জঙ্গি শাপু’র স্ত্রী শ্বশুর শাশুড়ি শ্যালক পাকরাও
বিশেষ প্রতিনিধি : নিউইয়র্কে বোমা হামলার ঘটনায় আহত অবস্থায় আটক আকায়েদ উল্লাহর স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কার্যালয়ে নিয়ে গেছে পুলিশ।মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার জিগাতলার বাসা থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা গেছে। নিরাপত্তাকর্মী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, বিকেলে তাদের পুলিশ নিয়ে গেছে।
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে টাইমস স্কয়ারের পোর্ট অথোরিটি বাস টার্মিনালে গতকাল বোমা হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের নাগরিক আকায়েদ উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে নিউইয়র্কের পুলিশ। আকায়েদ উল্লাহর স্ত্রী ছয় মাসের ছেলেকে নিয়ে ঢাকার জিগাতলায় বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন।পুলিশ সূত্র জানায়, আকায়েদ উল্লাহর স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালককে তাদের জিগাতলার বাসা থেকে মিন্টু রোডের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। মূলত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের সেখানে নেয়া হয়েছে।
আকায়েদ উল্লাহর ডাক নাম শাপু। তার জন্ম চট্টগ্রামে ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। ২৭ বছর বয়সী আকায়েদ উল্লাহর আত্মীয় এমদাদ জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০১১ সালের পর আকাইদের পরিবার দুবার বাংলাদেশে এসেছিল। সে সময় তারা একবার সন্দ্বীপে গিয়েছিলেন। ঢাকার হাজারীবাগে আকায়েদের বাবা সানাউল্লাহর একটি মুদি দোকান ছিল বলেও জানান তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, আকায়েদ উল্লাহ গত বছরের জানুয়ারি মাসে রাজধানীর হাজারীবাগের জিগাতলায় বিয়ে করেন। তার শ্বশুর বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের একটি দোকানে কাজ করেন। আকায়েদ উল্লাহর বাড়ি চট্টগ্রামে। সর্বশেষ গত ৮ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে এসেছিলেন।
জিগাতলার যে বাড়িতে তারা ভাড়া থাকেন, সেই বাড়ির মালিক রহিমা ইসলাম। তিনি জানান, ওই পরিবারটি ১৯৯৭ সাল থেকে ভাড়া থাকে। ওই পরিবার খুব বেশি সচ্ছল নয়। গত বছর তাদের সিটি কলেজে পড়ুয়া মেয়ের বিয়ে হয় আকায়েদের সঙ্গে। বিয়ের পর এ বছর জুনে একটি ছেলেসন্তান হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে আকায়েদ এখানে এসে এক মাস ছিলেন।
আকায়েদ উল্লাহ ২০১১ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। বাবা সানাউল্লাহ চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। তিনি সেখানেই বিয়ে করেন এবং ঢাকায়ই তাদের সন্তান আকায়েদ উল্লাহর জন্ম হয়। সন্দ্বীপের মুসাপুর ইউনিয়নের সানাউল্লাহ নিউইয়র্কে মারা গেছেন বছর দুয়েক আগে। তাকে সেখানেই দাফন করা হয়েছে বলে জানান ওই গ্রামবাসী।
নিউইয়র্ক প্রবাসী সন্দ্বীপের সোহেল মাহমুদ জানান, আকাইদ উল্লাহর ডাকনাম ‘শাপু’। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সন্দ্বীপবাসীর কাছে তিনি খুব একটা পরিচিত ছিল না। শাপু ২০ বছর বয়স পর্যন্ত বাংলাদেশেই ছিলেন। তারা চার ভাই-বোন। বড় ভাই অপুর সহযোগিতায় ২০১১ সালে শাপু তার মা-বাবা ও দুই বোনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন।সন্দ্বীপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী ইফতেখারুল আলম তারেক বলেন, “এই ঘটনায় আমরা খুবই বিব্রত। এটি আমাদের সন্দ্বীপবাসীর জন্যে খুবই লজ্জার।”
উল্লেখ্য, নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার এবং পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালের মধ্যবর্তীস্থানে স্থানীয় সময় গত সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে আকায়েদ উল্লাহসহ চার ব্যক্তি আহত হন। আহতদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। নিউইয়র্ক শহরের মেয়র বিল ব্লাসিও এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে মন্তব্য করেছেন।