• শুক্রবার , ১৫ নভেম্বর ২০২৪

কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখায় আবার’ও গোলাগুলি


প্রকাশিত: ১১:৩৯ এএম, ২ অক্টোবর ১৬ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৬ বার

দিল্লী থেকে মীরা নায়ার  :  জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় সকালে ভারত ও পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে 12গোলাগুলি হয়েছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নজরদারি করতে জম্মুর পশ্চিমে আখনুর সেক্টরের একটি গ্রামে সেনাশিবিরের বাইরে ট্যাংকবাহী গাড়ির ওপর কয়েকজন ভারতীয় সেনা টহল দিচ্ছে।
এদিকে কাশ্মীর নিয়ে পরমাণু শক্তিধর বৈরী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে এই উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন।

গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জঙ্গি আস্তানায় সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার দাবি করে ভারত। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরির সেনাছাউনিতে সন্ত্রাসী হামলায় ১৮ জন সেনা নিহত হয়। এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। তারপরই বৃহস্পতিবারের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চলে। তবে নিজেদের ভূখণ্ডে ভারতীয় হানার দাবি প্রত্যাখ্যান করলেও পাকিস্তান তাদের দুই সেনা নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর দুই দিন পর গতকাল নতুন করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটল।

দুই দেশের সেনা কর্মকর্তারা গুলিবর্ষণের শুরু নিয়ে একে অন্যের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। ভারতের সেনাবাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তানি সেনারা যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করে জম্মুর আখনুর এলাকার পাল্লানাওয়ালা এলাকায় গুলি ছোড়ে। তারা আমাদের চারটি চৌকি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আমরা এর পাল্টা জবাব দিয়েছি। তবে আমাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।অন্যদিকে পাকিস্তানের এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতীয় বাহিনীর উসকানিমূলক হামলার যথাযথ জবাব দিয়েছি আমরা।’

১৯৪৭ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে দুটিই হয়েছে কাশ্মীর নিয়ে। গতকালের সংঘর্ষে প্রাণহানির খবর না পাওয়া গেলেও দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার গ্রামগুলোতে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের গ্রামগুলো থেকে কয়েক হাজার পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে গত শুক্রবার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন বান কি মুন। জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোধি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মুনের সঙ্গে দেখা করেন। লোধি সমস্যা সমাধানে মুনকে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। এরপর মুন মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন বলে জানান জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। জাতিসংঘ মহাসচিব দুই দেশকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান। পরিস্থিতির উন্নয়নে দ্রুত ব্যবস্থা নিতেও দুই দেশকে আহ্বান জানান তিনি।

ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা কূটনীতি এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে বলে মনে করেন বান কি মুন। ডুজারিক বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব ভারত ও পাকিস্তানের চলমান পরিস্থিতির দিকে দৃষ্টি রাখছেন। এ নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। উত্তেজনা প্রশমনে দুই দেশ রাজি হলে মধ্যস্থতা করতে রাজি আছেন বান কি মুন।

মুনের সঙ্গে বৈঠকে লোধি বলেন, বর্তমান সংকট নিরসনে জাতিসংঘ মহাসচিবের সাহসী ভূমিকা দরকার। কারণ আমরা দেখছি পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে পড়ছে।বৃহস্পতিবারের অভিযানের পর জাতিসংঘে ভারতীয় মিশনের পক্ষ থেকে ওই অভিযানকে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রিত অভিযান’ বলে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর কোনো অভিপ্রায় ভারতের নেই।