জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের কারণে রাজধানীবাসীর চরম দূর্ভোগ
বিশেষ প্রতিনিধি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কারণে আজ পুরান ঢাকা ছিল অচল।এই অচলাবস্থায় পুরান ঢাকার সঙ্গে রাজধানীবাসী যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরম দূর্ভোগের সম্মুখীন হয়।এ অবস্থার অবসানে রাজধানীবাসী প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।এদিকে হল নির্মাণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিলে পুলিশের বাধার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়, মঙ্গল ও বুধবার ধর্মঘট পালন করবেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।সড়ক আটকে জগন্নাথ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সোমবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে কয়েক হাজার ছাত্র-ছাত্রী মিছিল নিয়ে বাধা ঠেলে বংশাল মোড়ে পৌঁছালে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে পুলিশ। মিছিলে লাঠিপেটা করা হয় বলেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
এর পর বেলা ২টার দিকে বিবৃতি দিয়ে ও ফোনে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানানো হলেও ঘণ্টাখানেক পর ফোন করে অবস্থান থেকে সরে এসে মঙ্গলবার ও বুধবার ধর্মঘট পালন করা হবে বলে আন্দোলনকারীদের পক্ষে বিবৃতিদাতাদের অন্যতম রাইসুল ইসলাম নয়ন জানান।বিবৃতিতে তার সঙ্গে রাশেদুল ইসলাম ও সফিকুল ইসলাম নামে আরও দুজনের নাম ছিল।
রাইসুল জাতিরকন্ঠকে জানান, পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ধর্মঘট পালন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।কিন্তু বেলা সোয়া ৩টার দিকে তিনিই ফোন করে বলেন, কর্মসূচি ঘোষণায় ভুল হয়েছে। ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়, মঙ্গলবার ও বুধবার ধর্মঘট হবে।
এর মধ্যেই দুপরে নয়াবাজার মোড় অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করে। তখন সংশ্লিষ্ট এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়; সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। পরে সোয়া ২টার দিকে তারা নয়াবাজার মোড় ছেড়ে ক্যাম্পাসের দিকে চলে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সকাল ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে সব ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এর পর কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর মিছিল কয়েক দফা ক্যাম্পাস ঘুরে পৌনে ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে যাত্রা করে।
পথে শাখারীবাজার ও রায়সাহেব বাজার মোড়ে বাধা উপেক্ষা করে মিছিলটি বংশাল মোড়ে পৌঁছালে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সদস্যরা ফাঁকা গুলি ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে।এসময় পুলিশের লাঠিপেটায় কয়েকজন আহত হয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান রাইসুল। তিনি বলেন, পুলিশ গুলি ছুড়েছে; অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ১০ম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে সুমনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এছাড়া অর্থনীতি বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মিঠুন রায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতারে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি। পুলিশি বাধার বিষয়ে কথা বলতে কোতয়ালী ও বংশাল থানার ওসিকে ফোন দেওয়া হলেও তারা ফোন ধরেননি।
তবে কোতয়ালীর সহকারী কমিশনার শাহেনশাহ ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে’ কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ার কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন।এর আগে বুধবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গিয়ে পুলিশের বাধা পেয়ে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে তারা ধর্মঘটের ডাক দেয়, যা বৃহস্পতিবার ও রোববার ক্যাম্পাসে পালিত হয়।
রোববারের ধর্মঘট পালন শেষে তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে যাওয়ার ঘোষণা দেন।এদিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরও নয়াবাজারে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে রাইসুল বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বহুবার আমাদের মাইক ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা তা হতে দেইনি।মিছিলে পুলিশের বাধা দেওয়ার নিন্দা জানিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি মানোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।