চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে ল্যাং মেরে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছিল শ্রীলংকা
বিবিসি অবলম্বনে প্রিয়া রহমান: যে শ্রীলংকা চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে ল্যাং মেরে দেশ থেকে বিতাড়িত হতে বাধ্য করেছিল সেই অতীত কি সহজেই ভুলে গেলেন তিনি! ন্যরা তো বেলতলায় একবারেই যায় কিন্তু হাথুরে কি বার বার যাবেন? এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে ফিরছে? যদিও শ্রীলঙ্কা দলের কোচ হিসেবে হাথুরুসিংহের নাম আসাটা গুজবই মনে করছে বিসিবি।
এদিকে শ্রীলঙ্কার ভবিষ্যৎ কোচ হিসেবে চন্ডিকা হাথুরুসিংহ ও সারে কাউন্টি ক্লাবের কোচ গ্রাহাম ফোর্ডের নাম আসছে বিভিন্ন সংবাদমধ্যমে। তবে এ আলোচনায় অগ্রাধিকার পাচ্ছেন হাথুরু। কেবল লঙ্কান বলেই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর অধীনে বাংলাদেশের বদলে যাওয়ার কারণেই। এখন কথা হলো, তিনি আদৌ দেশের দায়িত্ব নেবেন কিনা।
বিসিবি মনে করছে, এটি স্রেফ গুজব। হাথুরুর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাই বাংলাদেশের। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম নিজামউদ্দিন চৌধুরী বললেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের আসলে কিছুই জানা নেই। গত রাতেও কথা হলো তাঁর সঙ্গে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের নানা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হলো। এ ব্যাপারে তো কিছু শুনলাম না।’
শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব যদি হাথুরু নিতেও চান, তাহলে তাঁর অতীত অভিজ্ঞতার ব্যাপারটি কিন্তু সামনে চলে আসবেই। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) সঙ্গে তাঁর অতীত অভিজ্ঞতাও ভালো নয়। বছর ছয়েক আগে শ্রীলঙ্কা দলে তিনি দায়িত্ব পালন করেছিলেন সহকারী কোচ হিসেবে। কিন্তু সে অধ্যায়টা মোটেও সুখকর হয়নি তাঁর। কুমার সাঙ্গাকারা ও মুত্তিয়া মুরলিধরনের অনুরোধে ২০০৯ সালে হাথুরু যখন শ্রীলঙ্কার ছায়া কোচ, প্রধান কোচ তখন ট্রেভর বেইলিস ও তাঁর সহকারী স্টুয়ার্ট ল। হাথুরুর দায়িত্ব ছিল ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে সহায়তা করা, ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত টেকনিকের ঘাটতিগুলো নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করা এবং দলীয় পরিকল্পনায় ভূমিকা রাখা ৷ শ্রীলঙ্কার ভবিষ্যৎ কোচ হিসেবেই দেখা হচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু তাঁর দুর্ভাগ্য, বিতর্কিতভাবে হাথুরু বরখাস্ত হয়ে যান ২০১০ সালের জুনে ৷
তাঁর ‘অপরাধ’ ছিল বোর্ড প্রধানের কথা না শোনা ৷ জিম্বাবুয়েতে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ না করেই অস্ট্রেলিয়াতে লেভেল-৩ প্রশিক্ষণ কোর্স করতে চলে গিয়েছিলেন তিনি। বরখাস্তের আগে ‘দেশাত্মবোধ’ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল তাঁর। এর পরপরই পরিবার নিয়ে থিতু হন অস্ট্রেলিয়াতে। এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার পর হাথুরু আবারও নিজ দেশের দায়িত্ব নেবেন কিনা, সেটা বিতর্ক সাপেক্ষ।
হাথুরুর খেলোয়াড়ি জীবন অবশ্য খুব উজ্জ্বল নয়। ২৬ টেস্টে রান ১২৭৪, উইকেট নিয়েছেন ১৭ টি। ৩৫ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে ৬৬৯ রান, উইকেট সংখ্যা ১৪ টি। তবে হাথুরুর মূল সাফল্য কোচ হিসেবেই। ২০০৫ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ছাড়ার পর ওই বছরই কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন আরব আমিরাতে। এর পরের বছর তিন বছরের চুক্তিতে হয়েছিলেন শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের কোচ ৷ শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের হয়ে দারুণ সময় কাটানো হাথুরু সাফল্য পান শেফিল্ড শিল্ডের নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়েও। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় সাফল্য বাংলাদেশ দলের হয়েই। বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্স ও ঘরের মাঠে পরপর চারটি ওয়ানডে সিরিজ জিতে ক্রিকেট বিশ্বে আলাদা এক অবস্থানই করে নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার এই সাবেক ক্রিকেটার।