কপাল খুলছে-নোবেল কমিটির ফোন হাসিনাকে
শফিক রহমান: অধ্যাপক ওলাভ নিজোলস্টেট নোবেল কমিটির সচিব। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। প্রধানমন্ত্রী ঘনিষ্ট একজনকে নিজের পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলেন, ‘শুক্রবার নরওয়ের সময় সকাল ১১টায় (লন্ডন সময় সকাল ১০টা) শেখ হাসিনা কোথায় থাকবেন। কোন টেলিফোন নাম্বারে তাঁকে পাওয়া যাবে।’ সব তথ্য নিয়ে অধ্যাপক ওলাভ বিনীতভাবে জানালেন ‘উনি যেন ওই সময়ে ফোনের কাছেই থাকেন।’
নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে এর সচিব প্রতিবছরেই পুরস্কার ঘোষণায় আগে ৫/৭ জন সম্ভাব্য বিজয়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদের টেলিফোন নাম্বার এবং ঠিকানা রাখেন। এদের মধ্যে থেকে একজনকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীর সঙ্গে প্রথম কথা বলবেন নোবেল কমিটির চেয়ার বেরিট রেসিস অ্যান্ডারসন। তিনি বিজয়ীকে নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক অভিনন্দন জানাবেন।
এর আগে নরওয়ের সময় ঠিক সকাল ১১টায় নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষিত হবে। ওই সংবাদ সম্মেলনে ১২৩ জন দেশি-বিদেশি সংবাদকর্মী থাকবেন। যাঁরা দুই অক্টোবরের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন- কেবল তারাই থাকতে পারবেন। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরপরই চেয়ার সংবাদকর্মীদের প্রশ্ন নেবেন। বিবিসি, সিএনএনসহ সারা বিশ্বের গণমাধ্যম অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।
শুধু শান্তি পুরস্কার নয়, সব ক্যাটাগরির নোবেল পুরস্কার ঘোষণার আগে সম্ভাব্য বিজয়ীদের সঙ্গে যোগাযোগের রীতি দীর্ঘ পুরনো। এ নিয়ে অনেক মজার গল্পও আছে। নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, নোবেল বক্তৃতার শুরুতেই রসিকতা করে বলেছিলেন, গত ৭টা বছর প্রত্যেকবারই আমি শুনেছিলাম, আমাকে নোবেল দেওয়া হবে। কিন্তু কোনো বারই হয়নি। শেষতক এবার ঘুমিয়ে ছিলাম। আমাকে ঘুম ভাঙ্গিয়ে খবরটা দেওয়ার পর আমি ভেবেছি এটা রসিকতা।’
একই রকম প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন শন্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসও। প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক বারই শুনি, পাচ্ছি। তাই এবারও ভেবেছিলাম হবে না।‘৫ জনের ঠিকানা এবং টেলিফোন নাম্বার কমিটি সংগ্রহ করেছে, তাদের মধ্যে বিজয়ীর ঠিকানা ও টেলিফোন নাম্বার উপস্থিত সাংবাদিকদের বিতরণ করা হবে। তবে, নোবেল কমিটির দেওয়া ঠিকানার আশায় সাংবাদিকরা বসে থাকে না।
বিশ্বের বড় বড় সব গণমাধ্যাম ইতিমধ্যেই সাম্ভব্য বিজয়ীদের প্রথম সাক্ষাৎকারের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তাই যিনি নোবেল পুরস্কার পাবেন, তার কাছে পৌঁছুতে গণমাধ্যম খুব বেশি সময় নেবে না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যদি শান্তিতে নোবেল পান, তাহলে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য খুব বেশি সময় পাবেন না। কারণ সন্ধ্যাতেই তাঁকে উড়াল দিতে হবে প্রিয় মাতৃভূমির উদ্দেশ্যে।