স্টাফ রিপোর্টার.ঢাকা: ‘বিএনপির আত্ম-অনুসন্ধান প্রয়োজন’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। জিয়াউর রহমানের কাজ, নীতি ও জীবনাদর্শ থেকে বিএনপির বিস্মৃত হওয়ার উল্লেখ তিনি বলেন, বছরে দুই দিনের জন্য তাঁকে স্মরণ করা মহা ভুল, অন্যায় ও আত্মহত্যার শামিল।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জিয়াউর রহমানের ৩৪ তম শাহাদাত বার্ষিকীর আলোচনায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি বি. চৌধুরী ওই মন্তব্য করে এসব কথা বলেন।
‘জিয়াউর রহমানকে ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ’ উল্লেখ করে বি. চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা জিয়াকে স্মরণ করেন, আর না-ই করেন, তাতে তাঁর ক্ষতি হবে না। এতে ক্ষতি হয়ে গেল আপনাদের, বাংলাদেশের, আমাদের সবার।’ তিনি বলেন, যাঁরা জিয়াউর রহমানের দল ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার দাবি করেন, কোথায় তাঁর সেই জাতীয়তাবাদের প্রচার, কোথায় গ্রামে গ্রামে হ্যামিলনের সেই বংশীবাদক, কোথায় সেই দুর্নীতিমুক্ত-সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ।
বিএনপি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রায় ৫৫ মিনিট বক্তব্য দেন জিয়াউর রহমানের সহকর্মী বি. চৌধুরী। তিনি রাজনীতিতে জিয়ার দূরদর্শিতা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, সহকর্মীদের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস এবং তাঁর সততা, দেশপ্রেম, জনসম্পৃক্ত কর্মকাণ্ডের স্মৃতিচারণা করেন। এ সময় দর্শকসারিতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন। তিনি বক্তব্য দেননি।
বি. চৌধুরী বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের কাছে জিয়াকে পরিচিত করার দায়িত্ব কার ছিল? আজকের শিশু-যুবকেরা কেন জিয়াকে চেনে না? এ অপরাধ কার? জিয়ার কারণে তো আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।’ তিনি বলেন, জিয়া ভালো লোকের অনুসন্ধানে দেশ চষে বেড়িয়েছেন। বেস্ট কেবিনেট গঠন করেছিলেন। তাঁর সময় একটি লোকের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল না। বিএনপির সাবেক এই নেতা বলেন, ‘আমরা যদি জিয়াউর রহমানের কথা না শুনি, তার নীতি-আদর্শ অনুসরণ না করি, তাহলে তাঁর প্রতি কিসের সম্মান? ’
অভিশংসনের মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়া সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ভুলভ্রান্তি মানুষের হতে পারে। আমি ভুল করলে দুঃখপ্রকাশ করব। কিন্তু আপনারা ভুল করে থাকলে ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না।’ তিনি বলেন, দেশ ভর্তি দুর্নীতি-সন্ত্রাস-এটা নিয়ে রাজনীতি করবেন? দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চান? আগে নিজে পরিবর্তন হন। এর জন্য নিজেদের একেকটা জিয়াউর রহমান হতে হবে। যদি হতে পারেন, তবেই মুক্তি। নইলে কোনো মুক্তি নাই।
‘খালেদা জিয়াকে এত তেল দিয়েন না’—এমন উক্তি করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়াকে সামনে পেলেই অনেকে অনেক রকমের বক্তব্য দিয়ে মুগ্ধ করতে চান। এ সব প্রবণতা বাদ দিয়ে যথাসময়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিগত আন্দোলনে ছাত্রদলের ভূমিকার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, রোজার ঈদের পর সব জেলায় ছাত্রদলের নির্বাচিত কমিটি হতে হবে। খালেদা জিয়ার হাসির কমিটি নয়, নির্বাচিত কমিটি হতে হবে। তা না হলে পরিবর্তন হবে না, ভালো কিছু হবে না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ, আ স ম হান্নান শাহ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, সাবেক উপাচার্য মোস্তাহিদুর রহমান, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ প্রমুখ।