এশিয়া কাপের টর্নেডো মুস্তাফিজ-কোহলীদের আতংক এবং সমীহ
বিশেষ প্রতিবেদক : সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় দলের প্রতিনিধি হিসেবে কথা বললেন বিরাট কোহলি। কাল এশিয়া কাপের মূল পর্বের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষেও কি ভারতের নেতৃত্ব থাকবে কোহলির কাঁধে? এ কথা, ও কথা শেষে ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের সংবাদ সম্মেলন শেষ হলো মুস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে।
‘মুস্তাফিজ’ নামটা বোধ হয় ভারতীয় দলের তাড়া করে ফিরবে বহু দিন! গত জুনে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে খেলতে নেমেই যে ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন! সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৫ উইকেট, দ্বিতীয়টিতে ৬—মুস্তাফিজের ক্যারিশমায় এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ।
ওই সিরিজের পরই এই প্রথম মুখোমুখি ভারত-বাংলাদেশ। অবধারিতভাবে এল মুস্তাফিজ-প্রসঙ্গ। আর তাতে কোহলির কণ্ঠে ঝরল একরাশ প্রশংসা। যদিও জুনের ওই সিরিজে কোহলিকে একবারও আউট করতে পারেননি মুস্তাফিজ। তাতে কী, নিজে শিকার না হলেও চোখের সামনেই তো দেখেছিলেন, আদপে সারল্যমাখা এক তরুণ পেসার কীভাবে তাঁর দলকে নিয়ে খেলছেন!
তাই মুস্তাফিজকে প্রাপ্য প্রশংসা দিতে এতটুকু কার্পণ্য নেই কোহলির, ‘গত একটা বছর মুস্তাফিজ সত্যি দুর্দান্ত বোলিং করেছে, বিশেষ করে আমাদের বিপক্ষে খেলার সময় থেকে। বাংলাদেশের হয়ে সে অসাধারণ খেলছে। ১৯ বছরের তরুণের এভাবে বোলিং করতে দেখা ছিল রোমাঞ্চকর।’
মুস্তাফিজের বোলিং বৈচিত্র্যে কতটা মুগ্ধ কোহলি, বোঝা গেল এই কথায়, ‘স্লোয়ার বল তো ছিলই, আবার ১৪০ কিলোমিটার গতির আশেপাশেও বল করছিল, আমাদের জন্য সেটি ছিল ব্যতিক্রমী এক অভিজ্ঞতা। নতুন বলেও খুব ভালো স্লোয়ার ও কাটার করছিল।’
এমনিতে ক্রিকেটে এখন ব্যাটসম্যানদের আধিপত্য। সেখানে মুস্তাফিজের মতো বোলারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসায় খেলাটায় যেন ভিন্ন রং পেয়েছে, সেটিও স্বীকার করে নিলেন কোহলি, ‘ক্রিকেটে সে ভিন্ন কিছু এনেছে।
খেলাটায় আরও মসলা যোগ করেছে। সব সময় এই ধরনের বোলারদের আসাটা রোমাঞ্চকর। যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসো রাবাদ, দারুণ এক বোলার। তারা ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলছে, এটা খেলাটার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
কোহলি মনে করেন, এবার এশিয়া কাপে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করবেন মুস্তাফিজ, ‘বাংলাদেশের মতো কন্ডিশনে একটা বোলার এসেই ৪-৫ উইকেট পাচ্ছে, পুরোটা সময়জুড়ে ব্যাটসম্যানদের বিপাকে ফেলছে, এতে খেলাটা আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠছে। তার স্কিল ভিন্ন ধরনের।
এখন ব্যাটসম্যানদের ভিন্নভাবে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে, তাকে সামলানোর ভিন্ন কৌশল রপ্ত করতে হচ্ছে। ফলে ওকে বিরাট কৃতিত্ব দেব। সত্যি অসাধারণ করছে। এই টুর্নামেন্টে ও বিরাট নিয়ামক হয়ে দাঁড়াবে।’
বোঝাই যাচ্ছে, মুস্তাফিজকে নিয়ে ভালোই ‘হোমওয়ার্ক’ করে এসেছে ভারতীয় দল। ফলে মুস্তাফিজের চ্যালেঞ্জটা এবার বড়ই হয়ে যাচ্ছে। আর এই চ্যালেঞ্জে উতরে তাঁকে প্রমাণ করতে হবে, দীর্ঘ রেসে দৌড়াতেই তিনি এসেছেন।