চট্টগ্রামে বাদশা’র বাজার গরম
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বাদশা’র বাজার গরম। দাম হাঁকা হয়েছে ২২ লাখ। বাদশা নামে এই গরুর দাম হাকার সাহস পাচ্ছেন না কেউ।এই বাদশাই এখন চট্টগ্রামের সেরা গরু।বাদশাকে দেখার জন্যও লোক ভিড় করছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলক্ষে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ভ্রমণ করেছে বাদশাহ। ৪১৬ কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব পাড়ি দিতে নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। তবে আবার নিজ জেলায় ফেরার জন্য এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া হয়নি।
এবারের কোরবানি ঈদের আগে বিক্রির জন্য দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে যাওয়া প্রাণির একটি এই বাদশাহ। ঝিনাইদহের বাসিন্দা বকুলের অতি যত্নে বড় হওয়া বাদশাহ আসলে শাহীওয়াল জাতে একটি গরু। চট্টগ্রামের সাগরিকা গরুর হাটে এর দাম হাঁকা হয়েছে ২২ লাখ টাকা।
চট্টগ্রামের প্রতিটি কোরবানি পশুর হাটই ইতোমধ্যে জমজমাট হয়ে উঠেছে। মহানগর এবং নগরীর বাইরের প্রতিটি হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় প্রতিদিনই বাড়ছে। এর মধ্যে কোরবানি দিতে ইচ্ছুক যে মানুষরা সাগরিকা পশুর হাটে হাজির হচ্ছেন, তাদের সবারই নজর কাটছে বাদশাহ। ঝিনাইদহ থেকে বাদশাহর চট্টগ্রাম ভ্রমণ যেন সফল হতে চলেছে। চট্টগ্রামের গরুর বাজারের আলোচনায় এখন ২২ লাখ টাকার বাদশাহ। দাম শোনার পর থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাগরিকায় ছুটছেন নগরবাসী।
বাদশাহ ছাড়া আরও দুটি প্রিজিয়াম জাতের ষাঁড় নিয়ে চট্টগ্রামের সাগরিকায় হাজির হয়েছেন বকুল। বাদশাহর দাম ২২ লাখ টাকা হাঁকলেও অন্য দুটি দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা করে।
বকুল জাতিরকন্ঠকে জানান, বাদশাহকে খুলনার ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুণ্ড থানার আলমডেঙ্গা বাজার থেকে ২০১১ সালে ১৭ হাজার টাকায় কিনেছিলাম। আর প্রিজিয়াম জাতের গরুগুলো ২০১৩ সালের শেষে দিকে দেড় লাখ টাকা করে কিনিছিলাম। আমি ও আমার ছোট ভাই মুকুল মিলে পরিকল্পিতভাবে এ গরু তিনটি লালন-পালন করেছি। কালো রংয়ের বাদশাহর উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট সাড়ে ৭ ইঞ্চি, লম্বায় প্রায় সাড়ে ৮ ফুট। এর ওজন কমপক্ষে ২৭ মণ হবে। এখন পর্যন্ত বন্দর নগরীতে বাদশাহর চেয়ে বড় গরু আসার খবর পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানান, আমরা দুই ভাই প্রতি বছর ৫/৬টি গরু কোরবানি ঈদে বিক্রির টার্গেট করি। এবার আমরা এই বাজারে ৯টি গরু নিয়ে এসেছি। এখন পর্যন্ত বিক্রি না হলেও সবগুলো বিক্রি হবে বলে আশা রাখছি।
বাদশাহর দাম প্রসঙ্গে বকুল বলেন, বাদশাহর জন্য দৈনিক প্রায় ৫০০ টাকার খাবার কিনতে হয়েছে। এছড়া ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রীর জন্যও প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়েছে। ঝিনাইদাহ থেকে চট্টগ্রামে আনতে গাড়ি ভাড়াসহ সবমিলিয়ে ইতোমধ্যে আমাদের প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন পর্যন্ত বাদশার দাম সাড়ে ৭ লাখ টাকা দর হয়েছিলো। কিন্তু ঐ দামে বিক্রি করিনি। তাছাড়া প্রিজিয়াম জাতের গরু একজন ক্রেতা চার লাখ টাকা দর করেছেন।
সাগরিকা হাটের ইজারাদার মো. রাজু জানান, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় গরু বাদশাহ। এই গরুর উপস্থিতি হাটে লোক সমাগম বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা আমার বাজারের জন্য ভালো হলেও এখান থেকে এখন পর্যন্ত বড় গরু বিক্রি হয়নি। আশা করছি, ঈদের আগে গরু বিক্রি বাড়বে।