• শুক্রবার , ১৫ নভেম্বর ২০২৪

জাতিরকন্ঠের পূর্বাভাস-মি. ক্লিনম্যান হলেন শেখ হাসিনার সিপাহসালার


প্রকাশিত: ২:৩৯ এএম, ২৪ অক্টোবর ১৬ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৬৮ বার

এস রহমান : অবশেষে জাতিরকন্ঠের রিপোর্টই সত্য প্রমাাণিত হলো। সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হলেন মি. ক্লিনম্যান hasina-obaydul-www-jatirkhantha-com-bdobaydul-mr-clinman-www-jatirkhantha-com-bdওবায়দুল কাদের।কেন ওবায়দুল কাদেরকে সাধারন সম্পাদক করা উচিত এবং কেন তিনি এ পদের যোগ্য ব্যক্তিত্ব সেটাই তুলে ধরা হয়েছিল ওই রিপোর্টে। দেশনেত্রী শেখ হাসিনা যে সঠিক যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন মি.ক্লিনম্যান তাঁর স্বাক্ষর ইতিমধ্যেই রেখেছিলেন; যার প্রতিফল তিনি পেলেন আজ।
এর আগে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথমবারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন বিদায়ী কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের। রবিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিশনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দু’দিনব্যাপী ২০তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে তারা সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হন। এদিকে, বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নতুন কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত করা হয়েছে।

সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের পর সভাপতিমণ্ডলীর ১৪ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। তাদের মধ্যে সাতজন হলেন পুরনো কমিটির, বাকিরা নতুন যুক্ত হয়েছেন। পুরনো কমিটি থেকে নির্বাচিতরা হলেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফরউল্ল্যাহ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও অ্যাভভোকেট সাহারা খাতুন। নতুন নির্বাচিত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য 1হলেন, বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক আব্দুল মান্নান খান, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফারুক খান, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাহিদ, রমেশ চন্দ্র সেন ও পিযুষ ভট্টাচার্য্য । পুরনো কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন ও সতিশ চন্দ্র রায় বাদ পড়েছেন।

পুরনো কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি ও জাহাঙ্গীর কবীর নানক একই পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন যুক্ত হয়েছেন বিদায়ী কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য 3আব্দুর রহমান। কোষাধ্যক্ষ পদে এইচএন আশিকুর রহমান আবারও নির্বাচিত হন। শিগগিরই ৮১ সদস্য আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।

এর আগে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সকালে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। মধ্যাহ্ন বিরতির পর বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে নির্বাচন কমিশনের হাতে দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হয়। এর আগে দলের ঘোষণাপত্র অনুমোদন ও গঠনতন্ত্রের প্রয়োজনীয় সংশোধনী পাস করে বিদায়ী কমিটি।

এর আগে দুই পর্বের রুদ্ধদ্বার কাউন্সিলে বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার ৩৫জন নেতা বক্তব্য দেন। সম্মেলনের প্রথমদিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্য দিয়েছিলেন বিভিন্ন বিভাগের পক্ষে আরও ৬ জন জেলা নেতা। সব মিলিয়ে ৭৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৪১টি জেলার নেতা বক্তব্য দিয়েছেন। রবিবার দুপুর বিরতির পর অধিবেশনে বক্তব্য দেন ৮ জেলার নেতা।

নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় বিদায়ী কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদ চৌধুরী সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করলে তাতে সমর্থন জানান সভাপতিমণ্ডলীর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। অন্যদিকে বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করলে তাতে সমর্থন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। দুটি পদে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান অ্যাভভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন পৃথকভাবে এই দুজনকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর ওবায়দুল কাদের দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে পা ছুঁয়ে সালাম করে। এসময় তিনি বিদায় সাধারণ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে কোলাকুলি করেন।

বিদেশে থাকাকালে ১৯৮১ সালের সম্মেলনে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৭, ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০২, ২০০৯ ও ২০১২ সালে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

দলটির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ও স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু টানা ৪ বার দলটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ৪ টার সাধারণ সম্পাদক এবং প্রতিষ্ঠার সময়ে বঙ্গবন্ধু দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদটি পান। এছাড়া অন্যান্য সভাপতির মধ্যে আবদুল হামিদ খান ভাসানী ৪ বার, এইএচএম কামারুজ্জামান ২বার এবং আব্দুর রশীদ তকর্বাগীশ ও আব্দুল মালেক এক বার করে সভাপতি নির্বাচিত হন।

এদিকে সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ছাড়া জিল্লুর রহমান ৫ বার, তাজউদ্দিন আহমেদ, আবদুর রাজ্জাক ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ২ বার এবং শামসুল হক, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও আবদুল জলিল এক টার্মেরর জন্য সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগের বিদায়ী কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের এবার প্রথমবারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তিনি ২০০২ সালের সম্মেলনে দলের ১নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৯ ও ২০১২ সালে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। নোয়াখালী অঞ্চল থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য বর্তমানে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন।

এর আগে আওয়ামী লীগের পুরনো কমিটি বিলুপ্ত করে বিকাল পৌনে ৫টায় আলীগের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে মঞ্চ থেকে নেমে কাউন্সিলর সারিতে বসেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
এরপর নেতা নির্বাচন করতে মঞ্চে ওঠে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন। এই তিনজন হলেন, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হুমায়ুন, ড. মশিউর রহমান ও রাশেদুল আলম।
বিদায়ী ভাষণে কাউন্সিলরদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা বলেছেন, আজীবন আমাকে নেতৃত্ব দিতে। এটা সম্ভব নয়। আমি তো মনে করি, আপনারা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি তা পূরণ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘দলকে দ্বিতীয় দফা ক্ষমতায় এনেছি। তিনবার সরকার গঠন করেছি, তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছি। আপনারা আমাকে সম্মান দিয়েছেন। আমি মনে করি, আমার কাজ শেষ।’তবে উপস্থিত কাউন্সিলররা সমস্বরে ‘না-না-না’ বলতে থাকেন।