কার চাপে মাশরাফি বিন মুর্তজার অবসর?
স্পোর্টস রিপোর্টার : হ্যাঁ, মাশরাফি বিন মুর্তজার অবসর নিয়ে প্রশ্ন থামছেনা গত দুই দিন পার হয়ে য়ওিয়ার পরও। এখনো চায়ের দোকান, ফেসবুক, রাস্তা কিংবা অফিসে আলোচনা চলছে মাশরাফির অবসর হঠাৎ করে কার ইঙ্গিতে এবং কেন? নিশ্চয়ই কারো চাপাচাপি আছে! তানাহলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটির টস করতে গিয়ে হঠাৎ করেই এই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন কেন মাশরাফি।
সঙ্গে সঙ্গে বহুমুখী প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেদিন ম্যাচেই বাংলাদেশ দলকে অনেক বেশি ছন্নছাড়া মনে হয়েছে। প্রশ্ন ওঠেছে, এমন করে একটা ম্যাচের ঠিক আগের মুহূর্তে মাশরাফি কেন অবসরের ঘোষণা দিলেন? এর পেছনে কোনো ‘চাপ’ বা অন্য কিছু আছে কি না।
গতকালই এই প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বললেন, মাশরাফির অবসর ঘোষণার সময় নির্বাচনটা দে খে তিনিও একটু অবাক হয়েছেন; কিন্তু এ সিরিজেই যে এমন একটা ঘোষণা মাশরাফি দেবেন, সেটা তারা জানতেন।
কার্যত লোকে যেটা বলছে যে, অবসরের সিদ্ধান্তটা মাশরাফির নয়, বোর্ডের— সেটা খুব একটা অস্বীকার করেননি বোর্ড সভাপতি। তিনি বলছেন, এটা মাশরাফি এবং কোচসহ ম্যানেজমেন্টের সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই পুরো ব্যাপারটাকে বিসিবি একটা যুগের পরিবর্তন হিসেবে দেখতে চাচ্ছে। বাংলাদেশের সিনিয়র ক্রিকেটার যারা, তারা এমনিতেই আরো লম্বা সময় খেলতে পারবেন, তা নয়। এই সময়ে সব ধরনের ক্রিকেটেই তারুণ্যের উত্থান দরকার বাংলাদেশের; কিন্তু তরুণ ক্রিকেটারদের হঠাত্ করে টেস্ট বা ওয়ানডেতে এনে শুরু করিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই বিসিবি চায়, এই টি-টোয়েন্টি দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদটা নিতে শুরু করুক তরুণরা। এখানেই পরীক্ষা দিয়ে প্রমাণ করুক নিজেদের।
আরেকটি ব্যাপার হলো- ২০১৮ সালেই আইসিসি আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চায়। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ দল কখনোই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বলার মতো ফল পায়নি। যেহেতু এই খেলাটাকে তরুণদের খেলা বলেই মনে করা হয়, তাই এখন থেকেই বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চায় বিসিবি। সে জন্য দলে জায়গা করে দিতে হবে তরুণদের।
এখন এই তরুণদের জায়গা করে দিতে গেলে কয়েক জন সিনিয়রকে সরে দাঁড়াতেই হবে। টেস্ট ও ওয়ানডেতে প্রবল ফর্ম থাকার পরও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কয়েক জন সিনিয়র ক্রিকেটার আছেন, যাদের এই ফরম্যাটে পারফরম্যান্স তেমন ভালো না। মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম পড়ছেন এই তালিকায়।
কোচ ও বোর্ড মনে করছে, এদেরকে বাইরে রেখে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে একটা তরুণ দলকে মাঠে নামালে এই ফরম্যাটে সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি। সেই চিন্তা থেকে কার্যত নিউজিল্যান্ড সফর থেকেই দলকে বদলানোর একটা আলোচনা শুরু হয়েছে। সেই আলোচনাটা চলেছে শ্রীলঙ্কাতেও। সবশেষে মাশরাফির অবসরের ঘোষণার ভেতর দিয়ে বলা চলে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা শুরু হলো।
মাশরাফির এই অবসরের ঘোষণা তাই কেবল একটা ঘোষণা নয়; এটাকে বলা চলে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নতুন রূপে হাজির হওয়ার একটা শুরু।