• বৃহস্পতিবার , ২ মে ২০২৪

এয়ারলাইন্স সেবায় ভ্যাট: হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ


প্রকাশিত: ৯:৩২ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ১৫ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৪৮ বার

airlineবিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা:  বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে এয়ারলাইন্সগুলো যে সেবা নিয়ে থাকে তার উপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আরোপের সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাই কোর্ট।বিচারপতি শামীম হাসনাইন ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সম্প্রতি রুলসহ এ আদেশ দেয়।১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের ওই সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তা কেন ভ্যাট আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না- রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক জানিয়েছেন।

তিনি শনিবার বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বেবিচকসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।গত ২৮ জুলাই বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এয়ারলাইন্সগুলোকে ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জের উপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে।এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিমান পরিবহন সংস্থা অ্যামিরেটসসহ নয়টি সংস্থা এবং দুইজন যাত্রী পৃথক দুটি রিট আবেদন করেন, যেগুলোর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই রুলসহ আদেশ দেয় আদালত।

আদালতে সংস্থাগুলোর রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। দুই যাত্রীর পক্ষে রিটে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ চৌধুরী।মঞ্জুরুল হক বলেন, ২০১০ সালে এনবিআর এয়ারলাইন্স সেবার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করে। অথচ ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইনের তফসিল-২ অনুসারে বিমান সেবার জন্য ভ্যাট রেয়াত দেওয়া হয়েছে।

১৫ সেপ্টেম্বর হাই কোর্ট দেশি-বিদেশি বিমান পরিবহন সংস্থাগুলো থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন।অপর রিটের আইনজীবী জুনায়েদ চৌধুরী বলেন, বেবিচকের ওই সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাই কোর্ট। ওই সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- রুলে তা জানতে হওয়া হয়েছে।১০ ও ১৪ সেপ্টেম্বর রিট দুটি করা হলে পরদিন শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেয়।

বেবিচকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে অ্যারোনটিক্যাল চার্জের উপর কোনো ভ্যাট নেওয়া হচ্ছে না। এনবিআরকেও নতুন নিয়মে অ্যারোটিক্যাল চার্জের উপর ভ্যাট আরোপ না করতে অনুরোধ জানানো হলে তারা অপারগতা প্রকাশ করে। নতুন এ নিয়ম ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন হবে জানিয়ে ২০০৯-১০ সাল থেকে মোট ভ্যাট সরকারকে দিতে অনুরোধ জানানো হয় এতে।

ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনাকারী বিমান সংস্থাগুলো এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তা থেকে সরে আসতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে আসছে। তারা বলছে, এই নিয়ম কার্যকর হলে বিমান সংস্থাগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।ভ্যাট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে বেবিচককে দুই দফা চিঠিও দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশন (আইএটিএ)।

আইএটিএ-এর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট কনরাড ক্লিফোর্ড বেবিচকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে লিখেছেন, যে কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে ভাড়া পরিবর্তনের বিষয়টি যাত্রীদের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে। নতুন করে এই ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্তে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে যে বিনিয়োগ তার উপর এবং দেশটির অর্থনীতিতে এভিয়েশন খাতের যে অবদান রয়েছে তা বাধাগ্রস্ত হবে বলেও মন্তব্য করেন কনরাড ক্লিফোর্ড।অন্যতম রিট আবেদনকারী রিজেন্ট এয়ারওয়েজের প্রধান অপারেটিং কর্মকর্তা আশীষ রায় চৌধুরীর বলেন, এমনিতেই দেশের এয়ারলাইন্সগুলো ধুঁকছে। সেখানে এই ভ্যাট তাদের উপর মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দেবে।