• শনিবার , ২৩ নভেম্বর ২০২৪

খলনায়কদের বাড়াবাড়ি-সাংবাদিকদের মেরে রক্তারক্তি


প্রকাশিত: ১১:৫৬ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২৪ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৬৬ বার

 

 

বিনোদন রিপোর্টার : একি করলেন খলনায়করা! সামান্য ঘটনা নিয়ে হাতাহাতি আর মারামারি করে বসলেন সাংবাদিকদের। শুধু মার নয় রীতিমত রক্তারক্তি করে এফডিসি এলাকা করে ফেললেন রণক্ষেত্র! প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিকদের মারধরের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে শপথগ্রহণ শেষে নির্বাচিত সদস্যদের ইন্ধনে উপস্থিত সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক আহত হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ১০-১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।সাংবাদিকরা ক্যামেরা, মোবাইলসহ প্রয়োজনী যন্ত্রাংশ খুইয়েছেন। আজ বিকেলে এফডিসিতে সংগঠনটির নবনির্বাচিত কমিটির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পরপরই এমন অপ্রত্যাশিত ও ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে জানা গেছে, শপথগ্রহণ শেষে সমিতির অফিসে খবরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক মিথুন আল মামুন সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন ময়ূরীর মেয়ের। এ সময় অভিনেতা শিবা শানু ওই সাংবাদিককে বেরিয়ে যেতে বলেন। তিনি না যেতে চাইলে তাঁকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে অফিস থেকে বের করে দেন শানু।

এর মধ্যে সেটি থামাতে এগিয়ে আসেন উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরা। এ সময় সমিতির আরেক নেতা জয় চৌধুরী ‘মার মার’ বলে তেড়ে যান সাংবাদিকদের দিকে। শুরু হয় সাংবাদিক ও শিল্পীদের মধ্যে তুমুল মারামারি। এর পরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুরো এফডিসি পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। মারামারিতে রীতিমতো রক্তাক্ত হন কয়েকজন সংবাদকর্মী।

বিষয়টি নিয়ে এখনো পর্যন্ত শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন এর পক্ষ থেকে সংগঠনের সদ্য সভাপতি মিশা সওদাগর ও সেক্রেটারি মনোয়ার হোসেন ডিপজলের মোবাইলে বেশ কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

উল্লেখ্য, এর আগে বিকেল ৫টার দিকে অনুষ্ঠিত হয় সমিতির শপথগ্রহণ। শুরুতে নবনির্বাচিত সভাপতি মিশা সওদাগরকে শপথবাক্য পাঠ করান চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ। এরপর অন্যদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন মিশা। এ সময় নির্বাচিত সদস্যরা ছাড়াও সিনেমা অঙ্গনের আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক খবরের কাগজের বিনোদন প্রতিবেদক মিঠুন আল মামুন জানান, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এফডিসির বাগানের সামনে তিনিসহ তার ক্যামেরাপারসন আরমান নায়িকা ময়ূরীর সাক্ষাৎকারের জন্য যান। সেখানে গেলে খল অভিনেতা জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) নেতা শিবা সানু মদ্যপ অবস্থায় মামুনের কাছে জানতে চান তিনি নায়িকা ময়ূরীকে চিনেন কি-না?

মামুন জানান, ‘‌তিনি ময়ূরীকে চেনেন।’ এ কথা বলার পর শিবা সানু মামুন ও আরমানকে বলেন যে, তারা এখান থেকে যাতে দ্রুত চলে যান। মামুন শিবা সানুর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বুঝে বলেন যে, ঠিক আছে তারা চলে যাচ্ছেন। এ সময় নিউজ টুয়েন্টিফোরের এক ক্যামেরাম্যান শিবা সানুর এমন কথার প্রতিবাদ জানান। তারা এখানে পেশাগত কাজে এসেছেন বলে জানান।

এ কথা শোনার পর শিবা সানু আরও ক্ষেপে যান। এ সময় তিনি উপস্থিত সবাইকে মারধর করা শুরু করেন। এ সময় কিছু দূরে থাকা কথিত নায়ক জয় চৌধুরী ও আলেক জান্ডার বো এসে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেন। পরে এফডিসিতে থাকা অন্যান্য লোকজন সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালান। হামলায় এফডিসির ফাইট ডিরেক্টররাও অংশ নেন।মিঠুন আল মামুন বলেন, ‘আমাদের একটি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে এবং আমার মোবাইল ফোন হারিয়ে গেছে।’

এফডিসি সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় প্রযোজক আরশাদ আদনানকে প্রধান করে ১১ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে ৫ জন সাংবাদিক ও ৫ জন শিল্পী আছেন। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়াসহ ৫ দফা দাবি করেছেন আহত সাংবাদিকদের সহকর্মীরা।

এর আগে গত ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজল নির্বাচিত হন। তাঁরা পর্দায় বিগত কয়েক দশক ধরে খলনায়কের অভিনয় করছেন।