করোনাক্রান্ত মাকে বাঁচাতে –
বরিশাল প্রতিনিধি : মাকে বাঁচাতে এবার ছেলে শরীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে মোটরসাইকেলে করে নিলেন হাসপাতালে। মা রেহানা পারভীনের শরীরে গত বুধবার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শনিবার সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট বেড়ে চলছিল।
কোনো উপায় না পেয়ে ছেলে নিজেই বেরিয়ে পড়েন মাকে বাঁচাতে। অক্সিজেন সিলিন্ডার বাঁধলেন মোটরসাইকেল ও নিজের শরীরে। ইতিমধ্যে সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
বিকেল ৩টার দিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া হিরন পয়েন্ট নামক স্থানে এই দৃশ্য ধরা পড়ে। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য সার্জেন্ট তৌহিদ টুটুল জাতিরকন্ঠ কে জানান, রোগী নিজেই বসে ছিলেন অক্সিজেন সিলিন্ডার বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীকে ধরে। যিনি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন তিনি হেলমেট পরা ছিলেন। তাঁর চেহারা আমরা দেখতে পারিনি বা দেখার চেষ্টাও করিনি। তাদের থামিয়ে হয়তো পরিচয় শনাক্ত করতে পারতাম, কিন্তু সেটি হতো অমানবিকতা।
তিনি বলেন, অক্সিজেন মাস্ক পরা যে নারী ছিলেন তাঁর বয়স দেখে মনে হয়েছে মোটরসাইকেল আরোহীর মা হতে পারেন। আমরা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দিক থেকে মোটরসাইকেলটি আসছিল। প্রথমে মোটরসাইকেলটিকে থামানোর সিগন্যাল দেই, কিন্তু যখনই দেখি মোটরসাইকেলে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অক্সিজেন মাস্ক পরে রোগী যাচ্ছেন তখন এক সেকেন্ডের জন্যও মোটরসাইকেলটি থামাইনি। বরং দ্রুত যেন চলে যায় সে ব্যবস্থা করে দেই।
তৌহিদ বলেন, রোগীবাহী মোটরসাইকেলটির পাশে আরেকটি মোটরসাইকেল ছিল, সেটিও তাদের স্বজনদের। মূলত রোগী যেন পড়ে না যান সেজন্য তারা পাশাপাশি চালিয়ে আসছিলেন। আমরা চেকপোস্ট অতিক্রম করিয়ে দিলে মোটরসাইকেল দুটো দ্রুত বরিশাল শহরের দিকে চলে যায়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেহানা পারভীন (৫০), তিনি ঝালকাঠির নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁর স্বামীর নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবদুল হাকিম মোল্লা। গ্রামের বাড়ি নলছিঠির সূর্যপাশা গ্রামে। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন তাঁর ছেলে জিয়াউল হাসান টিটু। পরে টিটু মাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।