• বুধবার , ২০ নভেম্বর ২০২৪

খালেদা ও জ্ঞানপাপিদের ধোলাই শেখ হাসিনার


প্রকাশিত: ১২:৫৭ এএম, ১০ জানুয়ারী ১৬ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৬ বার

hasina-www.jatirkhantha.com.bdএস রহমান:  খালেদা ও জ্ঞানপাপিদের ধোলাই দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে  বললেন, ‘জলাতঙ্ক হলে নাকি সবাইকে কুকুরের বাচ্চা দেখে। ওনার দৃষ্টিতে সবকিছু কুকুরময় হয়ে গেল কেন? ওনাকে কোন কুকুর কামড় দিল?’ ভোটারদের ‘কুকুর’ বলায় জনগণের কাছে তওবা ও ক্ষমা চাওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে খালেদা জিয়ার একটি বক্তব্যের সূত্র ধরে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।শেখ হাসিনা বিএনপির চেয়ারপারসনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘উনি বলেছেন, ওখানে (ভোটকেন্দ্রে) নাকি পুলিশ ছিল আর কুকুর ছিল।

আরে ওখানে তো ভোটিং অফিসার ছিল, সাংবাদিক ছিল, ভোটার ছিল। সাধারণ মানুষ ভোট দিতে গেল, সবাইকে উনি কুকুর হিসেবে দেখলেন? এটা কোন ধরনের কথা যে ভোটারদের উনি কুকুর বললেন। এই যে ৪৩ ভাগ মানুষ ভোট দিল। ওনার দৃষ্টিতে সবাই কুকুর? মানে কত বড় অডাসিটি! কত বড় জঘন্য মনোবৃত্তি। মানবসন্তান ও ভোটারদের উনি কুকুর হিসেবে ডাকলেন।

এই জাতীয় নোংরা কথা, এই জাতীয় গালি এটা তাঁর মুখে সাজে।’ প্রসঙ্গত ৫ জানুয়ারি নয়াপল্টনে বিএনপির জনসভায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে কেউ যায়নি। ২০-দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ভোটকেন্দ্রে কুকুর শুয়ে ছিল। ভোট দিলে কুকুরই দিয়েছে, মানুষ ভোট দেয়নি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার জন্য খালেদা জিয়ার বিচার হওয়া উচিত। না হলে ভবিষ্যতে মানুষের ভাগ্য নিয়ে আবার ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করতে থাকবেন।’সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা ১২৩ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এত বেতন-ভাতা পৃথিবীর কোনো দেশ বাড়াতে পারেনি। তবে এটা ঠিক পেটে যখন ক্ষুধা থাকে, তখন সামান্য দিলেই সবাই সন্তুষ্ট হয়।

আর যখন ক্ষুধার জ্বালা দূর হয়ে যায় এবং বেশি প্রাচুর্য পেয়ে যায়, তখন আবার প্রেস্টিজ-আরাম-আয়েশ, সম্মান, পদায়ন নানা কথা স্মরণে আসে। বোধ হয় একটু বেশি বাড়িয়ে ফেলছি বেতনটা। সে জন্য এখন প্রেস্টিজ নিয়ে টানাটানি। আর একটু ক্ষুধা থাকলে প্রেস্টিজের কথা মনে হতো না। ক্ষুধার অন্ন জোগানোর কথা মনে হতো।

এত কিছু দেওয়ার পরও কোনো কোনো মহলে তৃপ্তি কেন হলো না, এটা আমার বোধগম্য না। যে যেখানে যায়, সেখানে তো নীতিমালা মেনেই যায়, দেখেই যায়। তাদের তো একটা ডিসিপ্লিন মেনে চলতে হবে। সেই ডিসিপ্লিন ভঙ্গ করবেন; কোন পদ, কার সঙ্গে কার তুলনা! যে তুলনা হয় না। যে তুলনা করা মানে নিজেদের ছোট করা। সব জায়গায় দেখি—ক্ষুদ্র একটা গোষ্ঠী।’

