এস কে সুরের তেলেসমাতি দুদক পরিচালক সাইজ
বাংলাদেশ ব্যাংকের রাঘববোয়াল দুর্নীতিবাজ এস কে সুরের লকারে হানা দিয়ে কোটি কোটি স্বর্ণ ডলার এফডিআর পাওয়ার পর ঘুম হারাম হয়ে ওই বাংলাদেশ ব্যাংকের মহা-দুর্নীতিবাজদের। অথচ মাত্র একটি লকারের ভিতরেই এই অবস্থা!
তাহলে বাকি লকারগুলিতে যে শত শত কোটি টাকার এমন ডলার-স্বর্ণ-এফডিআর থাকতে পারে সেটা জেনেই বি-বি’র (বাংলাদেশ ব্যাংক) মহা দুর্নীতিবাজদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
জানা গেছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের অনেকে এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত, অনেকে এখন চাকরিতে নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকে এখন পর্যন্ত মোট ২৭২টি সেফ ডিপোজিট লকারের সন্ধান পাওয়া গেছে।
শফিক রহমান : মহা-দুর্নীতিবাজ এস কে সুরের এক লকারে অভিযান চালাতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের মাথাব্যথা-মাতা গরম শুরু হয়েছে। বাকি ২৭১ জনের লকারে তল্লাশি করলে যে সব রাঘবোয়ালদের সমুদ্র চুরি ফাঁস হয়ে পড়তে পারে সেখানেই টনক নড়েছে এস কে সুরের সর্দারদের। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ফেসবুকে তাদের দুর্নীতি কেন তুলে ধরল এজন্য নাখোশ হয়ে সোজা তাকে সাইজ করতে চিঠি লিখল দুদকের বড় কর্তার কাছে। দুদকে চিঠি লেখার পর্যায়েই এস কে সুরের সহযোগী দুর্নীতিবাজদের জামিন হয়ে গেছে হাইকোর্টে। এ অবস্থায় নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে! দুর্নীতিবাজ ফেসিস্টদের হাত আর কত লম্বা হতে পারে?
তা না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক মহা দুর্নীতিবাজদের লকার তল্লাশিতে ‘সাইজ’ হতে হবে কেন দুদক পরিচালক সায়েমুজ্জামানকে। দুদক যে এখনও বদলায়নি এবং দুদক যে নিজের পায়ের এখনও দাড়াচ্ছে না বা দাড়ানোরও চেষ্টা করছে না তার প্রমাণ দিলেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। অভিযোগ উঠলেই যে কাউকে ছেটে ফেলতে হবে নতুবা বদলী করে দিতে হবে কেন?
এটাতে ফেসিস্টদের প্রক্রিয়া! সেই প্রক্রিয়ায় নতুন গঠিত দুদক যাবে কেন? তাহলে তো এই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কোনো প্রয়োজন ছিল না! রাজনৈতিক অঙ্গণে এজন্যই কথা উঠেছে ফেসিস্টদের সুবিধাভোগীরা এখনও বহাল তবিয়তে প্রশাসনে ছড়ি ঘোরাচ্ছে ‘আবদুল’দের মতো। সেই আবদুল’রা সায়েমদের সরিয়ে দিয়ে হালুয়া রুটির ভাগ-বাটোয়ারা নিজেদের কাছেই রাখতে তদন্ত তদন্ত খেলতে চায়? আর বাঁচিয়ে রাখতে চায় এস কে সুরদের।
দুদকের বোঝার বাকি থাকবে কেন যে-মহা-দুর্নীতিবাজ এস কে সুর একজন স্বীকৃত দুর্নীতিবাজ। এটা প্রমাণ করতে আদালত বিচারের অপেক্ষায় থাকতে হবে কেন? এস কে সুর তার আয়কর রির্টাণে এসব কোটি কোটি টাকার ডলার, স্বর্ণ,এফডিআর দেখাননি। কাজেই এস কে সুরের এসব সম্পদ লুটের মাল! সুর কার কার কাছ থেকে এসব সম্পদ লুট করে তার লকারে সিলগালা করে রেখেছিল সেটা সুর কে বলতে হবে। সুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এসব ব্যাংক লুটেরা এবং তাদের সুবিধাভোগী ব্যাংকারদের
মুখোশ খুলে যেতে পারে এমন আশংকায় মাথা নষ্ট সুরের গডফাদারদের।ফলে আরো ২৭১ জন রাঘববোয়ালের লকারে লুক্কায়িত কোটি কোটি টাকা ডলার স্বর্ণ এফডিআরের তথ্য যাতে না ফাঁস হয় সেটা টার্গেট করেই সায়েমকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রাঘববোয়াল দুর্নীতিবাজ এস কে সুরের লকারে হানা দিয়ে কোটি কোটি স্বর্ণ ডলার এফডিআর পাওয়ার পর ঘুম হারাম হয়ে ওই বাংলাদেশ ব্যাংকের মহা-দুর্নীতিবাজদের। অথচ মাত্র একটি লকারের ভিতরেই এই অবস্থা! তাহলে বাকি লকারগুলিতে যে শত শত কোটি টাকার এমন ডলার-স্বর্ণ-এফডিআর থাকতে পারে সেটা জেনেই বি-বি’র (বাংলাদেশ ব্যাংক) মহা দুর্নীতিবাজদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
জানা গেছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের অনেকে এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত, অনেকে এখন চাকরিতে নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকে এখন পর্যন্ত মোট ২৭২টি সেফ ডিপোজিট লকারের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে কর্মকর্তাদের অর্থ-সম্পদ জমা রাখার ব্যক্তিগত সব লকার সাময়িকভাবে ফ্রিজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে চিঠি দেয় দুদক। গত ২৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতি নিয়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অনুসন্ধানের উদ্দেশে গঠিত দুদক টিম বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে রক্ষিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর বা এস কে সুর চৌধুরীর সেফ ডিপোজিট তল্লাশি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে তার জমা করা তিনটি সিলগালা কৌটা খুলে ৫৫ হাজার ইউরো, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, ১০০৫.৪ গ্রাম স্বর্ণ ও ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। যা তার নিয়মিত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা হয়নি।
