এবার তারেকের সঙ্গে ভোট বৈঠক-লন্ডনে ঈদ করে ফিরবেন খালেদা!
বিশেষ প্রতিনিধি : তারেকের সঙ্গে নির্বাচনী বৈঠক করতে লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। সেখানে তারেকের সঙ্গে ভোট বৈঠক এবং
লন্ডনে ঈদ করে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া ! শনিবার দেশ ছাড়ার আগে শুক্রবার ঐক্যবদ্ধ থেকে দলের সকল পর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এরআগে গুলশানে নিজের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় বৃহস্পতিবার রাতে ওই এক বৈঠক করেন খালেদা জিয়া । প্রায় ২ ঘণ্টার বৈঠকে খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর, দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বৈঠকে নির্বাচন ও সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে সংগঠন যাতে গতিশীল থাকে কোন দলাদলি না হয় সে নির্দেশনা দিয়েছেন খালেদা জিয়া।
জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ৫৭৮ ফ্লাইটে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি। চোখ ও পায়ের চিকিৎসার জন্য তিনি লন্ডন যাচ্ছেন। তবে কবে নাগাদ খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন এ প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, এটা নির্ভর করবে তার চিকিৎসার ওপর।
আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে। নির্বাচনের আবহ তৈরি করার চেষ্টা করছে। তাদের নেতারা বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন, ভোট চাইছেন। কিন্তু বিরোধী দলকে সে সুযোগ দিচ্ছে না, বাধা দিচ্ছে।
সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে লন্ডনে যাচ্ছেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আওয়াল, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার, গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম। পরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপনের লন্ডন যাওয়ার কথা রয়েছে।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। ওই সময় লন্ডনে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থানরত বড় ছেলে তারেক রহমানসহ তার পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে দেশে ফিরে আসেন তিনি। জানা গেছে, এবারের সফরও দীর্ঘ হতে পারে। তবে এবারও ঈদ করেই দেশে ফিরবেন তিনি-এমনটাই অভিমত সিনিয়র নেতাদের।
স্থায়ী কমিটির আরেক নেতা জানান, লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন খালেদা জিয়া। বৈঠকে সেই ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতিও নেয়ার কথা বলেছেন তিনি।
জানা গেছে, বৈঠকে দলের মহাসচিবসহ সংগঠন পুনর্গঠনের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়। খালেদা জিয়া নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে বলেন। সংগঠনের কোথাও যাতে কোনো বিভেদ তৈরি না হয়, তা সিনিয়র নেতাদের মনিটর করতে বলেন। রাজনৈতিক কথাবার্তার ক্ষেত্রেও যাতে দলের অবস্থান ঠিক থাকে সেদিকে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল জানান, উত্তরাঞ্চলসহ দেশের ৯টি জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি, রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে ‘চিকুনগুনিয়া’ জ্বর মহামারী আকার ধারণ, চালসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ অপ্রতুলতার কথা তুলে ধরে অবিলম্বে সেখানে দুর্গতদের পর্যাপ্ত ত্রাণ দেয়ার দাবি জানান তিনি।
সরকার ‘নির্বাচনের হাওয়া’ তুলে এককভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা একা হেলিকপ্টারে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর বিরোধী দলকে প্রচার-প্রচারণার কোনো সুযোগ দিচ্ছে না। আমরা এমন নীতির নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা বলতে চাই, অবশ্যই সরকারকে ডেমোক্রেটিক স্পেস তৈরি করতে হবে। সব দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।’