জন-সাধারনের ইফতারির টাকা মেরে মোরগ পোলাও খাচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্তারা
এস রহমান.ঢাকা: জন-সাধারনের ইফতারির টাকা মেরে মোরগ পোলাও খাচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্তারা ।পল্টন থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন সংলগ্ন বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়তে এসেছেন হযরত আলী (৬০)। তিনি জানান, আমি প্রত্যেক রমজানে আসর ও মাগরিবের নামাজ পড়তে আসি এখানে। ফলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ইফতারও এখানে সেরে ফেলি। গত বছরের রমজানেও ইফতার নিয়ে এরকম বৈষম্য ছিল। এজানে আমাদের মতো সাধারণ মুসল্লিদেরকে ছোলা ও খেজুর দিয়ে ইফতার করাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। আর তারা মোরগ পোলাও, ভুনা খিচুরিসহ নানারকম নামি-দামি খাদ্য দিয়ে ইফতার করে
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের পিছু ছাড়ছে না বিতর্ক। ধর্মীয় এই প্রতিষ্ঠানটি সাম্প্রতিক সময়ে ইফতার ও নামাজ নিয়ে নানারকম বিভ্রান্তমূলক কথা বলে জনসাধারণের মনকে বিষিয়ে দিয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই প্রতিষ্ঠানটির উপর থেকে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস যেতে বসেছে। জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি এভাবে একগুঁয়েমি করে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিতে থাকলে একটা সময় আসবে যখন আর কেউ ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বলবে না, বলবে সাধারণ মানুষের মাঝে বিভ্রান্ত ছড়ানোর প্রতিষ্ঠান, আস্থা হারিয়ে ফেলবে প্রতিষ্ঠানটির ওপর থেকে। অথচ ইসলাম বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য সৃষ্টি হয়নি। হয়েছে সকলে হাতে হাত মিলে, কাঁধে কাঁধ মিলে চলার জন্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৫ সালের ২৮ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে রমজান মাসের প্রথম রমজান থেকে শেষ রমজান পর্যন্ত প্রায় ১৮’শ থেকে ২ হাজার সাধারণ মুসল্লিকে ইফতার করিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে সরকার প্রতি রমজান মাসে সাধারণ মুসল্লিদের মাঝে ইফতার বাবদ ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দিয়ে আসছে। এছাড়াও প্রতি রমজানে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) থেকেও সাধারণ মুসল্লিদের ইফতারের জন্য বরাদ্দ দিয়ে থাকে। অতীতে কোন সময়ে ইফতার বিতরণের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকলেও সম্প্রতি দেখা দিয়েছে গুরুতর অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে, চলতি রমজানে প্রতিষ্ঠানটির ইফতারে সাধারণ মুসল্লিদের মাঝে শুধু ছোলা, খেজুর বিতরণ করে আসছে। আর প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা আম, কাঠাল, আনারস, কাচ্চি বিরিয়ানি ও জুসসহ নানারকম দামি খাদ্য দিয়ে ইফতার করে। প্রতিদিনের ইফতারের জন্য সরকার ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা সাধারণ মুসল্লিদের জন্য বরাদ্দ রাখেন। সুতরাং এসমস্ত দামি ইফতারি সাধারণদের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি রাখছে না। রাখছে তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য।
এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশন ইফতারের জন্য এতো টাকা নিজেদের পকেটে ভরছেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে প্রায় ১ মাস আগে চেয়ারে বসে নামাজ পড়া ঠিক না ফতোয়া দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ মানুষের মাঝে গুরুতর বিতর্কের সৃষ্টি করে। এভাবে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিনিয়তই মুসলমানদের আস্থা হারিয়ে ফেলছে। অথচ সাধারণ মানুষের মাঝে ইসলাম ও নবী রাসুলের দিক নির্দেশনা দিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
পল্টন থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন সংলগ্ন বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়তে এসেছেন হযরত আলী (৬০)। তিনি জানান, আমি প্রত্যেক রমজানে আসর ও মাগরিবের নামাজ পড়তে আসি এখানে। ফলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ইফতারও এখানে সেরে ফেলি। গত বছরের রমজানেও ইফতার নিয়ে এরকম বৈষম্য ছিল। এজানে আমাদের মতো সাধারণ মুসল্লিদেরকে ছোলা ও খেজুর দিয়ে ইফতার করাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। আর তারা মোরগ পোলাও, ভুনা খিচুরিসহ নানারকম নামি-দামি খাদ্য দিয়ে ইফতার করে।
অন্য এক মুসল্লি জানান, সরকার আমাদের প্রতিদিনের ইফতারের জন্য যত টাকা বরাদ্দ দিয়েছে তত টাকা তারা খরচ তো করেই না। উপরন্তু আমাদের বরাদ্দের টাকা দিয়ে তারা ভোগ বিলাসি ইফতার করে। ইসলাম সকলের জন্য সমান অধিকার দিয়েছে। সে বিষয়টি ভুলেই গেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।প্রতিদিনের ইফতারে ডিসিসি সাধারণ মুসল্লিদের জন্য যা বরাদ্দ রাখে সেগুলোও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পেটে যায়। তারা ইফতার দিয়েই ধনী-গরীবের বৈষম্য সৃষ্টি করছে যা ইসলাম কখনই বলেনি।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাম্প্রতিক সময়ে নানারকম বিতর্কে জড়ানোর বিষয়টি নিয়ে কথাটি বলতেই প্রতিষ্ঠানটির মসজিদ ও মার্কেট বিভাগের উপ-পরিচালক মো: মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, ‘বড়লোক ও ছোটলোক বলতে একটা কথা রয়েছে। যারা ধনী তারা তো দামি ইফতার খাবেই। আর যারা গরীব তাদের জন্য নি¤œমানের ইফতার থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এটা নিয়ে চেঁচামেচির কি আছে।’