”কুলাঙ্গার লজিং মাষ্ঠার বদরুলের ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই”
সিলেট প্রতিনিধি : আদালতে জবানবন্দী শেষে বদরুলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে আজ। সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে শাবি ছাত্রলীগ নেতা বদরুল।বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর মুখ্য হাকিম শারাবান তহুরা বেলা আড়াইটা থেকে বিকাল সোয়া চারটা পর্যন্ত জবানবন্দী গ্রহণ করেন।
পৌনে দুই ঘন্টাব্যাপী স্বীকারোক্তি প্রদানকালে বদরুল আদালতকে জানায়, খাদিজার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের বাড়িতে লজিং থাকাকালে তার সঙ্গে এ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানজানি হওয়ার পর খাদিজার পরিবার তা মেনে নিতে পারেনি। আমাকে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।
পরবর্তীতে পারিবারিক চাপে খাদিজা আমাদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে। বারবার তাকে সম্পর্ক রাখার জন্য চাপ দিলেও সে পাত্তা দেয়নি। গত সোমবার পরীক্ষার খবর পেয়ে আমি খাদিজার সঙ্গে দেখা করতে এমসি কলেজে যাই। সেখানে গিয়ে খাদিজার সঙ্গে কথা বলে বুঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু খাদিজা আমাকে পাত্তা না দিয়ে উল্টো রূঢ় আচরণ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সঙ্গে থাকা চাপাতি দিয়ে খাদিজাকে কোপাতে থাকি।
জবানবন্দী শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।এদিকে জবানবন্দী চলাকালে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা কুলাঙ্গার লজিং মাষ্ঠার বদরুলের ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই শ্লোগান দেয।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার বিকালে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রী ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী নার্গিস বেগম খাদিজার (২৩) উপর হামলা চালায় শাহাজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক বদরুল আলম। এসময় সে চাপাতি দিয়ে খাদিজার শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপুরি কোপাতে থাকে। এতে খাদিজার মাথা ও পায়ে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার মাথায় অস্ত্রপচার করে সেলাই দেয়া হয়।
পরে তার অবস্থার অবনতি মঙ্গলবার ভোরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার স্কয়্যার হাসপাতালে। সেখানে আরেকদফা তার মাথায় অস্ত্রপচার করা হয়। বর্তমানে সে হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। তার অবস্থা এখনো আশংকাজনক।
এদিকে ঘটনার সময় হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা বদরুলকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। গতকাল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকের ছাড়পত্র পায় বদরুল। পরে কড়া পুলিশী প্রহরায় প্রথমে বদরুলকে ওসমানী হাসপাতাল থেকে শাহপরান থানায় নেয়া হয়। সেখানে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়। পরে পুলিশ বদরুলকে আদালতে সোপর্দ করে জবানবন্দী গ্রহণের আবেদন জানায়।
বদরুল ছাতক উপজেলার মুনিরজ্ঞাতি গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে এবং খাদিজা সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ আউশা গ্রামের সৌদি প্রবাসী মাসুক মিয়ার মেয়ে।