ক্রিকেটার আশরাফুল’ও প্রভার প্রেমে ঘুরঘুর করত-রাজিব
দিনা করিম : প্রভার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার পর দীর্ঘদিন এই বিষয়ে একদম চুপ ছিলেন প্রভার একসময়ের আলোচিত প্রেমিক রাজীব। প্রভার দ্বিতীয় বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর নতুন করে মুখ খুলতে শুরু করেছেন তিনি। ফাটাচ্ছেন একেরপর এক বোমা। তিনি দাবী করেন ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল প্রভার সাথে প্রেম করার জন্য দীর্ঘদিন তার পেছনে ঘুরঘুর করেছে।
সম্প্রতি তিনি একটি ব্লগে তার এবং প্রভার সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে লিখেছেন বেশ চমকপ্রদ একটি লেখা। সেখানে রাজীব প্রভার সাথে তার সম্পর্কের এমন সব ব্যাপার নিয়ে কথা বলেছেন, যা জানলে অবাক হতে হয়। সেখানে প্রভার সাথে তার শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে যেমন খোলাখুলি লিখেছেন, তেমনি লিখেছেন কারা প্রভাকে পাওয়ার জন্য ঘুরঘুর করত।
পড়ে নিন রাজীবের সেই বোমা ফাটানো লেখাটি:- প্রেম। এ এক অদ্ভূত মায়াজাল। যে এই জালে জড়িয়েছে, তার যেমন আফসোসের শেষ নেই, তেমনি যে জড়ায়নি, তারও আফসোসের শেষ নেই। স্কুল বেলায় রসায়নে জারণ বিজারণ পড়েছিলাম।
জারণ মানে ছারণ, আর বিজারণ হইলো গ্রহণ। প্রেমটাও ঠিক তেমনি। এখানে জারণ বিজারণের মত সবকিছুই যুগপৎ ঘটে। কেউ ছারে, আর কেউ সেইটা ধরে। কেউ এই জারণ বিজারণ করলে লোকে লীলাখেলা বলে, কেউ বা করলে বলে পাপ। আমিও এই মায়া থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারি নি।
জারণ-বিজারণ খেলায় মেতেছিলাম এক রমণীর সাথে। হ্যাঁ। তার নাম প্রভা, সাদিয়া জাহান প্রভা। তার সম্পর্কে আশা করি আর কোন ভূমিকা না দিলেও চলবে। আপনারা সবাই তাকে নিয়ে নিজেদের মত করে ভূমিকা এতক্ষণে বানিয়ে নিয়েছেন, তা আমি জানি। কিন্তু তাকে যে আমি কতটা ভালোবাসি, তা আপনারা জানেন না। তা জানার ক্ষমতা আপনাদের নেই। আপনারা আমাদের পবিত্র প্রেমকে কালিমালিপ্ত করেছেন। আপনাদের আমি ধিক্কার জানাই।
আজ বড় দুঃখ নিয়ে এই লেখাটা লেখতে বসলাম। অনেক জায়গায়ই এই লেখাটা দিতে চেয়েছি, কিন্তু কেউ নিতে চায় না। সবাই বলে আপনি নষ্ট লোক, আপনি প্রভার এক্স। যা বলছিলাম। প্রভার সাথে আমার জারণ বিজারণটা হয়েছিল একদম সোডিয়াম এর সাথে ক্লোরিনের মত! প্রভা ইলেক্ট্রন ছাড়ার আগেই আমি ধরার জন্য ঘুরঘুর করছিলাম! ছাড়ামাত্রই ধরে ফেলেছিলাম!
তাইতো আমাদের বন্ধন হয়েছিল পুরাই আয়নিক। কিন্তু আমাদের এই বন্ধন কারোই সহ্য হয় নি। কারণ প্রভার মত লক্ষী, সুন্দরী, স্বামীর প্রতি অনুগত, মোটকথা আদর্শ একটা মেয়ের উপর অনেকেরই কুনজর পড়েছিল। মোহাম্মদ আশরাফুল থেকে শুরু করে অনেকেই তার পিছনে লাইন মারা শুরু করেছিল। তবে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় হারামজাদা ছিল অপূর্ব।
নীরব, ইমন আর শাকিব খানের ভীড়ে বাংলাদেশে যে এখনো অপূর্বর মত হি– টিকে আছে, আমার জানা ছিল না। এই শা– ধ্–ভংগ অপূর্ব প্রায়ই আমার বাসার আশপাশে ঘুর ঘুর করতো। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, আমার অন্যতম প্রিয় হবি ভিডিও এডিটিং।
আমি আর প্রভা সারাদিন ঘুরতাম, খেলতাম, ওগুলো ভিডিও করে আমি রেগুলার এডিট করে আমার কম্পিউটারে রেখে দিতাম। একদিন প্রভার সাথে খেলতে খেলতে এতই টায়ার্ড হয়ে গিয়েছিলাম যে খেলার ভিডিওগুলো এডিট করতে করতে চেয়ারে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙ্গে দেখি রুমের দরজা খোলা। মোবাইলে প্রায় ৫হাজারের মত মিসকল। দেখে তো আমার মাথায় হাত। কী এমন হলো? ঠিক এমন সময়েই আবার মোবাইলে ফোন এলো। হাতে নিয়ে দেখি প্রভা।
