গ্যাসের দাম বাড়ালে সর্বস্তরের মানুষ ভয়ংকরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে-মকসুদ
স্টাফ রিপোর্টার : গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে নাগরিক কমিটি। এতে অংশ নেন লেখক-গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ। তিনি বলেন, সরকারকে যুক্তিসহকারে বলা হয়েছে, গ্যাসের দাম বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সে কথা বলার পর গণশুনানি হয়েছে, গণমাধ্যমও বলেছে, তারপরও সরকার তা শোনে না। গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে দাম কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ রোববার সকালে এক অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচিতে সৈয়দ আবুল মকসুদ এ কথা বলেন। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ‘নাগরিক কমিটি’ এই কর্মসূচি করেছে। সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এতে অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। সর্বস্তরের মানুষ ভয়ংকরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল এক পোশাকশিল্পের কর্মচারী আমাকে বলেছেন, এমনিতেই আমরা মাসের ভেতরে ১০ দিন শুধু ডাল অথবা ভর্তা দিয়ে ভাত খাই। গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে অন্তত এক সপ্তাহ কোনো বাজার করার পয়সা থাকবে না। এই বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়, গ্যাসের দাম বাড়ানো প্রত্যেক মানুষের জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।’ অবিলম্বে সিদ্ধান্ত স্থগিত করে গ্যাসের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
অবস্থান কর্মসূচিতে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এস এম শামসুল আলম বলেন, গ্যাস খাতের প্রতিটি কোম্পানির হাতে বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত অর্থ রয়েছে। এই অবস্থায় গ্যাসের দাম বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তিনি এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানান।
সিএনজির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে সিএনজি স্টেশন ও কনভার্সন ওয়ার্কশপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারহান নূর বলেন, সিএনজির দাম বাড়ানোর কারণে সব ধরনের গণপরিবহনের ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
নাগরিক কমিটির নির্বাহী সদস্য মো. আলমগীর কবীর লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন, গ্যাসের দাম বাড়লে সার, বিদ্যুৎ ও শিল্পে উৎপাদনের ব্যয় বাড়বে। সিএনজির দাম বাড়লে পরিবহনের ভাড়াও বাড়বে। যার ভার শেষ পর্যন্ত পড়বে ভোক্তাদের ঘাড়েই।
অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচিতে অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ, বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান, বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের শম্পা বসু প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গত বৃহস্পতিবার দুই দফায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। দাম বাড়ানোর ফলে আবাসিক গ্রাহকদের এক চুলার জন্য ৭৫০ (বর্তমানে ৬০০) ও আগামী জুন মাস থেকে ৯০০ টাকা বিল দিতে হবে। দুই চুলার জন্য আগামী মাস থেকে ৮০০ (বর্তমানে ৬৫০) এবং জুন মাস থেকে ৯৫০ টাকা বিল দিতে হবে।
আবাসিক গ্রাহকের মিটার বিলের ক্ষেত্রে আগামী মাস থেকে প্রতি ঘনমিটার ৯ টাকা ১০ পয়সা এবং জুন মাস থেকে ১১ টাকা ২০ পয়সা দিতে হবে। এ ছাড়া যানবাহনে ব্যবহৃত সিএনজির দাম মার্চ থেকে প্রতি ঘনমিটার হবে ৩৮ টাকা (বর্তমানে ৩৫) এবং জুন থেকে ৪০ টাকা হবে। প্রথম দফায় আগামী ১ মার্চ ও দ্বিতীয় দফায় ১ জুন থেকে দাম বাড়বে।