‘ক্ষমতাহীন রাজনৈতিক পুতুল’
ভারতে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ‘ক্ষমতাহীন রাজনৈতিক পুতুল’। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আছেন বটে। কিন্তু কর্তৃত্ব কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর হাতে।
নতুন একটি বইয়ে এমন দাবিই করা হয়েছে। দি অ্যাকসিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার নামের বইটির লেখক সঞ্জয় বারু। তিনি মনমোহন সিংয়ের গণমাধ্যমবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা ছিলেন। মনমোহনের প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রথম দফায় তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।
সঞ্জয় বারু লিখেছেন, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিজয়কে নিজের সাফল্য বলে ধরে নিয়েছিলেন মনমোহন। এরপর তিনি ভেবেছিলেন নিজের মতো করে মন্ত্রিসভা সাজাবেন। কিন্তু তাঁর এ ভুল ভাঙতে সময় লাগেনি। মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নিজের ক্ষমতাহীনতার বিষয়টিও তাঁর কাছে পরিষ্কার হয়ে ওঠে। তিনি দেখতে পান, তাঁর সঙ্গে পরামর্শ না করেই প্রণব মুখার্জিকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেন সোনিয়া।
লেখকের দাবি, প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের ইচ্ছা ছিল অর্থনীতিবিষয়ক তাঁর প্রধান উপদেষ্টা সি রাঙারাজনকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেবেন। কিন্তু সোনিয়া গান্ধী তাঁর সে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেন।
বইটিতে আরও বলা হয়, মনমোহনের প্রধান সচিব পুলক চট্টোপাধ্যায় নিয়মিতই সোনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করতেন। গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে মনমোহনের সই করার জন্য সোনিয়ার নির্দেশনা মেনে চলতেন পুলক। সোনিয়ার খবরদারি এত বেশি ছিল যে একসময় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন বুঝতে পারেন মন্ত্রিসভার ওপর তাঁর কর্তৃত্ব সামান্যই। যেকোনো ক্ষেত্রে সোনিয়ার মতই চূড়ান্ত বলে গণ্য হতো। এ কারণেই মনমোহনকে প্রায়ই অরুণ সিং ও এ কে অ্যান্টনির মতো কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়।
বইটির লেখকের দাবি অনুযায়ী, কংগ্রেসের এমপিরা প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের প্রতি আনুগত্য দেখানোর প্রয়োজন বোধ করতেন না। তাঁরা বরং সোনিয়া ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের প্রতি অনুগত থাকতেন। মনমোহন বছরের পর বছর মুখ বুজে সব সহ্য করেছেন। কংগ্রেসের সভানেত্রী ও তাঁর মিত্রদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।