‘কবে হয়তো দেখবো আমার ঘাড়ে মাথা নেই’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে এসে সাইফুল বারী মাসুম : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শোক-মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট ও সমাবেশ করেছে ইংরেজি বিভাগ এবং রাবি শিক্ষক সমিতি। রোববার বেলা ১০ টা থেকে এসব কর্মসূচি পালিত হয়। এমনই এক কর্মসূচিতে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন মন্তব্য করেন, ‘কবে হয়তো দেখবো আমার ঘাড়ে মাথা নেই।’
আজ সকাল ১০টার দিকে রাবি প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষক হত্যাকাণ্ড এবং সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে পুলিশের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠক শেষে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, এ হত্যাকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা তবে তদন্তের স্বার্থে আটককৃত ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে থেকে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শোক র্যালি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে গিয়ে ১০ মিনিটি অবস্থান ধর্মঘট পালন করে। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে সিনেট ভবনের সামনে থেকে মৌন মিছিল করে রাবি শিক্ষক সমিতি।
মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য দেন ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এ.এফ.এম মাসউদ আখতার, অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ, অধ্যাপক মো. জহুরুল ইসলাম।
সমাবেশে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এ.এফ.এম মাসউদ আখতার বলেন, ‘আমাদের দাবি খুব সংক্ষিপ্ত। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার চাই, দোষীদের শাস্তি চাই। তাই আমরা এ আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আমাদের চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে আজ থেকে তিনদিন বিভাগের সকল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন সিনেট ভবনের সামনে সকাল ১০টা থেকে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়া আগামীকাল বিভাগে শোকসভার আয়োজন করা হয়েছে।’
সমাবেশে রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনু বলেন, ‘আমরা আমাদের সহকর্মী রেজাউল সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের শোকের ছায়া হিসেবে সোমবার পর্যন্ত সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে রাবি শিক্ষক সমিতি।
এসময় শিক্ষক সমিতির এ কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন।তিনি বলেন, ‘একের পর এক হত্যাকাণ্ডে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।
আর দুর্বৃত্তরা এই ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করতে চায় আমাদের এ সমাজে। যে কোনো মুহূর্তে আমার মাথা কেটে নামিয়ে আনতে পারে সন্ত্রাসীরা। তাই বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।