্তি বেগম জানান, আমার অভাবের কারণে কিডনি বিক্রি করতে রাজি হয়েছি। তারা আমাকে চার লাখ টাকা দিয়েছে। এটা দিয়ে সুন্দরভাবে আমার সংসার চালাচ্ছি। শুধু তাহেরুন আর মুক্তি বেগমই নয়, অস্বচ্ছলতার কারণে এভাবে দালালদের খপ্পরে পড়ে কিডনি বিক্রি করেছেন একই ইউনিয়নের অনেকে।
এবিষয়ে কালাই উপজেলার আহমেদাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মওলা বলেন, ইতোমধ্যে অনেক দালাল ধরা পড়েছে। পাশাপাশি যারা কিডনি দিচ্ছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলে মনে করেন এ জনপ্রতিনিধি।