খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করে সব কমিটি ভেঙে দেওয়ার ‘আলটিমেটাম’-কামরুল হাসান নামের এক ব্যক্তির
আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করে সব কমিটি ভেঙে দেওয়ার ‘আলটিমেটাম’ দিয়েছেন কামরুল হাসান নামের এক ব্যক্তি। তাঁর দাবি, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বাধীন বিএনপি অবৈধ। নিজেকে বিএনপির ক্রান্তিকালীন রাজনীতির মুখপাত্র দাবি করে তিনি ‘নবধারার কার্যত আসল বিএনপি’ ঘোষণা করেছেন।
আজ শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে কামরুল হাসান এসব কথা বলেন। এর আগে ৯ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে এই ব্যক্তি নতুন বিএনপি গড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
কামরুল হাসান নামের এই ব্যক্তির দাবি, তাঁরা জিয়াউর রহমানের আদর্শের মূল ধারার বিএনপি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন। আগামী ১৫ থেকে পরবর্তী ৪৫ দিনের মধ্যে ‘গ্রহণযোগ্য সব নেতাকে’ এই বিএনপিতে দেখা যাবে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশকে উচ্চ আয়ের রাষ্ট্র করার উদ্যোগ নেবে ‘নবধারার কার্যত আসল’ এই বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে কামরুল হাসান বলেন, ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে খালেদা জিয়া পদত্যাগ না করলে ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগরের এক হাজার ৭০০ জন নেতা-কর্মী নিয়ে খালেদা জিয়া যেখানেই থাকুন না কেন, শিষ্টাচার রেখেই তাঁর বরাবর পৌঁছানো ও অবৈধ নেতৃত্বের পরিসমাপ্তি নিশ্চিত করা হবে। একই সঙ্গে জিয়ার বিএনপিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। ৬ ফেব্রুয়ারি ‘উল্লেখযোগ্য পর্যায়ের’ তিনজন মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলন করবেন। এর আগে ৩০ জানুয়ারি রাজধানীতে একটি সমাবেশ করারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কামরুল বলেন, ‘এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অন্যায়ের প্রতিবাদসমূহের প্রেস বিবৃতি চলবে। ’
আজ বেলা ১১টা ১৭ মিনিটে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছিলেন কামরুল। ঠিক সময়ে ডায়াসে এসে তিনি বক্তব্য শুরু করেন। কামরুল বলেন, এর আগে কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম তাঁকে ‘জনৈক কামরুল হাসান’ বলে পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু তিনি একাধারে সাংবাদিক ও রাজনীতিক। এর আগে তিনি ‘গড়বো বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের মুখপাত্র ছিলেন। কৃষক দলেরও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তিনি। কৃষক দলের সদস্য হয়ে একা বিএনপির বর্তমান নেতৃত্বকে অবৈধ ঘোষণা করা গণতান্ত্রিক কি না বা সে ক্ষমতা তাঁর আছে কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কামরুল দাবি করেন, তিনি একা নন। সব পর্যায়ে তাঁর কথা হয়েছে। তিনি সামনে এসেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকও হচ্ছে। চমক থাকতে হবে। তাই কৌশলগত কারণে এখন সবার নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে বিএনপির কোনো নেতাকে সংবাদ সম্মেলনস্থল বা আশপাশে দেখা যায়নি।
কামরুল বলেন, বিএনপির অসুখ হয়েছে। তিনি একজন ওষুধওয়ালা। বিএনপির অসুখ সারাতে তাঁকে ডেকেছে কি না বা তিনি অযাচিত কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে কামরুল বলেন, ‘আমি অযাচিত চিকিৎসক হব কেন?’
দলের আয়ের উৎস জানতে চাইলে কামরুল বলেন, ‘এজেন্সি’ বা প্রধানমন্ত্রীর টাকায় তিনি আসেননি। তাঁর নেতা-কর্মী আছে। অর্থের উৎস তিনি নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন।
কামরুল দাবি করেন, বিএনপির নয়াপল্টন ও গুলশান কার্যালয় তাঁদের। এখন গুলশান কার্যালয় মহিলা দলের আয়ত্তে। তাহলে নয়াপল্টন যাচ্ছেন না কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নয়াপল্টন যাওয়ার অ্যাবিলিটি আমার আছে। ওয়েইট, অধৈর্য হচ্ছেন কেন?’
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ‘অবৈধ’ দাবি করার পেছনে কিছু যুক্তিও তুলে ধরেন কামরুল। তিনি বলেন, বর্তমানে বিএনপি দলীয় গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে নেই। সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন দুজন ব্যক্তি। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে তৃণমূলকে নাশকতার পথ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। তারেক রহমান দেশকে তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত করছেন। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে হাজির-নাজির করে এগোচ্ছে বিএনপি। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি দেশের আস্তিক শক্তি, মৌল ও জঙ্গিবাদের মাধ্যমে অভ্যুত্থান করার নিয়তে রয়েছে।
নতুন ধারার বিএনপি কীভাবে এগোব, এরও একটি রূপরেখা তুলে ধরেন কামরুল।