চট্টগ্রামে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তের হোলিখেলায় নগর ছাত্রলীগ নেতা নিহত
বিশেষ প্রতিবেদক. চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নগর ছাত্রলীগ নেতা নিহত হবার পর সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত বেসরকারী প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে-বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সমাজ বিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ খবর নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় সব ক্যাম্পাস বন্ধ থাকবে।
জানা গেছে, দুপুরে হত্যাকাণ্ডের জের ধরে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়টির দামপাড়া ক্যাম্পাসে ভিসিসহ সকল শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন।
এদিকে দুপুরে ছাত্রদের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়টির দামপাড়া ক্যাম্পাসে খুন হন বিবিএর ৩১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও নগর ছাত্রলীগ সদস্য নাসিম মোহাম্মদ সোহেল। নিহত সোহেল নগরীর চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদের শেরশাহ এলাকার আবু তাহেরের ছেলে।
এ ঘটনার নগরীর প্রবর্ত্তক এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অপর ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সংঘর্ষ চলাকালে দুপক্ষ পরস্পরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এসময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন নিহত ছাত্রলীগ নেতা সোহেল মোহাম্মদের (২২) লাশ দেখতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে জামালখান মোমিন রোড এলাকায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাকে ঘেরাও করে।
পরে পুলিশের সহায়তায় তার গাড়ি বহর চলে যায়। চেরাগী পাহাড় এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মীরা পরপর ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।সংঘর্ষে লিপ্তরা নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরের সমর্থিত ছাত্রলীগ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে ছাত্রলীগ নেতা খুনের পর থেকে নগরীর আগ্রাবাদ এপেক্স রোড, প্রবর্তক মোড়, মেহেদীবাগ, জিইসির মোড়, আন্দরকিল্লা, ওয়াসার মোড়, লালখান বাজার, জামালখান, ষোলশহর দুই নম্বর গেইট, শেরশাহ, ওয়্যারলেস মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ গাড়ি ভাঙচুর ও দোকানপাট ভাঙচুর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পুলিশের সামনে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা এবং যানবাহন ভাঙচুর করা হলেও পুলিশ প্রতিরোধ করেনি।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ জাতিরকন্ঠকে জানান, একজন ছাত্র খুন হওয়ার জের ধরে নগরীর কয়েকটি এলাকায় ভাঙচুর করেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ নামানো হয়েছে।
নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রণি দাবী করেন আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে বিরোধের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।