কথিত বনবন্ধু জাহিদের ধান্ধা-ফাঁস
স্টাফ রিপোর্টার : কথিত বনবন্ধুর ধান্ধাবাজি ফাঁস করল পুলিশ। এই ধুরন্ধর ধান্ধাবাজ মুজিববর্ষের লোগো লাগিয়ে এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এ অভিযোগে রাজধানী থেকে জাহিদুর রহমান ইকবাল ওরফে বনবন্ধু নামে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের শাহ আলী ভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশীদ তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার জাহিদুর রহমান ইকবাল ওরফে বনবন্ধু গত ৩০ বছর ধরে কারওয়ান বাজার এলাকায় প্রতারণা করে আসছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুজিববর্ষের লোগো ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী ব্যবহার করে তিনি প্রতারণার আশ্রয় নেন। এগুলো ব্যবহার করে তিনি প্রায় ৪০ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি দিয়েছেন। এর মাধমে তিনি তাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ওই ব্যক্তি ‘বনবন্ধু জাহিদুর ট্রি প্লান্টেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের পরিচয় দিতেন। মুজিববর্ষে তিনি বিভিন্ন জায়গা গাছ লাগাবেন বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিতেন।
জাহিদুর রহমানের অপরাধের ব্যাখা দিয়ে ডিসি বলেন, ‘জাহিদুর রহমান প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করতেন। অবৈধভাবে সিল তৈরি ও সংরক্ষণ করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে মুজিববর্ষের লোগো ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির কাছে প্রায় ৪০ হাজার চিঠি পাঠিয়েছেন। কনসালটেন্ট গ্রুপ লি., এসএম ই কনসালটেন্ট লি., ইইএফ কনসালটেন্ট লি.-এর নামে তিনটি অবৈধ কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং সিইও হিসেবে নিজেকে দাবি করেন। তিনি কোম্পানিগুলোর কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন লোন পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করতেন এই প্রতারক।
ডিসি আরো বলেন, জাহিদুর রহমান ব্যক্তিগত গাড়িতে জাতির পিতার ছবি ব্যবহার করে প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড করতেন, যা জাতির পিতার ছবির অবমাননার সামিল। এছাড়াও এনবিআর, আয়করের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ব্যাংক থেকে লোন প্রসেসিং, বাংলাদেশ ট্রি প্লান্টেশন ফাউন্ডেশন নামে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে বৃক্ষরোপণের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিপর্যায় থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিলেন।
পুলিশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদ বলেন, তার বিরুদ্ধে আমরা হাজার হাজার অভিযোগ পেয়েছি। আমরা যখন তার কাছে গেলাম তিনি তখন বলেন, আপনাদের যে পুলিশ ব্যাংক সেটা তো আমি কন্সালটেন্সি ফার্ম করে দিয়েছি। সেটাও নাকি বিনা পয়সায় করে দিয়েছেন। তিনি অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের সিইও ও চেয়ারম্যান। তার পড়াশোনার কোনো সার্টিফিকেট নেই। আমরা তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করবো। রিমান্ডে নিলে বোঝা যাবে তিনি কত লোকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।কী পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘পাঁচশ লোকের মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে ধারণা করছি। তবে রিমান্ডে না নেয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না তিনি কত টাকা হাতিয়েছেন।