এবার মুক্তিপণ বানিজ্যে ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাসহ ৭ জন আটক
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-ক্রীড়া সম্পাদক সৃজন ঘোষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সহসভাপতি তানভীরুল ইসলাম, জগন্নাথ হল কমিটির সহসভাপতি অনুপম চন্দ্র, মুহসীন হল কমিটির ছাত্রবৃত্তিবিষয়ক সম্পাদক মামুন, জসীমউদ্দীন হল কমিটির সাবেক সহসম্পাদক বাপ্পী ও ছাত্রলীগের কর্মী হিমেল। এঁদের সঙ্গে আরফান পাটোয়ারি নামে আরেক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করে ।একই সঙ্গে অপহূত মুঠোফোনে টাকা ভরার (রিচার্জ) ব্যবসায়ী ফরহাদ ইসলামকেও উদ্ধার করা হয়।
এদিকে আটক হওয়া নেতাদের ছাড়িয়ে নিতে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পুলিশের ওপর ব্যাপক চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান। আটক হওয়া ছাত্রলীগের নেতাদের শাহবাগ থানায় না রেখে রমনা থানার হাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কারণ জানতে চাইলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিল হোসেন বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে ছাত্রলীগের ওই নেতাদের রমনা থানার পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের সামনে থেকে ফরহাদকে অপহরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁর পরিবারের কাছে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরে মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার নামে ফাঁদ পেতে আজ বেলা আড়াইটার দিকে সাতজনকে আটক ও অপহূতকে উদ্ধার করে পুলিশ।
রাতে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম মুঠোফোনে বলেন, এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে হাতেনাতে ধরা পড়া সংগঠনের নেতাদের ছেড়ে দিতে পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টির বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তার আগেই তিনি ‘প্রোগ্রামে আছি’ বলে ফোনের লাইন কেটে দেন। এরপর এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
আজ সন্ধ্যায় শাহবাগ থানায় এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় ব্যবসায়ী ফরহাদের। তিনি জানান, তাঁর বাড়ি চাঁদপুরে। ঢাকায় মুঠোফোন রিচার্জের ব্যবসা করেন। অপহরণকারী দলের নেতৃত্বে থাকা আরফান তাঁর ছোটবেলার বন্ধু।
ফরহাদ বলেন, তাঁর এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে দেখা করতে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চ এলাকায় যান। তখন আরফান ১৫-১৬ জনকে সঙ্গে নিয়ে তাঁকে অপহরণ করেন। এরপর তাঁকে একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়। সেখানে রাতভর নির্যাতন করা হয়। এ সময় তিনি নির্যাতনের চিহ্ন হিসেবে শরীরে সিগারেটের পোড়া দাগ দেখান। ফরহাদকে অপহরণের এ ঘটনায় তাঁর বাবা তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে সন্ধ্যায় শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন।