কথার জাদু’র স্থপতি কাজী আরিফ নাবলে’ই চলে গেলেন
নিউইয়র্ক থেকে বাবর আলী : কথার জাদু’র স্থপতি কাজী আরিফ নাবলে’ই চলে গেলেন না ফেরার দেশে। প্রখ্যাত আবৃত্তিশিল্পী, মুক্তিযোদ্ধা ও স্থপতি কাজী আরিফকে (৬৫) ক্লিনিক্যালি ডেড ঘোষণা করে পরে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ২৫ এপ্রিল মাউন্ট সিনাই সেন্ট লিওক্স নামের ওই হাসপাতালে কাজী আরিফের হৃদ্যন্ত্রে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর তাঁর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহ্কাম উল্লাহ্ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টায় চিকিৎসকেরা শিল্পীকে ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ ঘোষণা করেন। কাল রোববার নিউইয়র্ক সময় সকাল সাড়ে আটটায় লাইফ সাপোর্ট খুলে চিকিৎসকেরা আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে মৃত ঘোষণা করবেন।
বাবার অবস্থার কথা জানিয়ে সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিকার হাসান আরিফকে খুদেবার্তা পাঠিয়েছেন মেয়ে অনুসূয়া। এক অনুষ্ঠানে আবৃত্তিশিল্পী কাজী আরিফ। কাজী আরিফ ১৯৫২ সালের ৩১ অক্টোবর তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুরের রাজবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষা ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে।
উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে। পেশায় স্থপতি এই বাচিকশিল্পী লেখকও। ১৯৭১ সালে ‘১ নম্বর সেক্টর’-এর মেজর রফিকের নেতৃত্বে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্যোক্তাদের একজন তিনি। সারা দেশ ঘুরে আবৃত্তির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশে আবৃত্তিচর্চা এবং আবৃত্তিশিল্পকে আধুনিক সংগঠিত রূপ দিতে কাজী আরিফ আশির দশকে অন্যতম ভূমিকা রেখেছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য আবৃত্তির অ্যালবাম ‘পত্রপুট’। কাজী আরিফ জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। প্রতিবছর চৈত্রসংক্রান্তির উৎসব হতো তাঁর ইন্দিরা রোডের বাসায়। সেখানে শিল্পী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের লোকজন সমবেত হতেন।