কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে সন্ধ্যা নদীর তীর-ঐশী রুটপারমিট ছাড়াই চলছিল
মোঃ মোসাদ্দেক বিল্লাহ ও মেহেদী হাসান : স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে সন্ধ্যা নদীর তীর। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা
পর্যন্ত ১৩ লাশ উদ্ধার হয়েছে।যাদের লাশ উদ্ধার হয়েছে তাদের কান্না থামছে না।ওদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডুবে যাওয়া লঞ্চটির কোন রুট পারমিট ছিল না।বন্দর কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বরিশালের সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের দাসেরহাট এলাকায় সন্ধ্যা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চ এমএল ঐশীর রুট পারমিট ছিল না। রুট পারমিট না থাকা লঞ্চটি অবৈধভাবে চলাচল করছিল বলে জানান তিনি।
এদিকে লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার কারণ জানতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক ড. গাজী সাইফুজ্জামান । বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বরিশালে সন্ধ্যা নদীর দাশেরহাট পয়েন্টে ৫০ থেকে ৬০ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় ১৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বানারিপাড়া থানার ওসি জিয়াউল হাসান এই তথ্য নিশ্চিত করেন। নিহতদের মধ্যে একটি শিশু, ছয় জন নারী ও ছয় জন পুরুষ। এখনও ১০ থেকে ১৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- কহিনুর বেগম (৬০), রাবেয়া খাতুন (৪০), রেহানা বেগম, হীরা বেগম(২২), ফিরোজা বেগম (৫০), সুখদেব মল্লিক (৪০), মোজাম্মেল মোল্লা (৬০), জয়নাল হাওলাদার (৬২), সাগর মীর (৪৪) এবং অজ্ঞাত পরিচয় বালক (৮)। পরে আরও এক নারী ও দুইজন পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়, তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ সুপার এসএম আক্তারুজ্জামান জানান, বানারীপাড়া লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে উজিরপুরের হাবিবপুর যাচ্ছিল এমএল ঐশী নামের লঞ্চটি। এ সময় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের দাসেরহাট এলাকায় ভাঙন কবলিত এলাকায় মসজিদ বাড়ি ঘাটে ভেড়ার আগে নদীর স্রোতের ঘুর্ণিতে পড়ে কাত হয়ে ডুবে যায় লঞ্চটি। লঞ্চে থাকা যাত্রীদের অনেকেই সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও প্রায় ২৫ জন যাত্রী নিখোঁজ হন।ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন, ডুবুরি ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ শুরু করে।
লঞ্চে থাকা যাত্রী সুফিয়া বেগম জানিয়েছেন, লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার সর্বোচ্চ প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিল। লঞ্চটি বানারীপাড়া থেকে হাবিবপুর যাচ্ছিলো। দুপুর সাড়ে ১১ টার পর দাশের হাটে যাত্রী ওঠানোর সময় নদীর পাড়ের বিশাল অংশ ভেঙে যাওয়ায় তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়। এ সময় যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে এক পাশে আসলে লঞ্চটি ডুবে যায়।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার জানান, নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় উদ্ধার কাজে বিলম্ব হচ্ছে। তবে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে। ফায়ার ব্রিগেড, জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ ও স্থানীয় জনসাধারণ উদ্ধার কাজে নিয়োজিত আছে।