• মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৪

কলংক ঘুচল দৌলতদিয়া পতিতাদের-


প্রকাশিত: ৬:৪৭ পিএম, ১৮ জুলাই ১৯ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৫৫ বার

রাজবাড়ি প্রতিনিধি : অবশেষে কলংক ঘুচল দৌলতদিয়ার পতিতাদের। দেশের বৃহৎ যৌনপল্লী রাজবাড়ির গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পতিতালয়ের বাসিন্দাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানায় গ্রামের নামের স্থানে “দৌলতদিয়া পতিতালয়” নাম আর ব্যবহার করা হবেনা। এখন থেকে দৌলতদিয়া পতিতা পল্লীর বাসিন্দারা তাদের ঠিকানা ব্যবহার করবে-দৌলতদিয়া বাজার পূর্বপাড়া হিসেবে।

জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রে ঠিকানার বিড়ম্বনা নিয়ে দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীতে বসবাসরত দেড় সহস্রাধিক যৌনকর্মী সামাজিকভাবে নানারকম বঞ্ছনার শিকার হয়ে আসছিলেন। শুধু এ কারনেই এখানকার প্রায় সাত শতাধিক শিশুর ভবিষৎ ছিল অনিশ্চিত । অবশেষে গত ১৫ জুলাই সোমবার পতিতালয় গ্রামের নাম পরিবর্তন করেছে নির্বাচন কমিশন। যা মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলে সারা ফেলেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান জাতিরকন্ঠকে বলেন, গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডেও ০০৭২ কোডের ভোটার এলাকার নাম পরিবর্তন বিষয়ক একটি চিঠি আমাদের কাছে আসে। সেখানে দৌলতদিয়া ইউনিনের ভোটার কোড ০০৭২ অপরিবর্তিত রেখে “পতিতালয় (উত্তর দৌলতদিয়া) এর স্থলে “দৌলতদিয়া বাজার পূর্বপাড়া ” নামকরণ করা হয়।

পতিতালয়ে নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে যৌনকর্মী সালমা বেগম জাতিরকন্ঠ কে জানান, আমরা কেউ পতিতা হয়ে জন্মাইনি। ভাগ্যবিড়ম্বনার শিকার হয়ে এখানে এসেছি। গ্রামের নাম হয়েছে পতিতালয়। আমরা সন্তানদের যখন বাইরের কোন স্কুলে ভর্তি করতে যাই তখন গ্রামের নাম শুনে ভর্তি নেয় না। তাছাড়া আরো বিভিন্ন নাগরিক সুবিধার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়।

দৌলতদিয়া কেকেএস সরকারী শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বিলকিস বেগম জাতিরকন্ঠ কে জানান, এক সময় এই পতিতালয়ের কোন শিশুকেই কোন বিদ্যালয় ভর্তি নিত না। তখন সমাজসেবক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল জব্বার এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দৌলতদিয়ার পতিতাপল্লীর শিশুদের পড়ালেখার সুযোগ করে দেন। এই বিদ্যালয়ে যৌনপল্লীর দেড় শতাধিক ছেলে মেয়ে পড়ালেখা করে।

তিনি আরো বলেন নাম পরিবর্তনের ফলে এখানকার শিশুরা এখন থেকে দেশের যেকোন প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার সুযোগ পাবে। আর কোন বিড়ম্বনা থাকবে না।দৌলতদিয়া পতিতালয়ের যৌনজীবি ও তাদের শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা মুক্তি মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক মর্জিনা বেগম জানান, লজ্জাজনক ঠিকানার কারণে এতদিন এখানকার নারী ও শিশুরা নানাভাবে লাঞ্ছিত হয়ে আসছিল।

দীর্ঘদিন পরে হলেও নামটি পরিবর্তন হয়ে দৌলতদিয়া বাজার পূর্বপাড়া হয়েছে। এতে পল্লীর সবাই খুব খুশি। আমি এ জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুবায়েত হাসান শিপলু বলেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বিষয়টি আমাদেরকে জানালে আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে নাম পরিবর্তনের জন্য নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করি।