খুনী পুলিশ আরসেনের প্রেতবাহিনী নিয়ে তোলপাড়
প্রিয়া রহমান : একের পরে এক খুন করে তাদের লাশ কবরে থেকে তুলে আধা পচাগলা দেহ বের করে তাদের ওপর মন্ত্র পড়ছিলেন সাবেক পুলিশ আরসেন বাইরামবেকভ। কালোজাদুতে বিশ্বাসী বাইরামবেকভ মস্কো থেকে দূরে এক ছোট শহরে তাঁর কর্মকাণ্ডের প্রেতবাহিনীর তৈরির কারখানা বানান।
সম্ভবত তিনি চেয়েছিলেন পৃথিবীর উপরে প্রভুত্ব করতে। তাই দরকার ছিল একটি সেনাবাহিনীর। এমন এক সেনাদল তৈরি করতে চেয়েছিলেন রাশিয়ার প্রাক্তন পুলিশ কর্মী আরসেন বাইরামবেকভ, যাকে বেতন দিতে হবে না, খেতে দিতে হবে না অথচ সেই বাহিনী হবে অমিত শক্তিশালী।
মানুষের দ্বারা এমন কাজ সম্ভব নয়, বাইরামবেকভ জানতেন। তাই না-মানুষ দিয়েই তাঁর উদ্দেশ্য সাধনে তৎপর হন তিনি। কালোজাদুতে বিশ্বাসী বাইরামবেকভ মস্কো থেকে ৯০০ কিমি দূরে ভারখনায়া পিস্মহা নামের এক ছোট শহরে তাঁর কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র তৈরি করেন। সেখানে তিনি চার জন অসহায় গৃহহীন মানুষকে জোগাড় করে নিয়ে আসেন। এবং একে একে তাদের হত্যা করে কবর দিয়ে দেন।
পরে সেই কবর থেকে তাদের ঈষৎ পচা-গলা দেহ বের করে এনে তাদের মন্ত্রপূতঃ করে চলমান প্রেত বা জোম্বি বানানোর চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত এই কারবার ধামাচাপ থাকেনি। পুলিশ খোঁজ পায় বাইরামবেকভের এবং তার ডেরায় হানা দিয়ে দেখতে পায় একটি বড় পাথরের টেবিলকে যূপকাষ্ঠ বানিয়ে তিনি ধরে আনা মানুষদের সেখানে বলি দিয়েছেন।
জেরায় বাইরামবেকভ স্বীকার করেছেন, তিনি সত্যিই জোম্বি সেনাবাহিনী তৈরি করতে চেয়েছিলেন। বাইরামবেকভ পুলিসের চাকরিতে থাকাকালীনও বিস্তর গণ্ডগোল করেছিলেন। দু’জন নিরপরাধকে হত্যা করার অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে ছিল।
বাইরামবেকভের ঘটনা রুশ মিডিয়ায় আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ২০০৮ থেকে রাশিয়ায় কালো জাদু বা অকাল্ট চর্চা দারুণ ভাবে বেড়ে গিয়েছে। জারতান্ত্রিক আমলের কুখ্যাত কালো জাদুকর গ্রিগরি রাসপুটিনের ভাবমূর্তিকে অনেক রাশিয়ানই উজ্জ্বল করতে চাইছেন।
রাসপুটিন-কথিত বহু গোলমেলে ক্রিয়াকেই রুশ জনগোষ্ঠীর একটা চোখে পড়ার মতো অংশ প্র্যাকটিস করেছেন বলে মস্কো পুলিশ-সূত্রে জানানো হয়েছে। ২০০৮-এই রাশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, ইসলামি সন্ত্রাসবাদের চাইতেও অনেক বেশি বিপদ এই অকাল্টিস্টদের নিয়ে। আপাতত সেদেশে প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ নিয়মিত ব্ল্যাক ম্যাজিক প্রাকটিস করেন। এই সেক্টরে প্রতিবছর ২৪ বিলিয়ন পাউন্ড পরিমাণ কালো টাকার লেনদেন হয় বলে জানিয়েছে এক বিশেষ সমীক্ষা।