• শুক্রবার , ২২ নভেম্বর ২০২৪

জনতা ব্যাংক কোটালীপাড়া–আশিস, হালদার ও উপানন্দ ভূয়া ব্যক্তির নামে পল্লী ঋণ দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে অর্ধ কোটি টাকা


প্রকাশিত: ১০:৫৫ পিএম, ৬ এপ্রিল ১৪ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৭১ বার

 

গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

 জনতা ব্যাংক লিমিটেড গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ও দুই সহকারী অনুসন্ধান কর্মকর্তার (এইও) বিরুদ্ধে পল্লী ঋণের অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

সাবেক ব্যবস্থাপক আশিস কুমার বিশ্বাস ও এইও সুধন্য কুমার হালদার ও উপানন্দ বালা মিলে ভূয়া ব্যক্তির নামে পল্লী ঋণ দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। অনেক ঋণ গৃহীতা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করার পরেও অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়নি।

ভুক্তভোগীরা জানান, কোটালীপাড়ার রামশীল ইউনিয়নের জহরের কান্দি গ্রামের মৃত সাধন বিশ্বাসের দুই ছেলে ক্ষিতিশ বিশ্বাস ও কুমোদ বিশ্বাসের বাড়িতে গত মার্চ মাসের প্রথম দিকে জনতা ব্যাংক কোটালীপড়া শাখা থেকে একটি নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশ পাওয়ার পরে ক্ষিতিশ বিশ্বাসের ছেলে দীগবিজয় বিশ্বাস ব্যাংকে যোগাযোগ করলে ব্যাংক থেকে জানানো হয় তার বাবা ও চাচা দুজনে মিলে ৯০ হাজার টাকা পল্লী ঋণ উত্তোলন করেছে।

দীগবিজয় বিশ্বাস বলেন, আমার বাবা ১০ বছর আগে ও চাচা ১২ বছর আগে মারা গেছেন। ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক আশিস কুমার ও সুধান্য কুমার হালদার মিলে ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে পল্লী ঋণ উত্তোলন করে।

রামশীল ইউনিয়নের কবরবাড়ী গ্রামের মৃত ছাবেদ আলী মুন্সীর ছেলে চাঁদ মিয়া মুন্সী বলেন, বছর খানেক আগে জনতা ব্যাংক কোটালীপাড়া শাখা থেকে একলাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করি। গত নভেম্বরে এলাকায় পল্লী ঋণ আদায়ের ভ্রাম্যমাণ দলকে সুদসহ সমস্ত ঋণের টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু মার্চ মাসে আমাকে ব্যাংক থেকে টাকা পরিশোধের জন্য নোটিশ দেয়া হয়। এইও সুধান্য হালদার ও ব্যবস্থাপক আশিস কুমার বিশ্বাস আমার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

উপজেলার হিরণ গ্রামের হাকিম শেখের ছেলে রফিক শেখ বলেন, গত বছর মে মাসে জনতা ব্যাংক কোটালীপাড়া শাখা থেকে আমাকে একটি নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয় আমি নাকি ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৫০ হাজার টাকা ঋণ তুলেছি। নোটিশ পাওয়ার পরে ব্যাংকে যোগাযোগ করে জানতে পারি এইও উপানন্দ বালা ও এলাকার ব্যাংকের দালাল সিদ্দিক মিলে ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে আমার নামে পল্লী ঋণ উত্তোলন করেছে।

আশিস কুমার বিশ্বাস ও এইও উপানন্দ বালা বর্তমানে জনতা ব্যাংক সাতপাড় শাখায় কর্তরত রয়েছেন। অপর দিকে এইও সুধন্য কুমার হালদার পলাতক রয়েছে।

এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংক কোটালীপাড়া শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক আশিস কুমার বিশ্বাস এবং এইও উপানন্দ বালার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।

কোটালীপাড়া শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক কাজী ইমদাদুল হক বলেন, বর্তমানে আমাদের এ শাখায় ১৬ কোটি টাকা পল্লী ঋণ বকেয়া রয়েছে। এ শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগ দেয়ার পর বছরের শুরুতে ৬ শত ৫০ জন ঋণগ্রহীতাকে নোটিশ দিয়েছি। এদের মধ্যে ৫০টি অভিযোগ পেয়েছি। এসব অভিযোগকারীর টাকার পরিমাণ হবে প্রায় ১৫ লাখ। যে ভাবে অভিযোগকারীরা আসছে তাতে টাকার পরিমাণ আরও বাড়বে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনতা ব্যাংক কোটালীপাড়া শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, টাকার অংক অর্ধ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

জনতা ব্যাংক লিমিটেড ফরিদপুর এরিয়ার উপ-মহা ব্যবস্থাপক মো. জয়েনউদ্দিন অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।