জেল কর্তৃপক্ষ রুমাল মাটিতে ফেলতেই জল্লাদ রশি টান দেন..
প্রিয়া রহমান : মীর কাশেমের ফাঁসির মূহুর্ত শনিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিট-। ধর্মীয় রীতি অনুসারে কাসেমকে তওবা পড়ান কাশিমপুর কারা জামে মসজিদের ইমাম মুফতি হেলাল উদ্দিন। এর আগেই তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করেন কারা চিকিৎসক ডা. মিজান ও ডা. কায়সার। তওবা পড়ার মিনিট চারেক পর কনডেম সেলে জল্লাদরা আসেন।
শনিবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে তারা মীর কাসেমকে নিয়ে যান ফাঁসির মঞ্চে। আগে থেকেই মঞ্চের পাশে রাখা ছিল মরদেহ বহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স। ফাঁসির মঞ্চে নেওয়ার পর তার মাথায় পরানো হয় ‘যমটুপি’। দুই হাত পেছন দিকে বাধা হয়। দুই পাও বাধা হয়। পরানো হয় ফাঁসির দড়ি।
কারা কর্তৃপক্ষের হাতে ছিল একটি রুমাল। রুমালটি হাত থেকে নিচে ফেলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জল্লাদ ফাঁসির মঞ্চের লিভারে টান দেন। লিভারটি টান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফাঁসির মঞ্চের নিচে চলে যান মীর কাসেম আলী। এ সময় মাটি থেকে ৪-৫ ফুট শূন্যে তাকে ২০ মিনিট ঝুলিয়ে রাখা হয়। এতে মুহূর্তের মধ্যেই তার ঘাড়ের হাড় ভেঙে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে যায়।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর মরদেহ তোলা হয়। এরপর কারা চিকিৎসক ডা. বিপ্লব কুমার ও ডা. আহসান হাবিব, গাজীপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা. আলী হায়দার খানের তত্ত্বাবধানে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করেন। এ সময় তার ঘাড়ের রগ কাটা হয়।
মীর কাসেম আলীর ফাঁসির লিভারে টান দিয়ে ঐতিহাসিক এ দায়িত্ব পালন করেন প্রধান জল্লাদ শাহজাহান। অন্য তিনজন দীন ইসলাম, রিপন ও শাহীন জল্লাদ ছিলেন তার সহযোগী।
ফাঁসি কার্যকর করার সময় ফাঁসির মঞ্চ ও কারাগারের ভেতরে ছিলেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজি প্রিজন) কর্নেল ইকবাল হাসান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, পুলিশ সুপার হারুনুর রশিদ, সিভিল সার্জন ডা. আলী হায়দার খান, কাশিমপুর কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক, জেলার নাশির আহমেদ। মঞ্চের চারপাশে ছিলেন ২০ জন কারারক্ষী।