• বুধবার , ২৭ নভেম্বর ২০২৪

গরু জবাইয়ের গুজব, দিল্লির উপকণ্ঠে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা


প্রকাশিত: ৮:৩৬ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ১৫ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭২ বার

cow marder-Cow_sk-300x191নয়াদিল্লি প্রতিনিধি:   গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে গুজবের পরিণতিতে পিটিয়ে মারা হলো এক মুসলমান বৃদ্ধকে এবং গুরুতর আহত হলেন তাঁর পুত্র। রাজধানী দিল্লি থেকে ঢিল-ছোড়া দূরত্বে উত্তর প্রদেশের বৃহত্তর নয়ডার বিসাদা গ্রামে গত সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।প্রতিবাদে পাঁচ কিলোমিটার দূরের মুসলিম প্রধান এক গ্রামের লোকজন বিক্ষোভ জানায়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অপরাধীদের কঠোরতম শাস্তি দিতে হবে।ঘটনার সঙ্গে জড়িতে থাকার সন্দেহে মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আপাত শান্ত এই অঞ্চলে এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেই বিসাদা গ্রাম ও তল্লাটে কোনো দিন সাম্প্রদায়িক অসম্প্রীতির কোনো ঘটনা ঘটেনি। গ্রামটিও সচ্ছল। নিহত মুহম্মদ আখলাখ (৫৮) শিক্ষিত ও মিশুক বলেই এলাকায় পরিচিত। শুধু তাই নয়, এবার কোরবানির ঈদেও নিহতের বাড়িতে গ্রামের হিন্দু প্রতিবেশীরা এসেছেন এবং পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত এই গ্রামে এমন ঘটনা সবাইকে চমকে দিয়েছে। নিহতের পরিবারের সদস্যরা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন।

1443598024আখলাখের মেয়ে সাহিবার মতে, একটা গুজবের ভিত্তিতে শতাধিক মানুষ বাড়ি চড়াও হয়ে এভাবে তাঁদের আক্রমণ করবে, কোনো দিন তাঁরা কল্পনাও করেননি।
গ্রামে একটা বাছুর দু দিন ধরে নিখোঁজ ছিল। সোমবার হঠাৎই গুজব ছড়ায়, আখলাখের জমিতে নাকি গরুর হাড় এবং বাড়ি থেকে গরুর মাংস পাওয়া গেছে। অভিযোগ, গুজব ছড়ানোর কিছু পর স্থানীয় একটি মন্দির থেকে উসকানিমূলক কিছু ঘোষণা হয়। তার পরই শতাধিক লোক আখলাখের বাড়ি আক্রমণ করে।

তারা ৫৮ বছর বয়সী আখলাখকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। তাঁর ২২ বছরের ছেলে দানিস গুরুতর আহত হন। একলাখের বাড়ির ফ্রিজে ছাগলের মাংস রাখা ছিল। আক্রমণকারীরা সেটাকে গরুর মাংস বলে দাবি করে। পুলিশ সেই মাংস আটক করে। বুধবার নয়ডা প্রশাসন জানায়, আটক মাংস গরুর নয়, ছাগলের।
বিজেপি শাসিত কিছু রাজ্যে গরুর মাংস কেনাবেচার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর থেকে দেশের বিভিন্ন অংশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সমাজবাদী পার্টি-শাসিত উত্তর প্রদেশে গরু জবাই ও মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও এমন ঘটনায় প্রশাসন উদ্বিগ্ন।

বিজেপির রাজ্য নেতারা গোটা ঘটনার জন্য রাজ্য পুলিশকে দোষী ঠাওরেছে। আখলাখের পরিবারেরও অভিযোগ, ঘটনার এক ঘণ্টা পর পুলিশ আসে। বিসাদা গ্রাম ও তার আশপাশের এলাকায় ৮০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে। আহত দানিসের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার রুপি মঞ্জুর করা হয়েছে।