ফোন ধরতেই ও ক্ষিপ্ত গলায় বললো, রাজীব, আমি তোমার কী ক্ষতি করেছিলাম? তুমি কীভাবে আমার সাথে এমন করতে পারলে? তুমি যখন আমাকে লিসা অ্যান আর অ্যালেক্সিস টেক্সাস বলে ডাকতে, তখন আমার সত্যিই অনেক ভালো লাগতো। কিন্তু আমি ভাবতেও পারিনি রাজীব, তুমি আমাকে সত্যিই লিসা অ্যান বানিয়ে ফেলবে।
আমাকে তুমি শেষ করে দিয়েছো রাজীব। I hate you. বলেই ফোন কেটে দিল প্রভা। আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না। কী করলাম আমি?? চোখ ডলতে ডলতে ফেসবুকে ঢুকলাম। দেখি প্রায় হাজার খানেক নোটিফিকেশন। সবাই শুধু ছিঃ ছিঃ লিখে রেখেছে। কী এমন হলো আজ? সবাই ছিঃ ছিঃ করছে কেন? এমন সময়ে দেখি ইনবক্সে একটি আনরিড মেসেজ। খুলে দেখি অপূর্ব পাঠিয়েছে।
একটা লিঙ্ক। ক্লিক করেই তো আমার চক্ষু চড়কগাছ! হারামজাদা করসে কি? বুঝতে পারলাম, আমি যখন গভীর ঘুমে মগ্ন, তখন এই অপূর্ব হারামজাদাই আমার রুমে ঢুকে এই আকাম করসে।
আমি পুরাই বিধ্বস্ত হয়ে গেলাম। এক ধাক্কায় আমার সাজানো সংসার ভেঙ্গে গেলো। আমার বড়বেলার খেলার সাথী প্রভা আমাকে ছেড়ে চলে গেলো! যাবি ভালো কথা, গিয়ে বিয়ে করলো ঐ হি–অপূর্ব কে! কেমন লাগে বলুন? তাদের রংঢং দেখে আমার পিত্তি জ্বলে যায়। মুন্নী সাহার অনুষ্ঠানে দুজন হাত ধরে সেকি পিরিত! একদম যেন লাইলী-মজনু! –র ব্যাটা, আমার লগে পাংগা লস? দাঁড়া, দেখাবো মজা।
বসে বসে আমাদের খেলার সব ভিডিও দিলাম নেটে ছেড়ে! আর যায় কোথায়! বাংলাদেশে এক মুহূর্তের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম হয়ে গেল প্রভা! সবার হাতে হাতে মুখে মুখে শুধু একটাই নাম! সারা দেশ যেন “প্রভা”বিত! সবচেয়ে মজা পেলাম অপূর্বর চেহারার দিকে তাকিয়ে! এমনিতেই বউয়ের এই কীর্তি নিয়ে তার দুঃখের শেষ নাই।
তার উপর প্রভার সাথে খেলতে নামসে! আমার মত প্লেয়ারই যেখানে ব্যাট ধরার আগে বেশির ভাগ সময় আউট হয়ে যেতাম, সেখানে তোর মত হি–খেলবো প্রভার লগে?? গায়ের রঙ ক্রিস গেইলের মত হইলেই তুমি ক্রিস গেইলের মত প্লেয়ার না, ঠিকাসে ভাআআআআআআ???
অবশেষে যা হওয়ার, তাই হলো! আমি তো তাও আউট হতাম, অপূর্ব খেলতে নেমেই রিটায়ার্ড হার্ট। প্রভার মত মেয়ের কি আর এইসব হি– দিয়ে চলে? তাই অবধারিতভাবেই তাদের ডিভোর্স হতে বেশিদিন অপেক্ষা করা লাগলো না।
আমিও অপূর্বকে ওরই আপ্লোড করা ভিডিওর লিঙ্ক পাঠাতে থাকলাম। আসতে আসতে সব কিছুই স্বাভাবিক হয়ে এলো। আমিও প্রভাকে ভুলে গেলাম। আজ হঠাৎ করেই আবার প্রভার কথা মনে পড়ে গেলো। কারণ আজ খবরের ওয়েবসাইটে দেখলাম বেশ ফলাও করে নিউজ বেড়িয়েছে, আবারও বিয়ের পিঁড়িতে প্রভা। খবরটা শুনে ভালো লাগলো। যাক, মেয়েটা তাহলে আসলেই একটুও বদলায় নি।
এখনো আগের মতই ক্ষুধার্ত রয়ে গেছে। তবে তার নতুন খেলার সাথীকে দেখে কিঞ্চিৎ আশাহত হলাম। কেননা এই শালারও গায়ের রঙ ক্রিস গেইলের মত হলেও চেহারা পুরাই নিখিল বাংলাদেশ টেম্পু হেল্পার সমিতির সভাপতি এবং বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের “গতিদানব” রুবেল হোসেনের মত।
এই বা কতদিন খেলতে পারে, দেখার বিষয়। প্রভা দেখলাম এই চামচিকাকে নিয়ে বেশ খুশি। বাংলানিউজ কে বলেছে, নামে শান্ত, কাজেও নাকি শান্ত, চুপচাপ। আমাকে তুমি হাসালে প্রভা।
তোমার মত মেয়েকে যেখানে সুনামির পক্ষেও ঠান্ডা করা সম্ভব না, সেখানে এই শান্তকে নিয়েই তোমার এত প্রশংসা? এই শান্ত গাধাটাও দেখি আবার প্রভাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত।