ক্যাচ মিস তো ম্যাচ-এমনতো কথা ছিল না..সাকিবদের
আসমা খন্দকার : ক্রিকেটের কথায় আছে ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস..।শেষমেশ ওই ক্যাচটা বাংলাদেশকে সর্বনাশে ফেলে দেয় কিনা (আল্লা না করুক) সেটার অপেক্ষা ‘য় থাকতে হচ্ছে।যদিও ইতিমধ্যে ৫ উইকেট চলে গেছে।কিন্তু এমনতো কথা ছিল না..সাকিবদের।
একপাশে যাওয়া আসার ছোটখাটো মিছিল। একে একে দেউটি নেভার মতো নিভে গেলেন ধাওয়ান, কোহলি, রায়না। একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন যিনি সেই রোহিত শর্মার ব্যাটিং-দীপেও দমকা বাতাস লাগাল তাসকিন-ঝড়। কিন্তু নিভতে নিভতে নিভল না। পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা সাকিব হাতে এসে পড়া বলটা রাখতে পারলেন না!
রোহিত স্টিভ ওয়াহ নন, ম্যাচেরও এখন ঢের বাকি। না হলে হয়তো বলাই যেত, ‘ম্যাচটাই তো ফেলে দিলে বাছা!’
২১ রানে ফেরার কথা ছিল যাঁর, সেই রোহিত ফিফটি পার করে সেঞ্চুরিই করে ফেলছিলেন প্রায়। ২৮ বলে ২১ করে ফেরার কথা যাঁর, সেই তিনি শেষ পর্যন্ত ৫৫ বলে ৮৩ করে ফিরলেন।
চাপে হাঁসফাঁস করতে থাকা ভারতের ৫২ রানে চার উইকেট হারিয়ে আরও কোণঠাসা হওয়ার কথা ছিল। সেই তারাই চাপটা পুরো চালান করে দিল বাংলাদেশের ওপর। ভারত শেষ পর্যন্ত ১৬৭ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিল বাংলাদেশকে।
জিততে হলে বাংলাদেশকে তাদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড করতে হবে। বাংলাদেশ এরই মধ্যে ১৫ রানের মধ্যে হারিয়ে ফেলেছে দুই ওপেনারকে। সাকিবের ওই ক্যাচ ফেলাটাই না পোড়ায়!
সাকিব পরে বোলিংয়ে এসে যুবরাজ সিংয়ের উইকেটটি তুলে নিয়ে কিছুটা প্রায়শ্চিত্ত করেছেন বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু উল্টো বাংলাদেশের জন্য সেটিই পরে হয়ে গেছে ‘বর’-এ ‘শাপ’! যুবরাজের পর ব্যাটিংয়ে নেমে ১৮ বলে ৩১ করেছেন হার্দিক পান্ডিয়া, যুবরাজ যেখানে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের সেই ব্যাটিংটা মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন খুটখুট করে খেলে।
অথচ সব কিছুই ছিল বাংলাদেশের মুঠোয়। আগের দুই ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে একাদশ ওভারে ফেরা তাসকিন তৃতীয় বলেই পেতে পারতেন উইকেটটি। প্রথম দুই বলে সজোরে ব্যাট চালিয়েও লাগাতে পারেনি রোহিত। টানা দুটি ডট বলে ভারতীয় ওপেনারকে চাপে ফেলার পেয়েই গিয়েছিলেন।
সাকিব ক্যাচ ফেলার পর হতাশায় মাথা নাড়লেন, তাসকিন তখনো জানতেন না, বড় হতাশা অপেক্ষা করছে আরও পরে। ওই ওভারের চতুর্থ বলেই চার, পঞ্চম বলে ছক্কা, ষষ্ঠ বলে আবার চার! তাসকিন কেন, বাংলাদেশ তখনো জানত না, আরও বড় ঝড় আসছে সামনে।
এই ক্যাচ ফেলাটা কত বড় ভূমিকা রেখেছে ভারতের ইনিংসে? প্রথম ৬৩ বলে ৫২। পরের ৫৭ বলে ভারত তুলল ১১৪। ওই ক্যাচের আগে রান রেট যেখানে ছয়ের নিচে, পরের ৫৭ বলে সেটি গেল ১২তে! জীবন ফিরে পাওয়ার পর রোহিত ২৫ বলে করলেন ৬২। প্রথম দশ ওভারে মাত্র চারটি চার মারা ভারত, পরের দশ ওভার মারল ১১টি চার আর পাঁচটি ছক্কা!
অথচ তাসকিনের করা ইনিংসের প্রথম বলটা থেকেই বাংলাদেশ কী দুর্দান্ত শুরুটাই না করেছিল। দ্বিতীয় ওভারে আল-আমিন স্টাম্প উপড়ে ফেললেন শিখর ধাওয়ানের। মুস্তাফিজের তৈরি করা চাপ থেকে মুক্তি পেতে কোহলি যেন আত্মসমর্পণই করলেন মাশরাফির করা পঞ্চম ওভারে ক্যাচ তুলে দিয়ে। অষ্টম ওভারে রায়নাকে বোল্ড করে দিলেন পার্টটাইম স্পিনার মাহমুদউল্লাহ।
সবকিছু কেমন ভোজবাজির মতো বদলে যেতে থাকল একাদশ ওভারের তৃতীয় বলে রোহিত বেঁচে যাওয়ার পর। বদলে যাওয়ার ছবিটায় সবচেয়ে বড় চোখে বিঁধল মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ৪০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য! ভারতের বিপক্ষে এই প্রথম বোলিং করে উইকেট পেলেন না সেই আলোচিত তিন ওয়ানডের সিরিজে রেকর্ড ১৩ উইকেট নেওয়া এই পেসার! ওই একটা মাত্র ক্যাচ…ওই একটা মাত্র ক্যাচ…! ক্যাচ……………………..?