• বৃহস্পতিবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

গৃহায়নে দেলোয়ারনামা- লুটেরা কেরানী ধরলেন সচিব


প্রকাশিত: ১:৫৩ এএম, ২ আগস্ট ২৩ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪৪ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : এবার লুটেরা কেরানী কে ধরলেন সচিব স্বয়ং। জাল সনদে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) উচ্চমান সহকারী পদে চাকরি নিয়েছিলেন দেলোয়ার হোসেন নামের ওই কেরানী। হয়েছেন শতশত কোটি টাকার মালিক। অবৈধ সম্পদ ও জাল সনদ খুঁজতে তদন্ত কমিটি করেছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।এরপর ফাঁস হয় নানা তথ্য।মঙ্গলবার (১ আগস্ট) তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে মন্ত্রণালয়। পরে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন গৃহায়ন সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন।

তিনি বলেন, দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ ছিল। সে বিষয়ে আজ (মঙ্গলবার) মন্ত্রণালয়ে শুনানি করা হয়। তদন্তে প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে। সম্প্রতি দেলোয়ারকে জাগৃকের প্রধান কার্যালয় থেকে রাজশাহীতে বদলি করা হয়েছে।
সচিব আরও বলেন, দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ফাইল আটকে রাখা, ফাইল গায়েব করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়ম করে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এবং বিদেশে বাড়ি করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি যেন বিদেশে যেতে না পারেন সে বিষয়ে আমরা ইমিগ্রেশনকে চিঠি লিখেছি।

জাগৃক সূত্র জানায়, পদে ছোট হলেও জাগৃকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যানের মতো ক্ষমতাবান হিসেবে পরিচিত তিনি। গৃহায়ন ভবনে বিশাল আকারের রুমে বসে রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার প্লট ও ফ্ল্যাটের সব কাজ করেন দেলোয়ার। নিজে উচ্চমান সহকারী হলেও নিজের কাজ দাপ্তরিক কাজ করতে তার রয়েছে একাধিক লোক। নিজ নামের পাশাপাশি স্ত্রী, মা ও শ্যালকের নামে সংস্থাটি থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কমপক্ষে ১০টি প্লট ও ফ্ল্যাট।

মোহাম্মদপর-ধানমণ্ডি এলাকার দাপ্তরিক দায়িত্ব ছাড়াও নিজের কব্জায় নিয়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়েছেন একাধিক প্লট। এভাবে নানা অনিয়মের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন দেলোয়ার। ২০১৭ সালের শেষদিকে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে জাগৃকের কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক হন তিনি। মঙ্গলবার আটকের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমার কোনো সম্পত্তিই নেই। সব অভিযোগ মিথ্যা।

আপনি অনিয়ম করে অনেক টাকার পাহাড় গড়েছেন এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার নামে কেউ কোনো ডকুমেন্টস বা অভিযোগ দিয়েছে? দেয়নি।
কেন আটক করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, সচিব (গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব) স্যারকে জিজ্ঞেস করেন। আমার কিচ্ছু নেই। সবই ভিত্তিহীন, সবই মিথ্যা। সবকিছু মিথ্যা। কোনো লিখিত অভিযোগ কি আছে আমার বিরুদ্ধে? আমি এরকম কোনো কিছু করিনি।

আপনার সার্টিফিকেটে বাবার নাম কী? সেখানে বাবার নাম শিশু মিয়া আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাবার নাম আব্দুল ওয়াহিদ। সার্টিফিকেটে আব্দুল ওয়াহিদই আছে। কারও নামে যদি ভুল হয়, সেটা সংশোধনের সিস্টেম আছে। এটা আমি করছি? এটা বোর্ড সংশোধন করে দিয়েছে। বোর্ডের চেয়ারম্যান যে আমার সার্টিফিকেটে লিখে দিয়েছে সেই কপি কি আপনাদের কাছে আছে? কত মানুষ তো কত কথা বলে। আমি কোনো কথা বলতে চাই না।
আপনি গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের গডফাদার ছিলেন সচিবের এমন মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ছোট চাকরি করি। এ চাকরিতে কেউ গডফাদার হয়? আমার তো কোনো সম্পত্তিই নেই।