মেট্রোরেল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের করা আন্দোলনের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের অ্যালাইনমেন্ট তো আজকের না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র ও কর্মচারীদের কথা চিন্তা করেই এই অ্যালাইনমেন্টটা দিলাম যে, সেখানে একটা স্টেশন হবে; ওই উত্তরা থেকে মাত্র ১০ মিনিটে চলে আসবে। অর্থাৎ দ্রুত চলে আসতে পারবে।

এই অ্যালাইনমেন্ট এক দিনের না। সেখানে সয়েল টেস্ট হয়ে গেছে। অ্যালাইনমেন্ট হয়ে গেছে। কত বছর লাগল এটা আমাদের করতে। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কিন্তু কথাও হয়েছে। আলোচনা না করে করা হয়েছে, তা কিন্তু না। হঠাৎ দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র-শিক্ষক আন্দোলনে নেমে গেল। তাদের নাকি পরিবেশ নষ্ট হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে তো রেললাইনই আছে। লাইব্রেরিতে নাকি পড়াশোনা হবে না। আমরা তো ডিজিটাল লাইব্রেরি করে দিচ্ছি—সাউন্ড প্রুফ। কোনো অসুবিধা হবে না। মেট্রোরেল তো আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন। যেখানে বসতি আছে, সেখানে সাউন্ড সিস্টেম কন্ট্রোল করার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। সেটা সম্পর্কে তাদের জ্ঞান নাই। সেই খবরটাও তারা রাখেনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই প্রজেক্ট আমরা শুরু করেছি—সেটা বাধাগ্রস্ত করা মানে সেটার কাজ সেখানে মুখ থুবড়ে পড়বে। যাদের কাছ থেকে আমরা অর্থ ধার নিচ্ছি, তারা অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দেবে। আর উন্নয়নটা হবে না। এই উন্নয়নটা বন্ধ করা উদ্দেশ্য কি না। কারণ যে ছাত্র-ছাত্রীরা বলছেন লেখাপড়া করতে পারবেন না; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তো এত ছোট জায়গা না। এটা যেখান দিয়ে যাচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান-বাংলা একাডেমি হয়ে চলে যাবে। এখানে পড়াশোনার ক্ষতিটা কী করে হবে।

পড়ার ইচ্ছা থাকলে ওই ট্রেনে চলতে চলতেও মানুষ পড়ে। বাসে বসে পড়ে, গাড়িতে বসে পড়ে। পড়ে না? তারা যেখানে বসবাস করে তার আশপাশে দিনরাত যে কনস্ট্রাকশনের কাজ হচ্ছে। তখন পড়ছে না বাড়িতে বসে। কই তারা গিয়ে ওই বাড়ির কনস্ট্রাকশনের কাজ বন্ধ করতে পারছে? তা তো বন্ধ করছে না।’ তিনি বলেন, হানিফ ফ্লাইওভার আরও বড় করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি বাধা দিল। তো এ রকম যদি উন্নয়ন কাজে বাধা দেওয়া হয়। তো উন্নয়ন হবে কোথা থেকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরে পড়ার যদি ইচ্ছা থাকে সুযোগ করে নেওয়া যায়। আর ইচ্ছা না থাকে তাহলে অনেক ছুঁতো পাওয়া যায়।’ প্রধানমন্ত্রী পড়াশোনার করা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘যদি আওয়াজে এতই সমস্যা হয়, তাহলে কানের মধ্যে প্লাগ লাগিয়ে নেবে, তাতে অসুবিধা নাই। কারণ এমনিতেই তো আইপ্যাডে গান শোনে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়নের কাজে দয়া করে কেউ বাধা দেবেন না। কার কী অসুবিধা আমরা বুঝি, সে ব্যবস্থা আমরা নেব। আধুনিক প্রযুক্তি, সাউন্ড প্রুফ করা যাবে। এটা কোনো সমস্যা না। এইগুলি করতে গেলে পুরো প্রজেক্ট নষ্ট হবে এবং সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হবে। যারা ইউনিভার্সিটি পড়বেন তাঁরা তো দু-চার বছর পড়ে চলে যাবেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের যে কষ্টটা, সেটা তো থেকে যাবে। সেই কষ্ট বা ভোগান্তিটা মানুষকে কেন দেবেন?’