চড় মারার বিষয়ে মন্ত্রী-এমপিকে শাসন করেছি
স্টাফ রিপোর্টার : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমি এমপি মো. ছানোয়ার হোসেনকে শাসন করেছি। এটা আমাদের আওয়ামী লীগ পরিবারের বিষয়। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এটা আমি করতেই পারি। টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেনকে চড় মারা-সংক্রান্ত খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর এক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন তিনি।শনিবার রাত ৯টায় কালিহাতী উপজেলার যমুনা রিসোর্টে অপ্রীতিকর এ ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চড় মারার বিষয়ে গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশ হয়েছে, সেই এমপি তো অভিযোগ করেননি। তিনি কি অভিযোগ করেছেন কাউকে? না, তিনি করেননি।’
এদিকে টাঙ্গাইলের এমপি মো. ছানোয়ার হোসেনও জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাতে তার লাঞ্ছিত হওয়ার খবর সঠিক নয়। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী নেতা-কর্মীদের ভিড় আর স্লোগানে বিরক্ত প্রকাশ করে একটু রাগারাগি করেছেন। এ নিয়ে যারা মিথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলেও জানান ছানোয়ার হোসেন।
সূত্র জানায়, নাটোর থেকে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের টাঙ্গাইলে যমুনা রিসোর্টে শনিবার যাত্রাবিরতি করেন। এ সময় তার রাতের খাবারের আয়োজন করেন টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের নবনির্বাচিত এমপি হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী। কিন্তু হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী এমপি উপস্থিত না থাকায় ওবায়দুল কাদের নেতা-কর্মীদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে রাতের খাবার না খেয়েই চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন।এ সময় টাঙ্গাইল-৫ সদর আসনের সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে খাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন এবং হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী রাস্তায় রয়েছেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবেন বলে জানান।
এ সময় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে এমপি ছানোয়ার হোসেনকে চড়-থাপ্পড় মারেন বলে একটি খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।অবশ্য পরে ওবায়দুল কাদের রিসোর্ট ত্যাগ করার আগে এমপি ছানোয়ার হোসেনের মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে সান্ত্বনা দেন বলেও জানা গেছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম, টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের সংসদ সদস্য অনুপম শাজাহান জয়, যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতি, নাহার আহমেদ, কালিহাতী উপজেলা চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মানিক, টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক খান আহম্মেদ শুভ এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার বিষয়ে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন শনিবার রাতেই বলেন, মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি আমার বড় ভাই। তিনি শাসন করতে পারেন এবং সে আমাদের আদরও করবেন। তার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। তিনি যাওয়ার আগে মাথায় হাত বুলিয়ে আমাকে আদর করেছেন।
ঘটনার বিষয়ে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী বলেন, ওবায়দুল কাদের ভাই আমাদের অভিভাবক। তিনি আমাদের শাসন করেন, আবার আদরও করেন। এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
এদিকে, রোববার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের মির্জাপুরে চার লেনের কাজ ওবায়দুল কাদেরের পরিদর্শন করার কথা থাকলেও ওই ঘটনার পর রাতেই ঢাকা ফিরে গিয়ে তিনি এ কর্মসূচি বাতিল করে দেন বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম নুর-ই-আলম।