• বৃহস্পতিবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ক্ষমতার ক্ষুধায় মত্ত বিএনপি


প্রকাশিত: ১:৩৬ এএম, ২৮ অক্টোবর ২৩ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩২ বার


স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ মনে করে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকার পাশাপাশি সতর্ক থাকাও আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির এখন ক্ষমতার ক্ষুধা। ক্ষুধার আগুন মেটাতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে সবাইকে এক হয়ে অপশক্তিকে হারাতে হবে, মাঠে থাকতে হবে। রাজপথে থাকতে হবে।

শুক্রবার বিকেল চারটায় ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
কাদের বলেন, পুলিশ অনুমতি দিলেই সমাবেশের মঞ্চের কাজ শুরু হবে। বিএনপির মিথ্যা অভিযোগের কারণে আওয়ামী লীগের মঞ্চ তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগ চাপে নেই। তবে জনগণ আগুন সন্ত্রাসের শঙ্কায় আছে।

সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ব্যবহার করে বিএনপির অপকর্ম করার দুরভিসন্ধি আছে এমন সতর্কতা উচ্চারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শনিবার যারা আসবেন, তাদের দ্বায়িত্ব শেষ হয়ে গেলেও সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। এটা বাংলাদেশের আরেক মুক্তিযুদ্ধ মনে করেই মাঠে থাকে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ভীত নয়, তবে জনগণ আগুনে সন্ত্রাস নিয়ে শংকায় আছে।বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি-জামায়াতর অশুভ শক্তির নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি মহল ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি বাংলাদেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে তৈরি করেছে। বিএনপির এখন ক্ষমতার ক্ষুধা। ক্ষুধার আগুন মেটাতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। যারা গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায় তারাই বাংলাদেশকে পাকিস্তানি রাষ্ট্রের কায়দায় চালানোর ষড়যন্ত্র করেছে।

এই অপশক্তির সাথে আপোষ করার সুযোগ নেই মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে তা মোকাবিলা করতেই হবে। বিএনপি শুধু জানে উন্নয়ন ও অর্জনকে হিংসা করছে। তারা বুঝতে পেরেছে, জনগণের ভোটে শেখ হাসিনাকে পরাজিত করা সম্ভব নয়। তাই বিএনপি সন্ত্রাসের পথে এগিয়ে গেছে আবারও।

তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অপশক্তিকে পরাজিত করতে হবে। মাঠে থাকতে হবে। রাজপথে থাকতে হবে। আগামীকালের (শনিবার) শান্তির সমাবেশে কোন অশান্তি চাই না। আমাদের দ্বারা কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে না। যারা নির্বাচন চায় না তারাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় । সতর্ক থাকা প্রয়োজন। শনিবার শান্তির সমাবেশ সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ২২ জনের তালিকা সামনে এনেছে, যেখানে খুনের আসামিও আছে। অথচ বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগের ২২ হাজার কর্মীর রক্তের বন্যা বইয়েছেন। জনগণ আজ আতঙ্কিত নানা হুমকি ধামকিতে। আবার হয়তো ২০১৪ সালের মতো আগুন সন্ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি করবে বিএনপি। যে কোনো উপায়ে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের প্রতিহত করতে হবে।

ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সব খেলা ধরা পরে যায়, এমন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমাদের বিদেশি বন্ধুদের কাছে আমাদেরকে অপমান করেছে। আমাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য যদি জীবন দিতে হয়, তারপরেও আমরা পথ ছাড়বো না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শান্তি সমাবেশ করে দেখিয়ে দেবো, আমরা অশান্তির বিরুদ্ধে।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচন চাই শান্তিপূর্ণ। কাজেই অশান্তি আমরা করতে চাই না। আজকে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিক সে সময় যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চান না, যারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় যারা নিয়ে যেতে চায়, তারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।

সংবাদ সম্মেলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপি নেতাদের আস্ফালন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে স্থায়ী করেছিলাম। আর বিএনপি তা বিতর্কিত করেছে। ২০০১ সালে এবং ২০০৬ সালে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বিতর্কিত করেছে। সংবিধানকে কচুকাটা করেছে বিএনপি। মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জনকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে বিএনপি।

তিনি আরও বলেন, তাদের কার্যকলাপ, তাদের মুখের ভাষা, প্রধানমন্ত্রীকে কবরস্থানে পাঠানোর ঘোষণা দেয় তারা, যে দল ‘৭৫-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার- শ্লোগান দেয়, তারা কখনও দেশের উন্নয়ন চাইতে পারে না। তাই এই অপশক্তিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া যাবে না। এই অপশক্তিকে চিরতরে অবসান করতে হবে। এ জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হবে, রাজপথে থাকতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো ভয় নেই। কিন্তু মানুষ তাদের ভয় পাচ্ছে। কারণ তারা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। মানুষ তাই মনে করছে, আবার ২০১৪ সালের মতো তারা (বিএনপি নেতা-কর্মী) নাশকতা করবে কিনা। সেজন্য আমরা বলতে চাই, আওয়ামী লীগ নেতারা বেঁচে থাকতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিসর্জন দিতে দেবো না। তাই তাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিজ্ঞা, আমরা তাদেরকে প্রতিহত করবো।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা কখন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন? বড় বড় কথা বলবেন না। তালিকাটা তৈরি করেন। তারা ডাহা মিথ্যা কথা সাজাচ্ছে। ফখরুল আজকে ডাহা মিথ্যাচার করেছে, তিনি বলেছেন, বিএনপিকে নাকি মঞ্চ তৈরি করতে দেয়া হয় না। আপনারা আসেন, দেখে যান। বিএনপি বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে চায়।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান, শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজমসহ আরও অনেকে।