দপ্তর থেকে বদলি সায়েম
সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীসহ বাংলাদেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির তদন্তকাজ থেকে দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানকে প্রত্যাহার করার পর দপ্তর থেকেই বদলি করা হয়েছে। বীমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সরিয়ে তাকে NIS এবং UNCAC Focal Point বিভাগের পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। তার স্থলে পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদ আলমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রশাসন বিভাগের উপপরিচালক আজিজুল হক সই করা আদেশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের লকার সংশ্লিষ্ট তদন্ত কাজের তদারককারীর কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ডেপুটেশনে আসা ওই কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও লকার নিয়ে নিয়মিত লেখার কারণে কমিশন থেকে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, তদারককারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির কারণে তাকে কারণ দর্শানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এই পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি অনুসন্ধানের দায়িত্বে ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুসন্ধান সম্পর্কিত তথ্যাদি প্রকাশ করার কারণে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই কারণে তাকে কারণ দর্শানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের লকারে অভিযান চালানো দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া তার বিভিন্ন মন্তব্যের বিষয়ে আপত্তি জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায় এ ধরনের মন্তব্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারসংক্রান্ত নীতিমালার পরিপন্থি। গত সপ্তাহে দুদক চেয়ারম্যানের কাছে এই চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ের পরিচালক।
চিঠিতে বলা হয়েছে, কাজী সায়েমুজ্জামান বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধারণাপ্রসূত বিভিন্ন মন্তব্য করে যাচ্ছেন। এ ধরনের মন্তব্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জারি করা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারসংক্রান্ত নীতিমালার পরিপন্থি। চিঠির সঙ্গে কাজী সায়েমুজ্জামানের দেওয়া বিভিন্ন মন্তব্যও যুক্ত করে দেওয়া হয়।৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযান চালায় দুদক। যদিও সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ২৫ কর্মকর্তার নামে কোনো লকার খুঁজে পায়নি দুদক।
অভিযান শেষে কাজী সায়েমুজ্জামান জানান, ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান যে ২৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের জন্য এসেছিলাম, তাদের নামে কোনো লকার পাওয়া যায়নি। তবে আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। আদালতের অনুমোদনের ভিত্তিতে পরবর্তী অভিযান চালাবে দুদক।
বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জন, শেয়ারবাজার থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, রিজার্ভের অর্থ তছরুপ ও সঞ্চয়পত্র জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক-বর্তমান ২৫ কর্মকর্তাকে নজরদারিতে রেখেছে দুদক।
এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে কর্মকর্তাদের অর্থ-সম্পদ জমা রাখার ব্যক্তিগত সব লকার সাময়িকভাবে ফ্রিজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে চিঠি দেয় দুদক। গত ২৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতি নিয়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অনুসন্ধানের উদ্দেশে গঠিত দুদক টিম বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে রক্ষিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর সেফ ডিপোজিট তল্লাশি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে তার জমা করা তিনটি সিলগালা কৌটা খুলে ৫৫ হাজার ইউরো, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, ১০০৫.৪ গ্রাম স্বর্ণ ও ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। যা তার নিয়মিত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা হয়নি।