‘চ্যাম্পিয়ন্স লাক’ নিয়ে রোববার ইডেনে নামছে শাহরুখ সাকিবের কেকেআর
এস রহমান : ‘চ্যাম্পিয়ন্স লাক’ নিয়ে রোববার ইডেনের মাঠে নামছে শাহরুখ খান-সাকিবের কেকেআর মানে কলকাতা নাইট রাইডার্স । নাইট অধিনায়ককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, টিমটার পক্ষে তিন নম্বর আইপিএল ট্রফি জয় সম্ভব হবে কি না? এ বারই সেটা সম্ভব হবে কি না? উত্তরে গম্ভীর বলেন, ‘‘এই যে আমরা এত খাটছি, পারিবারিক সময় কাটছাঁট করে যে এখানে আছি, কারণ তো একটাই।
ম্যাচ জেতা। আমরা তাই করবও। আমার রক্তের প্রত্যেকটা বিন্দু, আমার প্রত্যেক হার্টবিট জয় ছাড়া কিছু ভাববে না! আমি লড়তে মাঠে নামব না। নামব যে কোনও মূল্যে যুদ্ধটা জিততে।’’ এর পর সংযোজন, ‘‘আমি যখন মাঠে নামি তখন আমার সহযোদ্ধাদের আমি মানুষ হিসেবে দেখি না। দেখি এক একজন প্যান্থার হিসেবে যারা ওঁত পেতে আছে শিকার করতে।’’
কেকেআর সমর্থকদের প্রথম দু’টো প্রশ্নের উত্তর শুনলে একটু মন খারাপ হতে পারে। দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ম্যাচের বাহাত্তর ঘণ্টা আগে পর্যন্ত যা ইঙ্গিত, তাতে আগামী রবিবার হয়তো নারিন ছাড়াই নাইটদের নামতে হবে উদ্বোধনী যুদ্ধে।শাহরুখ খান— শোনা গেল তিনিও আসতে নাকি পারছেন না। শ্যুটিংয়ের কিছু কাজ নাকি পড়ে গিয়েছে।
আসলে সদ্য পিতৃহারা ক্যারিবিয়ান মিস্ট্রি স্পিনার নিয়ে কোনও চাপাচাপির রাস্তায় যেতেই চাইছে না কেকেআর। বলা হল, সবে গত কাল তাঁর বাবার অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হয়েছে। সামলে উঠতে সময় দিতে হবে। নারিনের ব্যাপারটা নারিনের উপরই ছাড়া হবে। আর গত বারও তাঁর অ্যাকশন নিয়ে সমস্যার পর কেকেআর নারিনকে ছাড়াই তো নেমেছিল।
ব্র্যাড হগ পরিবর্ত হিসেবে নেমে প্রতিপক্ষদের ঝামেলায় ফেলে দিয়েছিলেন। এ বারও হগ আছেন। তিনি অনায়াসে প্রথম ম্যাচটা সামলে দিতে পারবেন। আর বাদশার অনুপস্থিতি নিয়েও শহরের মনখারাপ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ সব ঠিকঠাক চললে, কেকেআর মালিক শাহরুখ খানের বুধবার পরের মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচেই ই়ডেনে থাকার সম্ভাবনা প্রবল।
আর টিম গম্ভীরের শরীরী ভাষা থেকে কথাবার্তা— কোথাওই কোনও চিন্তা বা টেনশনের কোনও নামগন্ধ পাওয়া যাবে না। জাক কালিস, দু-দু’বার টিমকে আইপিএল ট্রফি দেওয়া ট্রেভর বেলিসের সিংহাসনের নতুন উত্তরাধিকার কালিস, তিনিও কী অসম্ভব রিল্যাক্সড! বেলিসের ছেড়ে যাওয়া রাজপাট সামলানো নিয়ে ন্যূনতম চিন্তায় আক্রান্ত নন।
বরং বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বলে দিলেন, ট্রেভর যে ট্রফির জেতার ফর্মূলা সেট করে গিয়েছিলেন, তিনি সেটা ধরেই এগোবেন। দক্ষিণ আফ্রিকানের থিওরি খুব সহজ— কোনও কিছু ভেঙে না গেলে অহেতুক তাকে জুড়তে বোসো না।
