• বুধবার , ২০ নভেম্বর ২০২৪

ক্রোড়পতি শ্যামলের ইয়াবা ফ্যাক্টরী


প্রকাশিত: ৮:৪২ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ১৭ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৭ বার

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : এবার ইয়াবা’র কারখানা মিললো চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার বেপারীপাড়া কমিশনার গলিতে। এই কারখানার মালিক শ্যামল ইয়াবা বিক্রি করে কোটিপতি ctg-yaba-www.jatirkhantha.com.bdবনেছে।  বুধবার দুপুর ২টায় চট্টগ্রাম মহানগরীর লালদিঘীর পাড়ে অবস্থিত নগর গোয়েন্দা পুলিশের দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য উপস্থাপন করেন মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) এএএম হুমায়ুন কবির।

পুলিশ জানায়, শ্যামলের প্রস্তুত করা ইয়াবা দেশজুড়ে বিক্রি করেছে আমান। আর সেই আমান ও শ্যামলসহ চারজন মঙ্গলবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ধরা পড়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানার বেপারীপাড়া কমিশনার গলির আবুল হোসেন সওদাগরের একটি ফ্ল্যাট থেকে। সেই সাথে ধরা পড়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও ইয়াবা তৈরীর নানা উপকরণ। গোয়েন্দা পুলিশের দাবি এটিই হচ্ছে চট্টগ্রামে ধরা পড়া প্রথম ইয়াবা কারখানা। ইয়াবা তৈরি থেকে বাজারজাত সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতো ওই বহুতল ভবন থেকেই।

গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন বেপারীপাড়া কমিশনার গলির আবুল হোসেন সওদাগরের ৫ম তলা বিল্ডিংয়ের ৩য় তলার মধ্যম ফ্ল্যাটে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবা তৈরির ২টি মেশিন এবং আড়াই লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শ্যামল মজুমদার (৩৭), আব্দুল্লাহ আল আমান ওরফে আমান (৩৪), মো. মামুন হোসেন ওরফে মামুন (৩২) ও আয়শা সিদ্দিকা (২৭) নামে এক নারী। মামুন ও আয়শা সিদ্দিকা এই কারখানায় ইয়াবা তৈরীর কাজ করেন। এদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালত বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে নেতৃত্ব দেন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) এএএম হুমায়ুন কবির। তার সঙ্গে সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম), পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মহসীন, পিপিএম, পুলিশ পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান, এসআই আব্দুর রব, এএসআই বাপ্পু সেন, এএসআই আলী হোসেন ও সঙ্গীয় ফোর্স অংশ নেন। উপ-পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবির বলেন, অনেকদিন আগে থেকেই আমরা এই ইয়াবা তৈরীর কারখানার সন্ধান পেয়েছি। ইয়াবা কারখানাটির উপর নজরদারি করেছি সতর্কভাবে।

সবকিছু আয়ত্তে আসার পর মঙ্গলবার রাতে  মূল অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানে ফ্ল্যাটটি থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, তিনটি সাদা প্লাষ্টিকের বস্তায় পলিথিনে মোড়ানো লাল গোলাপী রংয়ের ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির কাঁচামাল (এ্যামফিটামিনযুক্ত পাউডার), তিনটি সাদা প্লাষ্টিকের বস্তায় পলিথিনে মোড়ানো সাদা রংয়ের ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির পাউডার, ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির লোহার মেশিন দুটি, ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির স্টিলের ডাইস চারটি (একটির উপর ইংরেজীতে জ এবং একটির উপর ইংরেজীতে ডণ খোদাই করা), লোহার তৈরি প্রেশার মেশিন দুটি, ডিজিটাল স্কেল একটি, একটি সাদা জারে ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির কাজে ব্যবহৃত চার লিটার তরল গোলাপী রং পাওয়া যায়।

উদ্ধারকৃত মালামাল দিয়ে তারা প্রতিদিন ৩ হাজার পিস ইয়াবা তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতো। উদ্ধারকৃত ইয়াবা তৈরির উপকরণ দিয়ে আরও ১০ লাখ টাকার ইয়াবা তৈরি করতে পারতো বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. কামরুজ্জামান। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি শ্যামল, মামুন ও আয়শা সিদ্দিকা ইয়াবা তৈরির কারিগর বলে স্বীকার করেন। তারা স্থানীয় বাজার হতে ইয়াবা তৈরীর বিভিন্ন কাঁচামাল সংগ্রহ করে মেশিনের মাধ্যমে ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরি করে অপর আসামি আমান এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় করত। মূলত আমানই দেশজুড়ে ছড়িয়েছে শ্যামলের তৈরি ইয়াবা।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে নগরীর ডবলমুরিং থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালত বিভিন্ন মেয়াদে প্রত্যেকের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. কামরুজ্জামান। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. সফি উদ্দিন আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ডে আবেদনের প্রেক্ষিতে নারী ইয়াবা কারিগর আয়শা সিদ্দিকার ২ দিন, বাকিদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।