চিংড়ী ব্যবসার আড়ালে চালের গুঁড়া দিয়ে ক্যাপসুল তৈরী করত শাহনেওয়াজ
খুলনা প্রতিনিধি : চিংড়ী ব্যবসার আড়ালে চালের গুঁড়া দিয়ে ক্যাপসুল তৈরী করত শাহনেওয়াজ । এ অবৈধ কারবারের জন্যে বিশিষ্ট শিল্পপতি কাজী শাহনেওয়াজ ও মাছ কারখানার কর্মকর্তা শরীফ রহমানকে আটক করা করে র্যাব। শাহনেওয়াজের খুলনার ওই একটি মাছের কারখানা থেকে এসিআইসহ বেশকিছু কোম্পানির নামে বানানো কয়েক কোটি টাকার নকল ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। নকল এই ওষুধ কারখানার নাম শাহনেওয়াজ সি ফুড।
খুলনার রূপসা উপজেলার চর রূপসা এলাকায় অবস্থিত বন্ধ এ কোম্পানিতে আজ সোমবার র্যাব-১ ও র্যাব-৬ অভিযান চালায়।অভিযানে প্রায় ৪ হাজার পিস ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। সেইসঙ্গে চালের গুড়া, কসমেটিক, পাউডারসহ ওষুধ তৈরির কয়েক কোটি টাকা মূল্যের উপকরণ জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ভবনের মালিক বিশিষ্ট শিল্পপতি কাজী শাহনেওয়াজ ও মাছ কারখানার কর্মকর্তা শরীফ রহমানকে আটক করা হয়েছে। র্যাব -৬ এর মেজর সুরুজ বলেন, র্যাব-১ ও র্যাব-৬ এ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে প্রায় ৭ লাখ বিভিন্ন নকল ওষধ ও বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল উদ্ধার করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করা হয়েছে।
র্যাব-৬ খুলনার অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, রূপসা চরে একটি ভবনে ভেজাল ওষুধ তৈরি হয়, এরপর সেই ওষুধ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়- এমন তথ্যের ভিত্তিতে বেশকিছু দিন গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয় চর এলাকায়। পরে নিশ্চিত হয়ে শাহনেওয়াজ সি ফুডে অভিযান চালানো হয়।
তিনি জানান, এই কারখানায় গোপনে বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ বানানো হতো। অভিযানের পর এসিআই কোম্পানির অ্যান্টিবায়োটিক ফ্লুক্লক্স ক্যাপসুল পাওয়া গেছে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার পিস। রেনিটিড ট্যাবলেট পাওয়া গেছে ১ বস্তা। বিভিন্ন নামের ওষুধ আছে আরও ৪ বস্তা। ওষুধের খালি খোসা আছে প্রায় আড়াই লাখ পিস। আছে নকল ওষুধের কাঁচামাল, চালের গুড়া, কসমেটিক, কেমিক্যাল, পাউডারসহ কয়েক কোটি টাকার উপকরণ।
র্যাব-১ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফিরোজ আহম্মেদ জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ঢাকার মিডফোর্ডসহ বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে এই চক্রটির যোগাযোগ রয়েছে। তারা ওই সব হাসপাতাল থেকে অর্ডার নিয়ে গোপনে নকল ওষুধ তৈরি করে। অভিযান শুরুর আগেই ওই চক্রের সবাই পালিয়ে গেছে।
শাহনেওয়াজ সি ফুডের মালিক কাজী শাহনেওয়াজ তাদের জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানি বন্ধ থাকায় দুই মাস আগে জাকির হোসেন নামে একজনের কাছে তিনি ভবনটি ভাড়া দেন।র্যাব-৬ খুলনার অধিনায়ক খোন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, কাজী শাহনেওয়াজ ও শরীফ রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় র্যাবের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।
উল্লেখ, শিল্পপতি কাজী শাহনেওয়াজ হলেন শাহনেওয়াজ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন।