• বৃহস্পতিবার , ২৮ নভেম্বর ২০২৪

খোকনে ক্ষুদ্ধ চীফ জাস্টিজ


প্রকাশিত: ১১:১৫ পিএম, ২৩ জানুয়ারী ২৪ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫১ বার

 

কোর্ট রিপোর্টার : নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথে ‘সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে’ অভিযোগ তুলে সংবাদমাধ্যমে কথা বলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চে একটি মামলার শুনানিতে এসেছিলেন খোকন। তাকে উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপিল বিভাগের রায়ের ব্যাখ্যা দেওয়ার আপনি কে? বলেন? যে কোনো আইনি ব্যাখ্যা শুধু সুপ্রিম কোর্ট দেবে। আপনি তো আমাদের কম্পিটেন্সি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।“আপনি চাইলে রিভিউ করতে পারেন। রিভিউ না করে মিডিয়ায় বক্তব্য দেন।”এ কথার পর আইনজীবী খোকনের কোনো মামলা মঙ্গলবার আপিল বিভাগ শুনবে না বলে জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি।

আগামী ৩০ জানুয়ারি বসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। আগের দিন ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদ রয়েছে একাদশ সংসদের। এর মধ্যেই দ্বাদশ সংসদের ২৯৯ জন সদস্য শপথ গ্রহণ করেছেন। সে কারণে নতুন সংসদ সদস্যদের শপথ ‘সংবিধানসম্মত’ হয়নি বলে দাবি করে আসছেন বিএনপি নেতা মাহবুব উদ্দিন খোকন। তার ভাষ্য, আগের সংসদের মেয়াদপূর্তির আগেই নতুন নির্বাচিতরা শপথ নেওয়ায় বর্তমানে সংসদে ‘৬০০ সদস্য’ রয়েছেন।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন দুদিন আগে বলেন, “এটা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় আছে। যদি খোকন বলে থাকেন, তিনিও আদালত অবমাননা করেছেন।” এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। নির্বাচিত ব্যক্তিরা সে বছরের ৯ জানুয়ারি শপথ নেন। ২৯ জানুয়ারি ওই সংসদের প্রথম বৈঠক হয়। আর একাদশ জাতীয় সংসদের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি শপথ নেন।

সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে, সংসদের মেয়াদ গণনা হবে সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে পাঁচ বছর। তাই ‘দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে শপথ নেওয়া হয়েছে’ – এমন যুক্তিতে একাদশ সংসদের নির্বাচিত সদস্যদের নেওয়া শপথের বৈধতা নিয়ে ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ।ওই রিট মামলার শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তা খারিজ করে হাই কোর্ট।

সেই রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষ বলেছিল, ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশন বসার দিন থেকে সংসদ সদস্যরা কার্যভার গ্রহণ করে থাকেন। ফলে আগে শপথ নিলেও তাতে সংবিধান বা আইনের ব্যত্যয় ঘটেনি। তাই রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।

এরপর রিট আবেদনকারী ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন।তখনকার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ গত বছরের ১ অগাস্ট ওই লিভ টু আপিলও খারিজ করে দেয়। ওই রায় নিয়ে সে সময় সংবাদমাধ্যমে কথা বলেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করার কথাও তিনি বলেছিলেন।