কালিস বলছিলেন, ‘‘কেকেআরের সবই তো আমার চেনা। এটা একটা নতুন চ্যালেঞ্জ যা আমি উপভোগ করব বলেই মনে হয়। আর আমার ভাগ্য ভাল বলতে হবে। ট্রেভর জেতার সিস্টেমটা তৈরি করে রেখে গিয়েছে। আমি সেটা বদলাতে যাব কেন? আমার কোচিং স্টাইলটা ট্রেভরের মতোই হবে।’’
মাঠে কেকেআর নামবে -এক
একজন শিকারী প্যান্থার হিসেবে-
গৌতম গম্ভীর আবার যে কথাবার্তা এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটে বললেন, তা আরও উদ্দীপক। সমর্থকদের তেতে যাওয়ার মতো। নাইট অধিনায়ককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, টিমটার পক্ষে তিন নম্বর আইপিএল ট্রফি জয় সম্ভব হবে কি না? এ বারই সেটা সম্ভব হবে কি না? উত্তরে গম্ভীর বলেন, ‘‘এই যে আমরা এত খাটছি, পারিবারিক সময় কাটছাঁট করে যে এখানে আছি, কারণ তো একটাই।
ম্যাচ জেতা। আমরা তাই করবও। আমার রক্তের প্রত্যেকটা বিন্দু, আমার প্রত্যেক হার্টবিট জয় ছাড়া কিছু ভাববে না! আমি লড়তে মাঠে নামব না। নামব যে কোনও মূল্যে যুদ্ধটা জিততে।’’ এর পর সংযোজন, ‘‘আমি যখন মাঠে নামি তখন আমার সহযোদ্ধাদের আমি মানুষ হিসেবে দেখি না। দেখি এক একজন প্যান্থার হিসেবে যারা ওঁত পেতে আছে শিকার করতে।’’
লড়া আর জেতার যে যুদ্ধ শুরু রবিবার থেকে। শোনা গেল, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের পিচে উদ্বোধনী ম্যাচ খেলতে চলেছে কেকেআর। বিশ্বকাপে পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের পিচও একটা বিকল্প হিসেবে আছে, কিন্তু সম্ভাবনা প্রথমটার বেশি। নাইটরা এ দিন ইডেনে একটা প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলে নিজেদের আরও ঝালিয়ে নিল।
ইউসুফ পাঠানকে দিয়ে অনেকটা সময় অফস্পিন বোলিং করিয়ে নেওয়া হল। ব্যাটিংয়ের সময় রবিন উত্থাপ্পা, গৌতম গম্ভীরদের পুরনো ফর্মেই দেখিয়েছে। টিমও মোটামুটি চলে এসেছে। টিমের বোলিং কোচ ওয়াসিম আক্রমের বৃহস্পতিবার রাতে শহরে ঢুকে যাওয়ার কথা। দু’এক দিনে চলে আসবেন আন্দ্রে রাসেলও।
বলা হয়নি, আরও একজন এসে গিয়েছেন এ দিন থেকে। গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো রোমাঞ্চকর নানা কাজকর্ম তিনি বিশ্বজুড়ে করে বেড়ান এবং কেকেআরের সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র নতুন নয়। নতুন হল, তাঁর উপস্থিতি নিয়ে নাইটদের নয়া দর্শন।
কেকেআরের এক কর্তা যে ব্যাখ্যাটা দিলেন, তা বেশ মজার। বললেন, এই ভদ্রলোক নিজের কাজের জায়গায় অতুলনীয় তো বটেই, কিন্তু তা ছাড়া আরও একটা ব্যাপার আছে। ইনি, দু’বছর আগে শেষ এসেছিলেন আর কেকেআর দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকে ট্রফি নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। গত বার পারেননি আসতে, টিমও পারেনি ট্রফি তুলতে। তাই এ বার একেবারে গোড়া থেকে হাজির করা।
কে ইনি? ইনি, মাইক হর্ন। টিমের সঙ্গে যুক্ত এই অ্যাডভেঞ্চারার নিজের মতো সেশন তো করাবেন। নিজের অভিজ্ঞতা শোনাবেন। কিন্তু তার বাইরেও একটা কারণে তাঁকে থাকতে হচ্ছে। তিনি যে টিমের চলমান ‘চ্যাম্পিয়ন্স লাক’!