এবার ধরা খেতে পারে বাচ্চু?
বিশেষ প্রতিনিধি : এবার ধরা খেতে পারে বাচ্চু? ক্ষুদ্ধ আদালত। বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু ও পরিচালনা পর্ষদকে আসামি না করায় উষ্মা প্রকাশ করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
ব্যক্তি যেই হোক না কেন এ ধরনের মামলায় আসামি করার ক্ষেত্রে ‘পিক অ্যান্ড চুজ’ যেন না হয় সে বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সতর্কও করা হয়েছে।এক আসামির জামিন বাতিলের আবেদনের শুনানিকালে বৃহস্পতিবার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এসব কথা বলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
খুরশীদ আলম খান বলেন, ৭৫ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় ২০১৫ সালে নগরীর মতিঝিল থানায় দুটি মামলা করে দুদক। মামলায় ১৬ জনকে আসামি করা হয়। অসৎ উদ্দেশ্য, পরস্পরের যোগসাজশ, প্রতারণার আশ্রয় ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসামিরা অর্থ আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগে করা হয়।এই মামলার অন্যতম আসামি হলেন বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন মহা-ব্যবস্থাপক ও ব্র্যাঞ্চ ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন চৌধুরী।
দুদক আইনজীবী বলেন, গত ২৫ মে হাই কোর্ট দুটি মামলায় জয়নাল আবেদীনকে স্থায়ী জামিন দেয়। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১০ দিনের মাথায় ওই জামিন স্থগিত করে দেয় আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত। গত ১০ অগাস্ট দুদকের জামিন বাতিলের আবেদনের শুনানির এক পর্যায়ে মামলা দুটির নথি তলব করে আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার মামলা দুটির তদন্ত সংক্রান্ত নথি আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
ঋণ জালিয়াতিতে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জড়িত থাকার ‘প্রমাণ’ পাওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে ২০১৫ সালে অসন্তোষ প্রকাশের পাশপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনকে তলব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, মামলা দুটিতে কারা আসামি হিসাবে রয়েছে?খুরশীদ আলম খান তখন আসামিদের নাম পড়ে শোনান।এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, ব্যাংকের চেয়ারম্যান বা পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের কি আসামি করা হয়েছে? জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, একজন পরিচালককে আসামি করা হয়েছে।প্রধান বিচারপতি বলেন, চেয়ারম্যানসহ বাকিরা কোথায়?তদন্ত চলছে, সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে অবশ্যই নাম আসবে, বলেন দুদকের আইনজীবী।
এসময় উপস্থিত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং খুরশীদ আলম খানকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা চাই না পিক অ্যান্ড চুজের ভিত্তিতে আপনারা মামলায় আসামি করেন। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন সবার জন্য সমান। আর সুপ্রিম কোর্ট হচ্ছে জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল। এটার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে।এসময় প্রধান বিচারপতি দুদকের আইনজীবীকে জালিয়াতির টাকা আদায় করতে বলেন।তখন দুদক আইনজীবী বলেন, টাকা আদায় করা তো আমার আওতার বাইরে। আমি অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা ও তদন্ত করতে পারি শুধু।
প্রধান বিচারপতি বলেন, তদন্তে যেন কোনো গাফিলতি না হয়। মামলাগুলো আমরা পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখছি।এসময় আসামির আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আমি তো শুধু ঋণ দেওয়ার জন্য একটি সাদা কাগজে সুপারিশ করেছি। এতে আমার অপরাধ কোথায়? দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, শুধু সুপারিশ না,তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে এজাহারে।এসময় প্রধান বিচারপতিও জানতে চান, “কেন আপনি সুপারিশ করেছেন?পরে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত মামলারি শুনানি মুলতবি করে আপিল বিভাগ।