জঙ্গি আব্দুল্লাহর আস্তানায় ৩ লাশ
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানী মিরপুরের মাজার রোডে জঙ্গি আব্দুল্লাহর আস্তানায় ৩ লাশ মিলেছে। তবে মরদেহ পুড়ে যাওয়ায় সেগুলো নারী না পুরুষের তা নিশ্চিত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।বুধবার বেলা পৌনে ১টার দিকে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ওই বাড়িতে জঙ্গি আবদুল্লাহ অবস্থান করছে। আবদুল্লাহর দুই সহযোগী, দুই স্ত্রী এবং দুই সন্তান ওমর (১০) ও ওসামা (আড়াই বছর) সেখানে রয়েছে। তিনি বলেন, ভবনটির পঞ্চম তলার একটি কক্ষ থেকে তিনজনের পুড়ে যাওয়া মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। অন্য কক্ষগুলোতে তাদের তল্লাশি চলছে।
র্যাবের বোমা ডিসপোজাল টিম ও ডগ স্কোয়ার্ড টিমের মাধ্যমে তারা ভবনটিতে তল্লাশি করছেন বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার তৎপরতা চলছে।সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ওই জঙ্গি আস্তানায় উদ্ধার অভিযান এবং একই সঙ্গে তল্লাশি শুরু করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ‘জঙ্গি আস্তানার’ ছয় তলা ভবনটির পাঁচ তলায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পঞ্চম তলায় আগুন ধরে যায়। এরপর সেখানে কয়েক দফা গুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পঞ্চম তলার ওই ফ্ল্যাটের জানালার গ্রিল ও বারান্দার দেয়ালধসে গেছে বলে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভবনটির পাঁচ তলায় অবস্থান নেয়া ‘জঙ্গি আবদুল্লাহ’ ও তার সহযোগীসহ পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আত্মসমর্পণের সময় চায় বলে জানায় র্যাব। পরে সেটি রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এরই মধ্যে ওই ভবনের পাঁচ তলায় জঙ্গিদের ফ্ল্যাটে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।এতে ওই ফ্ল্যাটে আগুনের কুণ্ডলী দেখা যায়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা, আত্মসমর্পণের জন্য সময়ক্ষেপণ করে ‘জঙ্গিরা’ আত্মঘাতী হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই বাড়িতে জঙ্গি আবদুল্লাহ অবস্থান করছে। আবদুল্লাহর দুই সহযোগী, দুই স্ত্রী এবং দুই সন্তান ওমর (১০) ও ওসামা (আড়াই বছর) সেখানে রয়েছে।
তখন র্যাব আরও জানায়, আস্তানায় পিস্তল, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, এসিড এবং আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) রয়েছে। ব্যবসার আড়ালে আবদুল্লাহ ওই বাড়িতে বোমা তৈরির কাঁচামাল মজুদ করেছে।এদিকে রাতে বিস্ফোরণের পর র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান সাংবাদিকদের বলেন, ভেতরে যারা ছিল তারাই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তিনটি বড় বড় বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে আরও কিছু বিস্ফোরণ ঘটেছে।
তিনি বলেন, জঙ্গিদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করানো আমাদের অগ্রাধিকার ছিল। বিভিন্নভাবে চেষ্টাও করেছিলাম। একটা পর্যায় আমাদের বলেছিল, রাত ৮টা-সাড়ে ৮টার মধ্যে তারা আত্মসমর্পণ করবে। পরবর্তী সময় আবার যখন যোগাযোগ করি, আরও ৩০ মিনিট সময় চেয়েছিল।
মুফতি মাহমুদ খান জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় র্যাবের চার সদস্য স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়েছেন। তবে তারা এখন শঙ্কামুক্ত।
আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ভবনে ঢোকে। তারা টর্চলাইটের আলো জ্বালিয়ে সেখানে তল্লাশি চালায়। অবশ্য সকালে দিনের আলোতে তল্লাশি এবং উদ্ধার তৎপরতা চালানোর কথা বলে র্যাব।
প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার মসিন্দা এলাকায় জঙ্গি আস্তানা থেকে সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটায় দুই জঙ্গিকে আটক করে র্যাব। আটককৃত দুই সহোদর হল মাসুদ ও খোকন। তবে ওই দুই সহোদর ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাত থেকে মিরপুরের দারুস সালামের ওই বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব।